বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ভুল সময়ে ভুল নীতি নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার মনে হয়, এ সময়ে অর্থনীতিতে সফলতা নেই বললেই চলে। আমাদের মৌলিক সমস্যা যেমন উচ্চ মূল্যস্ফীতি অথবা প্রবৃদ্ধির ধীরগতির কারণে অর্থনীতি অনেকটাই স্থবির হয়ে গেছে। অন্যান্য যেসব সমস্যা আছে সেখানেও খুব একটা সফলতা নেই। ফলে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।’

মুস্তফা কে মুজেরি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকারের নেওয়া অর্থনৈতিক নীতিগুলোর একটা সাধারণ ধরন রয়েছে। সেটা হচ্ছে, ভুল সময়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া। জানি না, সেটি কেন হচ্ছে। তার একটা বড় উদাহরণ, অর্থবছরের মাঝপথে ভ্যাটের হার বাড়ানো। এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত, ভুল সময়ে নেওয়া হয়েছে। তার পরিণতি আগামী দিনগুলোতে ভালো হবে তা কিন্তু নয়।’

‘ভোক্তার কাঁধে বাড়তি করের বোঝা: উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এ কথাগুলো বলেন অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি। নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ ২৪ ডটকমের আয়োজনে এই গোলটেবিল বৈঠক আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানের এমসিসিআই সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে মুদ্রানীতি এককভাবে কোনো ফলাফল আনতে পারে না। বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার ১০ শতাংশে উঠিয়ে রেখেছে। এটি মূল্যস্ফীতিতে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। মূল্যস্ফীতি তার নিজের গতিতে চলছে। এতে বরং দেশের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। ব্যাংকঋণের সুদের হার বেড়ে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। এটি ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।’

বিআইডিএসের সাবেক এই মহাপরিচালক বলেন, অর্থনীতিতে যেসব নীতি নেওয়া হচ্ছে সেগুলো একটির সঙ্গে আরেকটির সম্পৃক্ততা নেই। খুব চিন্তাভাবনা করে নেওয়া হচ্ছে না। হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যেমন ভ্যাটের হার বৃদ্ধি। এটা একটা হঠাৎ সিদ্ধান্ত। এটা করার পেছনে আইএমএফের রাজস্ব বাড়ানোর ঋণের শর্ত ছিল। রাজস্ব বাড়ানোর সহজ উপায় কী? আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয়ের যাঁরা আছেন, তাঁরা মনে করেছেন, সবচেয়ে সহজ উপায় ভ্যাট বাড়িয়ে দিই। তাহলেই ১২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব বাড়বে। তিনি আরও বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে, সেই আশির দশক থেকে আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংক যেসব প্রেসক্রিপশন দিয়েছে সেগুলো কোনো কাজ করেনি। সবগুলো ব্যর্থ হয়েছে। এবারও ব্যর্থ হতে যাচ্ছে।

গোলটেবিল আলোচনায় কথা বলছেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ ল সময় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

তরুণদের শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধ ভবিষ্যৎ গড়ে দেবে: জবি উপাচার্য

শৃঙ্খলা, দায়িত্ববোধ ও দেশসেবার মনোভাব তরুণদের জীবন গড়ে দেয় বলে মন্তব্য করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সম্মেলন কক্ষে রোভার ইন কাউন্সিলের ২০২৫–২৬ সালের দায়িত্ব হস্তান্তর ও বার্ষিক সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, “শৃঙ্খলাযুক্ত জীবন খুবই সন্তুষ্টির একটি ক্ষেত্র। এটি অর্জন কঠিন কিছু নয়, বরং ইচ্ছাশক্তিই এর মূল উপাদান। এখন থেকেই যদি শৃঙ্খলার চর্চা শুরু করা যায়, ভবিষ্যতে সফলতা অর্জন সম্ভব।”

আরো পড়ুন:

শিক্ষার গতিপথ ও উন্নয়ন নিয়ে ঢাবিতে সেমিনার

জবি দ্বিতীয় ক্যাফেটেরিয়া দ্রুত চালুর দাবি

তিনি বলেন, “এবার দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত সময়ে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করে ক্লাস শুরু করতে পেরেছে, যা একটি বড় অর্জন। এ সফলতার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পাশাপাশি রোভার স্কাউটদের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।”

নতুন কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মো. মাহবুব হাওলাদার এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন মো. নাজমুল হোসেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রোভার স্কাউট গ্রুপের সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. মিন্টু আলী বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্‌দীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. রিফাত হাসান।

পরে রোভারদের নিবেদন ও নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ সনদ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তরুণদের শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধ ভবিষ্যৎ গড়ে দেবে: জবি উপাচার্য