বান্দরবান জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুটি অংশে বিভক্ত দীর্ঘদিন ধরেই। দুটি পক্ষই আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছে। দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিবাদ দূর করতে এর আগে একাধিকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন কেন্দ্রীয় নেতারা। এখন নতুন করে শুরু হয়েছে সেই প্রক্রিয়া। প্রায় ২২ বছর পর গত রোববার রাতে দুই পক্ষের শীর্ষ নেতারা মিলিত হয়েছেন জেলা বিএনপির কার্যালয়ে। ঘোষণা দিয়েছেন একসঙ্গে কাজ করার। এর আগে সবশেষ ২০০৩ সালে এ দুটি পক্ষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। যদিও সেই ঐক্য বেশি দিন টেকেনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সাল থেকে কোন্দল চলে আসছে জেলা বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে। এর এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন ম্যামাচিং মারমা, অন্য পক্ষে সাচিংপ্রু জেরি। দুজনই জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং সম্পর্কে মামি-ভাগনে। ২ ফেব্রুয়ারি দুই পক্ষের নেতাদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে কেন্দ্র। এর মধ্যে সাচিংপ্রু জেরিকে আহ্বায়ক করা হয়। সদস্যসচিব করা হয়েছে ম্যামাচিং অনুসারী জাবেদ রেজাকে। ম্যামাচিং নিজেও সদস্য হিসেবে কমিটিতে রয়েছেন।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, রোববার রাতে ম্যামাচিং মারমা ও জাবেদ রেজা জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ফুলের তোড়া নিয়ে যান। এ সময় তাঁরা নতুন কমিটির আহ্বায়ক সাচিংপ্রু জেরিকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন। ম্যামাচিং ও জাবেদকে স্বাগত জানান জেরি। ম্যামাচিং সদ্য বিদায়ী জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও জাবেদ সদস্যসচিব ছিলেন।

রাতে দুই পক্ষ একত্র হওয়ার সময় নতুন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো.

ওসমান গণি ও যুগ্ম সদস্যসচিব মজিবুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা দুজনই জেরি পক্ষের নেতা। আহ্বায়ক কমিটিতে থাকা দুই পক্ষের নেতারা ভবিষ্যতে একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি জেলার রুমায় ও ২২ ফেব্রুয়ারি জেলা সদরে দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের সম্মিলিত অংশগ্রহণে কর্মসূচি পালিত হবে।

দলের নেতা-কর্মীরা জানান, দুটি পক্ষকে ভেদাভেদ ভুলে কাজ করার জন্য দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো পক্ষের কেউ নির্দেশনা না মানলে কিংবা ঐক্যের পথে বাধা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। এরপরই দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা এক হওয়ার চেষ্টা শুরু করেন।

জেলা শাখার নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে দুটি পক্ষের প্রতিনিধিত্ব থাকায় খুশি তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। জেলা ও উপজেলা বিএনপির সবাই কমিটিকে স্বাগত জানিয়েছে। কমিটি ঘোষণার পর থেকে সাচিংপ্রু জেরি ও জাবেদ রেজাকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় আনন্দমিছিল হয়েছে। রোববারও জেলা শহরে নেতা-কর্মীরা আনন্দ শোভাযাত্রা করেন। কিন্তু এসব আনন্দমিছিলে সাচিংপ্রু জেরি ও জাবেদ রেজাকে দেখা যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা জানান, কেন্দ্রের কড়া নির্দেশনা এবং জেলা-উপজেলার নেতা-কর্মীদের চাপের মুখে দুই পক্ষ একীভূত হয়েছে। তবে এই ঐক্য কতটুকু ধরে রাখা যাবে, তা নিয়ে এখনো নেতা-কর্মীদের সংশয় দূর হয়নি।

জানতে চাইলে জেলা বিএনপির নতুন কমিটির আহ্বায়ক সাচিংপ্রু জেরি বলেন, জেলা বিএনপি আগে থেকে বিভক্ত ছিল না। শীর্ষ কিছু নেতার ভুল পরিচালনার কারণে সমস্যা হয়েছিল। কেন্দ্রীয়ভাবে, বিশেষ করে ভাইস চেয়ারম্যানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে এখন একসঙ্গে কাজ করবেন সবাই। কোনো ভেদাভেদ থাকবে না।

নতুন কমিটির সদস্যসচিব জাবেদ রেজা বলেন, সাচিংপ্রু জেরি রাজপরিবারের সম্মানিত সদস্য ও দলের বর্ষীয়ান নেতা। তাঁর নেতৃত্বে দল পরিচালিত হলে বিএনপি বান্দরবানে সবচেয়ে শক্তিশালী দল হয়ে উঠবে। এই ঐক্য অবশ্যই টেকসই হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব কর ম দ র ব এনপ র কর ম র ক জ কর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা চেয়ারম্যানের

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ সংস্থাটির সবাইকে একত্রিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে এক সভায় তিনি এ অনুরোধ জানান।

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিএসইসির কমিশনার মোহসিন চৌধুরী, আলী আকবর, ফারজানা লালারুখসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতিসহ জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় এই সংস্থার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পরিপূর্ণ দায়িত্বশীল হয়ে ও শৃঙ্খলার সঙ্গে কাজ করতে হবে। সভায় কর্মকর্তাদের দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, সবাই একসঙ্গে কাজ করলে বিএসইসির কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি।

বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা আগের সব ভুলভ্রান্তি ভুলে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি কমিশনের বিভিন্ন সমস্যার সুরাহা করার বিষয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আশ্বাস দেন তাঁরা।

বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কমিশনের সঙ্গে পূর্ণ উদ্যম ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আগে সাকিব ভাই করতেন, এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি’
  • বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা চেয়ারম্যানের
  • নোবিপ্রবির পুকুরে ছাত্র-ছাত্রীদের গোসলের ছবি ভাইরাল, ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন