কোনো অন্যায় করার পরে ভুল বুঝতে পারলে তখনই আল্লাহর কাছে তওবা করুন। ক্ষমা চান। এটি আল্লাহর কাছে অসম্ভব আনন্দের মুহূর্ত। আল্লাহ সবাইকে তাঁর কাছে তওবা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তওবায় আল্লাহর নেয়ামত ও সন্তুষ্টি মেলে। আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে ফিরে যাওয়ার পথ তওবা। তওবাকারীকে আল্লাহ দান করেন অসংখ্য নেয়ামত।
হাদিসে আছে, বান্দার তওবায় আল্লাহ সেই লোকের চেয়েও খুশি হন—যার খাদ্য ও পানীয় নিয়ে সওয়ারি উট হঠাৎ গভীর মরুভূমিতে হারিয়ে গেছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর লোকটি হতাশ হয়ে একটি গাছের ছায়ায় শুয়ে পড়ল। সে অবস্থায় হঠাৎ উটটিকে নিজের কাছে দাঁড়ানো দেখতে পেলে সে উটের লাগাম ধরে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে বলতে লাগল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার বান্দা! আর আমি তোমার প্রভু! সে আনন্দে অতিশয্যেই এ ধরনের ভুল করে বসল। (মুসলিম)
আরও পড়ুনআল্লাহ অবিশ্বাসীদের কথা বলেছেন সুরা কাফিরুনে১১ ডিসেম্বর ২০২৩হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.
সাইয়েদুল ইসতেগফার পড়ে তওবা করুন, ‘আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহ্দিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউলাকা বিজাম্বি ফাগ্ফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।’
আরও পড়ুনরাতে ঘুমানোর আগে সুরা মুলক পড়ার কারণ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩অর্থাৎ, ‘হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ্ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই বান্দা। আমি যথাসাধ্যভাবে তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারে আবদ্ধ। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। তুমি আমাকে তোমার যে নেয়ামত দিয়েছ, তা স্বীকার করছি। আর আমার করা গুনাহ্র কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করো। কারণ, তুমি ছাড়া আর কেউ (আমার) গুনাহ্ ক্ষমা করতে পারবে না।’
আরও পড়ুনএক কাঠমিস্ত্রির ঘটনা রয়েছে সুরা ইয়াসিনে ২১ নভেম্বর ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।