জুলাই-আগস্টে মানবাধিকার লঙ্ঘন: জাতিসংঘ মিশনের প্রতিবেদন প্রকাশ আজ
Published: 12th, February 2025 GMT
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের ঘটনায় জাতিসংঘের তথ্য-অনুসন্ধানী মিশনের প্রতিবেদন আজ প্রকাশ করা হবে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জেনেভায় স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিট) এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক সংবাদ সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখবেন। এ সময় আরো উপস্থিত থাকনে এশিয়া-প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেন, মানবাধিকার কর্মকর্তা জ্যোৎস্না পৌড়িয়াল এবং প্রধান মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, জাতিসংঘের ওয়েব টিভিতে সংবাদ সম্মেলনটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের তদন্ত করেছে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের নিযুক্ত পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল ১৬ সেপ্টেম্বর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু করে।
মিশনটি দেশের বিভিন্ন এলাকা সফর করে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে সরাসরি তথ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন মানুষজন, গোষ্ঠী ও সংস্থার সঙ্গে কথা বলে।
এরইমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রতিবেদন শেয়ার করেছে মিশন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে অন্তত ৬৫০ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে। এর মধ্যে, ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আর ৫-৬ আগস্টের মধ্যে নিহত হন ২৫০ জন।
ঢাকা/হাসান/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।”
ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।
গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ