খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে এক সেমিনারে ভোক্তাদের সুরক্ষায় একটি কঠোর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুপারিশ এসেছে। এতে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি পূরণে একটি একীভূত নিয়ন্ত্রক কাঠামোর প্রয়োজনীতা রয়েছে।
গত শনিবার বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিবিএমএ) ঢাকার ইস্কাটনে বিআইআইএসএস মিলনায়তনে ‘খাদ্য নিরাপত্তা: নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাপনা, সমন্বয় ও বাস্তবায়নে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের এ সেমিনার আয়োজন করে। সেমিনারে সরকারি সংস্থা, নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এবং খাদ্যশিল্পের প্রধান স্টেকহোল্ডাররা অংশগ্রহণ করেন। তারা  খাদ্য নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাপনা, সমন্বয় ও বাস্তবায়নে সংস্কারের জরুরি প্রয়োজন নিয়ে আলোচনা করেন। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর)  পরিচালক মনজুর মোর্শেদ আহমেদ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি  বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিভিন্ন ঘাটতি তুলে ধরেন। তিনি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ও বিজ্ঞানভিত্তিক প্রয়োগের জন্য একটি সুগঠিত কাঠামোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পর প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন প্যানেল আলোচনায় নেতৃত্ব দেন।   তিনি খাদ্য উৎপাদন ও বিতরণের প্রতিটি স্তরে আন্তঃসংস্থার সমন্বয় জোরদারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি একটি একীভূত নিয়ন্ত্রক কাঠামো এবং ভোক্তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে কঠোর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার আহ্বান জানান।
সেমিনারের সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব এবং আকিজ ভেঞ্চার গ্রুপের চেয়ারম্যান শেখ শামীম উদ্দিন বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা আইনকে আরও শক্তিশালী করতে এবং স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে তাদের সংগঠন প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে। সেমিনারটি বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা সংস্কারের জরুরি প্রয়োজনকে সফলভাবে তুলে ধরেছে এবং ভবিষ্যৎ নীতিগত উন্নতির জন্য একটি ভিত্তি স্থাপন করবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সেমিনারে খাদ্য ও পানীয় শিল্পের ব্যবসায়ী, কর্মকর্তা, নীতিনির্ধারক এবং বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় বর্তমান খাদ্য নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ, নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাদের আরও উন্নত প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা এবং খাদ্যশিল্পের ভূমিকা নিয়ে আলোকপাত করা হয়। উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণকারীরা তাদের মতামত প্রকাশ করেন এবং সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ জন য ত

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে এক সপ্তাহে তিন ব্যাংক এমডির পদত্যাগ

গত সপ্তাহে বেসরকারি খাতের তিন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যে সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডিকে আগে থেকেই ছুটিতে পাঠিয়েছিল ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। আর মেঘনা ও কমার্স ব্যাংকের এমডি হঠাৎ করেই পদত্যাগ করেছেন।

জানা গেছে, পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় মেঘনা ও কমার্স ব্যাংকের এমডিদের পদত্যাগ করতে হয়। হঠাৎ করে দুই এমডির পদত্যাগ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকও। গত বছরের ৫ আগস্টের পর এই তিন ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে কমার্স ব্যাংক ছিল এস আলমের নিয়ন্ত্রণে ও মেঘনা ব্যাংক ছিল সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর পরিবার ও তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর গতকাল মুদ্রানীতি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘কয়েকজন এমডি কেন পদত্যাগ করেছেন, আমরা তা খতিয়ে দেখছি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকিং নিয়মে কোনো এমডি পদত্যাগ করলে বাংলাদেশ ব্যাংককে তার কারণ জানাতে হয়। তাঁর পদত্যাগ কার্যকর হবে কি না, এরপরই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পদত্যাগ করা এমডিকে কাজে ফিরিয়ে দেওয়ার উদাহরণও আছে।

জানা যায়, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ৪৮ কোটি টাকা সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত ঘিরে সৃষ্ট বিতর্কের জেরে পদত্যাগ করেছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন। গত মঙ্গলবার পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে মোশারফ হোসেনের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন পর্ষদের কয়েকজন সদস্য। পরদিনই তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।

তবে ব্যাংকটি লিখিতভাবে প্রথম আলোকে জানিয়েছে, এমডি লক্ষ্য পূরণ করতে না করায় তার ব্যর্থতা স্বীকার করে নেন, এরপর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। মোশারফ হোসেন চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি কমার্স ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগ দেন।

এদিকে গত সোমবার সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডি নুরুদ্দিন মো. ছাদেক হোসেন পদত্যাগ করেন। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান বরাবরে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এর আগে চলতি বছরের ৪ মে তাঁকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠিয়েছিল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।

গত রোববার পদত্যাগ করেন মেঘনা ব্যাংকের এমডি কাজী আহ্সান খলিল। গত বছরের এপ্রিলে ৩ বছরের জন্য তিনি ব্যাংকটির এমডি হিসেবে যোগ দেন। তবে ১৫ মাসের মাথায় এসে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।

জানতে চাইলে কাজী আহ্সান খলিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন পর্ষদ কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে আমাকে ছুটিতে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। আমি সেই প্রস্তাবে রাজি না হয়ে নিজেই পদত্যাগ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করলেই আরও অনেক কিছু জানতে পারবে।’

চলতি বছরের মার্চে মেঘনা ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটির শেয়ারধারী পরিচালকের পাশাপাশি স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। যাঁদের দুজন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ