``ইট জাস্ট হ‌্যাপেন্ড’’ - ২০০৬ সালে টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ৬২৪ রানের জুটিকে ‍কুমার সাঙ্গাকারা ব‌্যাখ‌্যা করেছিলেন এভাবে। আর সঙ্গী মাহেলা জয়াবর্ধনে বলেছিলেন,‘‘আমরা জানতাম না রেকর্ডটা কত রানের। জানার পর আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি। কেননা আমি আউট হলে ঠিক আছে, কিন্তু আমার কারণে আমার সতীর্থ ইতিহাসে অংশ হতে পারবে না…এটা নিয়েই দুঃশ্চিন্তা হতো। শেষ কয়েকটি রান ছিল উদ্বেগজনক।’’

ক্রিকইনফো সাঙ্গাকারা-মাহেলার ৬২৪ রানের জুটিকে নিয়ে রিপোর্ট করেছে এভাবে, ‘‘অ‌্যান্ড দে ওয়েন্ট অন অ‌্যান্ড অন।’’
টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি কাদের দখলে? কিংবা যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ কত রানের জুটি গড়েছেন ব্যাটসম্যানরা? ক্রিকেট যাদের ধ্যান-জ্ঞান তাদের মুখে এ দুটি প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে সেকেন্ডেই। তবে যারা ক্রিকেটকে একটু কম পছন্দ করেন তাদেরও এ প্রশ্নের উত্তর অজানা নয়। কারণ এমন এক কীর্তি যা শুধু রেকর্ড বুকে জায়গা পায়নি, ক্রিকেট প্রেমীদের মনে জায়গা করে নিয়েছে।

২০০৬ সালে আজকের দিনে এমন কীর্তি গড়েছিলেন দুই কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬২৪ রান করেছিলেন তারা। এখন পর্যন্ত যা টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। ১৯ বছর ধরে এ রেকর্ড নিজেদের দখলে রেখেছেন সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনে। স্মরণীয় দিনটিকে স্মরণ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলও। টুইটারে তাদের ছবি পোস্ট করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। 

২০০৬ সালের ২৭ জুলাই শিংহলিজ স্পোর্টস গ্রাউন্ড মাঠে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ১৬৯ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। লঙ্কানদের শুরুটাও ভালো হয়নি। জয়াসুরিয়া ও থারাঙ্গা সাজঘরে ফেরেন মাত্র ১৪ রানে। দুই ওপেনারকে সাজঘরে পাঠিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল প্রোটিয়ারা। কিন্তু কে জানত একটু পরই তাদের এলোমেলো করে দিতে আসবে ‘সাঙ্গার্ধনে’। ২২ গজের ক্রিজে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন দুজন। ১০ ঘন্টা দক্ষিণ আফ্রিকার আট বোলারকে কড়া শাসন করেন।

মনে প্রশ্ন আসতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা কোন দল শ্রীলঙ্কায় পাঠিয়েছিল? উত্তরটাও খুব সহজ, ম্যাচে খেলেছিলেন মাখায়া এনটিনি, ডেল স্টেইন, আন্দ্রে নেল, অ্যান্ড্রু হল ও নিকি বোয়ে। এ পাঁচ বোলার তো নিয়মিত বোলিং করতেন। পার্ট টাইমার হিসেবে হাত ঘুরিয়েছিলেন অ্যাশলে প্রিন্স, জ্যাক রুডলফ ও এবি ডি ভিলিয়ার্স। ৬২৪ রানের জুটি গড়ে শীর্ষে উঠতে দুই লঙ্কান ভাঙেন স্বদেশি দুই ক্রিকেটারের রেকর্ড। ভারতের বিপক্ষে ১৯৯৭ সালে সনাৎ জয়সুরিয়া এবং রোশান মোহানামা ৫৭৬ রান করেছিলেন।

সাঙ্গাকারা ও জয়াবর্ধনের ৬২৪ রানের জুটি ভাঙেন অ্যান্ড্রু হল। অফস্ট্যাম্পে বাইরের আউট সুইং বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেন সাঙ্গাকারা। ততক্ষণে ক্যারিয়ার সেরা ২৮৭ রান তুলে নেন বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান। পরবর্তীতে এ রান টপকে যান বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩১৯ রান করে। ওই ইনিংসে বন্ধু সাঙ্গাকারা ট্রিপল সেঞ্চুরির স্বাদ না পেলেও মাহেলা ঠিকই তুলে নেন ট্রিপল সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ার সেরা ৩৭৪ রান করে আউট হন নেলের বলে। তাদের দুজনের ব্যাটে চড়ে শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে ৭৭৬ রান করে।

মাহেলা জয়াবর্ধনে ১৪৯ টেস্টে ১১,৮১৪ রান করেছেন ৩৪ সেঞ্চুরি ৫০ হাফ-সেঞ্চুরি নিয়ে। অন্যদিকে কুমার সাঙ্গাকারা ১৩৪ টেস্টে করেছেন ১২,৪০০ রান। ৩৮ সেঞ্চুরির সঙ্গে তার নামের পাশে লেখা ৫২ হাফ-সেঞ্চুরি।

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৬২৪ র ন র জ ট র কর ড র ন কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

অ‌্যান্ড দে ওয়েন্ট অন অ‌্যান্ড অন’

``ইট জাস্ট হ‌্যাপেন্ড’’ - ২০০৬ সালে টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ৬২৪ রানের জুটিকে ‍কুমার সাঙ্গাকারা ব‌্যাখ‌্যা করেছিলেন এভাবে। আর সঙ্গী মাহেলা জয়াবর্ধনে বলেছিলেন,‘‘আমরা জানতাম না রেকর্ডটা কত রানের। জানার পর আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি। কেননা আমি আউট হলে ঠিক আছে, কিন্তু আমার কারণে আমার সতীর্থ ইতিহাসে অংশ হতে পারবে না…এটা নিয়েই দুঃশ্চিন্তা হতো। শেষ কয়েকটি রান ছিল উদ্বেগজনক।’’

ক্রিকইনফো সাঙ্গাকারা-মাহেলার ৬২৪ রানের জুটিকে নিয়ে রিপোর্ট করেছে এভাবে, ‘‘অ‌্যান্ড দে ওয়েন্ট অন অ‌্যান্ড অন।’’
টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি কাদের দখলে? কিংবা যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ কত রানের জুটি গড়েছেন ব্যাটসম্যানরা? ক্রিকেট যাদের ধ্যান-জ্ঞান তাদের মুখে এ দুটি প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে সেকেন্ডেই। তবে যারা ক্রিকেটকে একটু কম পছন্দ করেন তাদেরও এ প্রশ্নের উত্তর অজানা নয়। কারণ এমন এক কীর্তি যা শুধু রেকর্ড বুকে জায়গা পায়নি, ক্রিকেট প্রেমীদের মনে জায়গা করে নিয়েছে।

২০০৬ সালে আজকের দিনে এমন কীর্তি গড়েছিলেন দুই কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬২৪ রান করেছিলেন তারা। এখন পর্যন্ত যা টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। ১৯ বছর ধরে এ রেকর্ড নিজেদের দখলে রেখেছেন সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনে। স্মরণীয় দিনটিকে স্মরণ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলও। টুইটারে তাদের ছবি পোস্ট করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। 

২০০৬ সালের ২৭ জুলাই শিংহলিজ স্পোর্টস গ্রাউন্ড মাঠে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ১৬৯ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। লঙ্কানদের শুরুটাও ভালো হয়নি। জয়াসুরিয়া ও থারাঙ্গা সাজঘরে ফেরেন মাত্র ১৪ রানে। দুই ওপেনারকে সাজঘরে পাঠিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল প্রোটিয়ারা। কিন্তু কে জানত একটু পরই তাদের এলোমেলো করে দিতে আসবে ‘সাঙ্গার্ধনে’। ২২ গজের ক্রিজে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন দুজন। ১০ ঘন্টা দক্ষিণ আফ্রিকার আট বোলারকে কড়া শাসন করেন।

মনে প্রশ্ন আসতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা কোন দল শ্রীলঙ্কায় পাঠিয়েছিল? উত্তরটাও খুব সহজ, ম্যাচে খেলেছিলেন মাখায়া এনটিনি, ডেল স্টেইন, আন্দ্রে নেল, অ্যান্ড্রু হল ও নিকি বোয়ে। এ পাঁচ বোলার তো নিয়মিত বোলিং করতেন। পার্ট টাইমার হিসেবে হাত ঘুরিয়েছিলেন অ্যাশলে প্রিন্স, জ্যাক রুডলফ ও এবি ডি ভিলিয়ার্স। ৬২৪ রানের জুটি গড়ে শীর্ষে উঠতে দুই লঙ্কান ভাঙেন স্বদেশি দুই ক্রিকেটারের রেকর্ড। ভারতের বিপক্ষে ১৯৯৭ সালে সনাৎ জয়সুরিয়া এবং রোশান মোহানামা ৫৭৬ রান করেছিলেন।

সাঙ্গাকারা ও জয়াবর্ধনের ৬২৪ রানের জুটি ভাঙেন অ্যান্ড্রু হল। অফস্ট্যাম্পে বাইরের আউট সুইং বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেন সাঙ্গাকারা। ততক্ষণে ক্যারিয়ার সেরা ২৮৭ রান তুলে নেন বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান। পরবর্তীতে এ রান টপকে যান বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩১৯ রান করে। ওই ইনিংসে বন্ধু সাঙ্গাকারা ট্রিপল সেঞ্চুরির স্বাদ না পেলেও মাহেলা ঠিকই তুলে নেন ট্রিপল সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ার সেরা ৩৭৪ রান করে আউট হন নেলের বলে। তাদের দুজনের ব্যাটে চড়ে শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে ৭৭৬ রান করে।

মাহেলা জয়াবর্ধনে ১৪৯ টেস্টে ১১,৮১৪ রান করেছেন ৩৪ সেঞ্চুরি ৫০ হাফ-সেঞ্চুরি নিয়ে। অন্যদিকে কুমার সাঙ্গাকারা ১৩৪ টেস্টে করেছেন ১২,৪০০ রান। ৩৮ সেঞ্চুরির সঙ্গে তার নামের পাশে লেখা ৫২ হাফ-সেঞ্চুরি।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ