অসিদের মাথায় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট
Published: 13th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০০৬ এর আসর বসেছিল ভারতে। প্রতিবেশী দেশটিতে ৫ নভেম্বর, ২০০৬ তারিখে শুরু হয় এর লড়াই। ১ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখে আইসিসি ওডিআই চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষ ছয় দল এবং শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার চার টেস্টভূক্ত দল থেকে রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে উঠে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং শ্রীলঙ্কাকে মূলপর্বে যুক্ত করা হয়।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০০৬ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। পুরো টুর্নামেন্টে কেবল একটি ম্যাচ হেরেছিল দারুণ ফর্মে থাকা অসিরা। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সেবারই প্রথম শিরোপার স্বাদ পায় অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচে অসিদের বিপক্ষে ডার্কওয়ার্থ-লুই পদ্ধতিতে ৮ উইকেটে হারে ক্যারিবীয়রা।
ভারতে অনুষ্ঠিত ওই আসরে ব্যাট হাতে সবচেয়ে বেশি রান করেছিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল। দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্যে একাই ৪৭৪ রান করেছিলেন গেইল। বল হাতেও সর্বোচ্চ উইকেটের দখল ছিল আরেক ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকার। জেরমে টেলর ১৩টি উইকেট নিয়ে শীর্ষ স্থানে ছিলেন।
আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০০৬ সালে অংশ নেয় মোট ১০টি দল। ১ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখের আইসিসি ওডিআই চ্যাম্পিয়নশীপ অনুযায়ী দলগুলোর অবস্থান নির্ধারিত হয়েছিল। ২৩ মার্চ, ২০০৬ তারিখে কেনিয়াকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ ১০ম স্থানে এসে প্রতিযোগিতায় লড়াই করার যোগ্যতা অর্জন করে। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, নিউ জিল্যান্ড, ভারত ও ইংল্যান্ড - এ শীর্ষ ছয় দল স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ্যতা লাভ করে। শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশকে ৭ থেকে ১৪ অক্টোবর দেয় বাছাইয়ের পরীক্ষা।
আট দলকে দুই গ্রুপে বিভক্ত করে রাউন্ড-রবিন প্রতিযোগিতায় খেলা হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ যথাক্রমে নিউ জিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেমিফাইনালে হারায়। শিরোপা নির্ধারণী চূড়ান্ত ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জয় করে রিকি পন্টিংয়ের দল।
৭ অক্টোবর ২০০৬ মোহালীতে বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৩৭ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ১১ অক্টোবর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ হারে ১০ উইকেটে। এরপর ১৩ অক্টোবর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০১ রানে জয় পায় টাইগাররা। তিন ম্যাচের দুটিতে হারায় বাছাইপর্বে তৃতীয় স্থানে থাকায় আসর থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ।
এক নজরে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি- ২০০৬
তারিখ : ৭ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর ২০০৬
আয়োজক : ভারত
ফরম্যাট : ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনাল
টুর্নামেন্ট : রাউন্ড-রবিন
অংশগ্রহণকারী দেশ : ১০টি
চ্যাম্পিয়ন : অস্ট্রেলিয়া
সবচেয়ে বেশি রান : ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিজ গেইল (৪৭৪)
সবচেয়ে বেশি উইকেট : ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেরমে টেলর (১৩) ।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট আইস স
এছাড়াও পড়ুন:
টেক্সটাইল শিক্ষকদের দিকে তাকান
একটা রাষ্ট্রের উন্নতির দিকে এগিয়ে যাওয়ার কিছু মানদণ্ড আছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মানসম্পন্ন যুগোপযোগী শিক্ষার প্রসার করা। শিক্ষকদের দুর্বল বেতনকাঠামো দিয়ে এটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। শুধু তা–ই নয়, অনেক সময় নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় শিক্ষকদের বেতনও আটকে যায়। যেমন আমরা দেখছি সারা দেশে মোট ১০টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষক–কর্মচারীরা ১৪ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। কারিগরি শিক্ষা নিয়ে গুরুত্বারোপ করা হলেও সেখানে নানা অবহেলা বিদ্যমান। এটি খুবই দুঃখজনক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ২০০৬ সাল থেকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বস্ত্র অধিদপ্তরের অধীন দেশের ১০টি জেলায় টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প শুরু হয়। ২০০৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ছিল। এরপর তিনবার প্রকল্পের মেয়াদ বর্ধিতকরণ হওয়ার পর ২০১৪ সালের জুনে শেষ হয়। ২০০৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পেতেন। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত অনিয়মিত বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। তবে ২০২৪ সালের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত ১৪ মাস ধরে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না।
শিক্ষকদের অভিযোগ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। ফলে বাড়িভাড়া, সন্তানের শিক্ষা ও চিকিৎসা—সবই ব্যাহত হচ্ছে। অনেক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধারদেনা করে সংসার চালাচ্ছেন। এক বছরের বেশি সময় ধরে শিক্ষকেরা যে আর্থিক ও মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, তা তাঁদের পেশাদার জীবন এবং ব্যক্তিগত জীবন উভয়কেই বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
যে শিক্ষকেরা দেশের টেক্সটাইল শিল্পে দক্ষ জনশক্তি তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছেন, তাঁদের এমন করুণ দশা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। এই শিক্ষকেরা মনোবল হারিয়ে ফেলছেন, ক্লাসে স্বাভাবিক মনোযোগ দিতে পারছেন না এবং এর নেতিবাচক প্রভাব সরাসরি শিক্ষার্থীদের ওপর পড়ছে। এমন অবস্থায় কীভাবে দেশের টেক্সটাইল খাতকে শক্তিশালী ও প্রতিযোগিতামূলক করে তোলা সম্ভব, তা একটি বড় প্রশ্ন।
শিক্ষকদের এই দুর্দশা কোনো নতুন ঘটনা নয়। ২০০৬ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পের অধীনে স্থাপিত এই ইনস্টিটিউটগুলো বহু বছর ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যে চলছে। আদালতের রায়ের পরও এ অচলাবস্থা কাটছে না। ২০১৮ সালে হাইকোর্ট এবং চলতি বছরের ২১ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ শিক্ষকদের পক্ষে রায় দিলেও বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় তা কার্যকর করছে না। এই দীর্ঘসূত্রতা এবং বিচার বিভাগের আদেশকে উপেক্ষা করার প্রবণতা রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তৈরি করে।
আমরা আশা করব টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের এ দুর্দশা দ্রুত কেটে যাবে। সরকারের নীতিনির্ধারকেরা তাঁদের দিকে সুদৃষ্টি দেবেন।