চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সহকারী প্রক্টর ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠেছে শেখ হাসিনা হলের এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, ওই ছাত্রী ভুক্তভোগী শিক্ষককে থাপ্পড় দেন।

অভিযুক্ত আফসানা এনায়েত এমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) রাত ১২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত থেকে ভিডিওটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ভাইরাল হয়। 

জানা গেছে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জননেত্রী শেখ হাসিনা হলের নামফলক ও হলের সামনে কংক্রিট নির্মিত নৌকা ভাঙতে যান। এ সময় সহকারী প্রক্টর ড.

মো. কোরবান আলী ঘটনাস্থলে গেলে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে অভিযুক্ত ছাত্রী তাকে থাপ্পড় দেন।

এর আগে, শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করার অভিযোগ উঠেছে শেখ হাসিনা হলের কিছু ছাত্রীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া এক সাংবাদিকের গায়ে হাত তুলেন ওই হলের ছাত্রীরা। এছাড়া আরও একজন সাংবাদিকের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন তারা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অভিযুক্ত ছাত্রীসহ আরো যেসব ছাত্রী সেদিন হামলায় জড়িত তারা স্বৈরাচারের দোসর। শিক্ষককে লাঞ্ছিত করায় ওই ছাত্রীকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান তারা।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী গাজী ইমরান বলেন, “এখনো শেখ হাসিনা হলে পতিত সরকারের দোসর ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রয়ে গেছে। যার কারণে স্বৈরাচারের নামফলক ভাঙতে গেলে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। ওই ছাত্রীসহ আরো যারা সেদিন শিক্ষক, ছাত্র ও সাংবাদিকের উপর হামলা করেছে, তাদের দ্রুত স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। সেইসঙ্গে তাদের সনদপত্র বাতিল করতে হবে।”

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়ব আহমেদ সিয়াম বলেন, “আমরা কাজ কাজ করছি মূল্যবোধ সংরক্ষণে। শিক্ষকের ওপর প্রকাশ্যে হামলা ছাত্রীদের মূল্যবোধের চরম অবনতির বহিঃপ্রকাশ। এ হামলাকারী গোষ্ঠীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে না পারলে প্রশাসন ব্যর্থ বলে গণ্য হবে। শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষার্থে হামলায় জড়িত ছাত্রীদের অবিলম্বে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, “ঘটনাটি অনেক আগের। সেদিনের ঘটনা তদন্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত চারদিন আগে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে। আজ তাদের প্রতিবেদন দাখিলের শেষদিন। প্রতিবেদনের আলোকে দোষীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাণের গানে সালাহর উৎসব

শেষ বাঁশি বাজতেই নেচে-গেয়ে উৎসবে মাতেন সালাহ-অ্যালিসন-এলিস্টাররা। তবে পর্বটা খুব বেশি লম্বা হয়নি। অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক সবাইকে ডেকে মাঠের একটি গোলপোস্টের সামনে জড়ো করেন। আর্নে স্লটের নেতৃত্বে কোচিং স্টাফরাও যোগ দেন সেখানে। গ্যালারি সামনে রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চেইনের মতো করে সারিবদ্ধভাবে দেয়াল বানিয়ে দাঁড়ান সবাই। পুরো এনফিল্ড তখন সমবেত কণ্ঠে গাইতে শুরু করে– You’ll Never Walk Alone...। অলরেডদের হৃদয় থেকে উৎসারিত এ গানেই পূর্ণতা পায় উৎসব।

এ গানের সঙ্গে সঙ্গে অন্য রকম এক আবহ তৈরি হয় সেখানে। বিশ্বের কোনো স্টেডিয়াম ছুঁতে পারবে না এনফিল্ডের এই আবহ। এই আবহ তৈরি অলরেডদের বিশ্বাসে, বছরের পর বছর যারা কেউ কাউকে একা হাঁটতে দেয়নি। রোববার সকাল থেকেই এনফিল্ডের চারপাশে তৈরি হয়েছিল উৎসবের পরিবেশ। আতশবাজি ও লাল আবিরে রঙিন হয়ে উঠেছিল লিভারপুলের আকাশ-বাতাস। আগে থেকেই বন্দর শহরটির দেয়ালে দেয়ালে ঐতিহাসিক গানটির সঙ্গে ‘২০’ লেখা গ্রাফিতি আঁকা শুরু হয়ে গিয়েছিল। 

ম্যাচ শুরুর দুই ঘণ্টা আগেই এনফিল্ড চত্বর রীতিমতো অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আর্নে স্লট, সালাহদের স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাজার হাজার সমর্থক। লাল জার্সি পরা কাতারে কাতারে সমর্থকদের মাঝখান দিয়ে লাল বাসে করে লিভারপুলের ফুটবলাররা স্টেডিয়ামের আঙিনায় প্রবেশ করেন অন্যরকম এক পরিবেশে। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমের পর ৩০ বছর ট্রফি জেতেনি তারা। পাঁচ বছর আগে ট্রফি জিতলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে উদযাপন হয়েছিল দর্শকশূন্য গ্যালারিতে। তাই এমন অনেক সমর্থক আছেন, যারা প্রিয় ক্লাবকে লিগ জিততে দেখেননি। সেই তরুণ প্রজন্মের উচ্ছ্বাসটা ছিল বেশি। 

২০তম শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব আর্নে স্লট দিয়েছেন সাবেক কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপকে। এমনকি তিনি সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে পুরো গ্যালারিকে নিয়ে ক্লপের নামে গানও গেয়েছেন। ২০১৫ সালে লিভারপুলে যোগ দেওয়ার পর ক্লপ তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন ক্লাবটিকে। এর মধ্যে দুবার অবিশ্বাস্য লড়াই করেও মাত্র ১ পয়েন্টের ব্যবধানে ম্যানসিটির কাছে শিরোপা হারাতে হয়েছিল তাদের। ২০২০ সালে জিতলেও সমর্থকদের নিয়ে উল্লাস করতে পারেননি।

ক্লপের লিগজয়ী দলের সদস্য ছিলেন মোহামেদ সালাহ। এবার ভিন্ন স্বাদ পেয়েছেন মিসরীয় এ তারকা। শিরোপা জয়ের পর স্কাই স্পোর্টসকে তিনি বলেন, ‘সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে শিরোপা জয়ের অনুভূতি অবিশ্বাস্য। গতবারের (২০২০) চেয়ে এবার শতভাগ ভালো ছিল। এটা অনেক বেশি আনন্দময়। এটা সত্যিই বিশেষ কিছু।’ 

প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগ জেতা আর্জেন্টাইন তারকা এলেক্সিস ম্যাক এলিস্টারের জন্যও এ শিরোপা বিশেষ কিছু, ‘বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, এখন জিতেছি প্রিমিয়ার লিগ। আমার জন্য সত্যই এটা বিশেষ কিছু। সতীর্থদের ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। আমাদের দলটি সত্যিই অসাধারণ।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনবার দায়িত্ব পালনের দাবি ট্রাম্পের
  • বাধ্যবাধকতা থাকায় ইশরাকের গেজেট প্রকাশ: ইসি
  • প্রাণের গানে সালাহর উৎসব
  • ‎আবু সাঈদ হত্যায় অভিযুক্তদের হলের সিট বাতিল
  • আবু সাঈদ হত্যায় অভিযুক্ত ৪ শিক্ষার্থীর আবাসিকতা বাতিল