রাজশাহীতে রং করে ঢেকে দেওয়া হলো শেখ মুজিবুরের ‘সবচেয়ে বড়’ ম্যুরাল
Published: 9th, February 2025 GMT
রাজশাহী নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে নির্মিত শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ ম্যুরালটি সাদা রং করে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার সকাল থেকে কয়েকজন রংমিস্ত্রি এই কাজ শুরু করেন। সন্ধ্যার আগেই পুরো ম্যুরালটি ঢেকে দেওয়া হয়। তবে এই কাজের জন্য কারা ভাড়া করেছিলেন, তা ওই রংমিস্ত্রিরা বলতে পারেননি।
রাজশাহী জেলা পরিষদের জায়গায় ম্যুরালটি নির্মাণ করে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। এই ম্যুরালের উচ্চতা ৫৮ ফুট। তবে মূল অংশের উচ্চতা ৫০ ফুট। আর চওড়া ৪০ ফুট। নির্মাণের পর রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এটিই দেশে শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে বড় ম্যুরাল।
ম্যুরালটির সীমানাপ্রাচীরের দুই পাশে ৭০০ বর্গফুট টেরাকাটার কাজ করা হয়। এক পাশে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের লোকজ সংস্কৃতির নানা চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যও তুলে ধরা হয়েছিল। ল্যান্ডস্কেপিংয়ে গ্রানাইট দিয়ে সজ্জিত করা হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর এই ম্যুরাল ও টেরাকাটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা যায়নি।
রোববার সকাল থেকে সাদা রঙের প্রলেপে ম্যুরাল থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি মুছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে দেখা যায়, নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে একজন অনেক বড় মই দিয়ে ওপরে উঠে ব্রাশ দিয়ে রং করছেন। নিচ থেকে তাঁর দিকে তাকালে বোঝা যাচ্ছিল, একজন মানুষের তুলনায় ম্যুরালটি কত বড়। এ সময় নিচে আরও কয়েকজন সহযোগী তাঁকে সহযোগিতা করছেন। এ সময় রাস্তা দিয়ে যাঁরা যাচ্ছিলেন, তাঁরাই তাকিয়ে দেখছেন।
রং করে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড় এলাকায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি
শোবিজের একঝাঁক একঝাঁক অভিনয়শিল্পীকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি করা হয়েছে। প্রথমে ইরেশ যাকের, তারপর সুবর্ণা মুস্তাফা, অপু বিশ্বাস, নুসরাত ফারিয়া, নিপুণসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর নাম প্রকাশ্যে এসেছে। এরই মধ্যে গতকাল অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর ও লাঞ্ছিত করে রাজধানীর রমনা থানায় সোপর্দ করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চর্চা চলছে। এ নিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।
সিদ্দিকের ওপর হামলা ও লাঞ্ছনা ঘটনা নিয়ে আজাদ আবুল কালাম গণমাধ্যমে বলেন, “সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, এটা তো মব। এই মব ভায়োলেন্সকে তো ঠেকাচ্ছে না। কেন যেন মনে হচ্ছে, মব ভায়োলেন্সকে নীরবে বলা হচ্ছে, করে যাও। আমাদের কিছুই করার নেই। একজনের রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা থাকতে পারে। অভিনেতা হিসেবে সিদ্দিক সবার কাছে পরিচিত। কিছু লোক তাকে এভাবে রাস্তায় ধরে মেরে দেবে!”
প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে আজাদ আবুল কালাম বলেন, “দলবদ্ধভাবে সিদ্দিককে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে, আক্রমণ করেছে, গায়ে থেকে জামাকাপড় খুলে ফেলেছে, এরপর থানায় সোপর্দ করেছে। থানায় যদি সোপর্দ করতেই হয়, তাহলে প্রথমে কেন আইন হাতে তুলে নিল? তাকে হেনস্তা করে আইনের হাতে তুলে দেবে— এই মব জাস্টিস, মব ভায়োলেন্স সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। এটা তো একটা সময় নানা স্তরে হবে। এসব কর্মকাণ্ড সরকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে, যেখানে মব ভায়োলেন্স, সেখানে কঠোর হস্তে দমন করবে।”
ঢালাওভাবে অভিনয়শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়ে বিস্মিত আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, “ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হচ্ছে! দেখে মনে হচ্ছে, সবাইকে মামলার মধ্যে ফেলতে হবে। ৩০০-৪০০ জন মামলার আসামি, এটা অবাস্তব একটা অবস্থা। একজন সুবর্ণা মুস্তাফার মতো শিল্পী রাস্তায় গিয়ে মানুষকে গুলি করবে? যে মানুষটি মামলা করেছেন, তিনি আন্দোলনের সময় আহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন; তিনি মামলা করেছিলেন অনেক লোকের নামে। মামলার নথিতে শিল্পীদের অনেকের নাম দেখলাম, তারা রাস্তায় নেমে মানুষকে গুলি করবে!”
সরকারিভাবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা উচিত বলে মনে করেন আজাদ আবুল কালাম। তিনি বলেন, “সরকারিভাবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও উচিত হবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা। নিরুৎসাহিত করা। যে ব্যক্তি মামলা করছেন, যদি প্রমাণিত হয়, শিল্পীরা কেউই গুলি করেনি, তখন তো এটা মিথ্যা মামলা হবে। এ রকম মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে, যে ব্যক্তি শিল্পীদের নামে মামলা করেছেন, তার কী শাস্তি হবে, তারও বিধান থাকতে হবে।”
“কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে, তা জানানোর একটা প্রক্রিয়া আছে। শুধু শিল্পী না, একজন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে আপনি তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত তাকে অপরাধী বলতে পারেন না। তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে পারেন না। মামলা করে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা শুরু করলেন, এই প্রক্রিয়া যদি চলতে থাকে, এটাই যদি আমাদের মনস্তত্ত্ব হয়, তাহলে বিভক্তি আরো বাড়বে।” বলেন আবুল কালাম আজাদ।