লিফলেট বিতরণ: কলেজ শিক্ষকসহ ৫ জন রিমান্ডে
Published: 13th, February 2025 GMT
নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের লিফলেট বিতরণের অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় কলেজ শিক্ষক মুকিব মিয়াসহ পাঁচ জনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলাম রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া অন্যরা হলেন—যুবলীগের সদস্য কপিল হালদার সজল, মতিঝিল থানা যুবলীগের সদস্য কে এম সাইফুল খান, ফতুল্লা থানা যুবলীগের সদস্য শেখ মোহাম্মদ হাফিজ ও মোনালিসা জুই।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক কে এম রেজাউল করিম তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের রিমান্ডের আদেশ দেন।
মুকিব মিয়া নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক। তিনি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ দাবিতে আসামিরা লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কার্যক্রমকে গতিশীল করা, সরকার তথা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, রাষ্ট্রের ক্ষতি করার লক্ষ্যে অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। এ ঘটনায় গত ২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ।
ঢাকা/মামুন/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কাউখালীতে নারী সমাবেশ থেকে ফেরার পথে শিক্ষকসহ তিনজনের ওপর হামলার অভিযোগ
কল্পনা চাকমার অপহরণের ২৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত নারী সমাবেশ থেকে ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ তিনজনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার বেতছড়ি এলাকায় তাঁদের ওপর হামলা হয়।
হামলার শিকার তিনজন হলেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষক অলিউর সান, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি নূজিয়া হাসিন ও লেখক মার্জিয়া প্রভা।
তাঁদের অভিযোগ, নারী সমাবেশে যাওয়ার কারণে কাউখালী সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্রদল সভাপতি মো. ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. নাঈম হোসেন তাঁদের ওপর হামলা করেন।
বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি নূজিয়া হাসিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘হিল উইমেনস ফেডারেশন নারী সমাবেশের আয়োজন করেছিল। সেখান থেকে বক্তৃতা দিয়ে আমরা ফিরছিলাম। আমরা তিনজন ছিলাম সিএনজিচালিত অটোরিকশায়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে একটি মোটরসাইকেল এসে আমাদের অটোরিকশা থামান। তিনজন ছিলেন ওই মোটরসাইকেলে।’
নূজিয়া হাসিন বলেন, ‘মোটরসাইকেল থেকে নেমেই আমাদের ওপর হামলা শুরু করেন দুজন। আমাদের ইউপিডিএফ সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে চড়–থাপ্পড় মারা হয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, হামলাকারীদের দুজন স্থানীয় কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।’
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রদলের সভাপতি মো. ইমরান হোসেনের মুঠোফোনে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। সাধারণ সম্পাদক মো. নাঈম হাসান দাবি করেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। ঘটনাটি তিনি আজ শুক্রবার সকালে জেনেছেন। ঘটনাস্থল থেকে তাঁর বাড়ি অনেক দূরে। তিনি সেখানে যাননি। আর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ তিনজনকে তিনি চেনেন না।
এক প্রশ্নের জবাবে নাঈম বলেন, গতকাল বিকেল সাড়ে চারটায় তিনি উপজেলাতেই ছিলেন। সভাপতি ইমরান হোসেনের ভাই অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি। ফলে সভাপতিরও ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা নয় বলে দাবি করেন তিনি।
নূজিয়া হাসানের অভিযোগ, ‘হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর আমরা কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামকে ফোনে ঘটনাটি জানাই। তাঁকে পুলিশ পাঠাতে অনুরোধ করি। ঘটনাটি তাঁর থানা এলাকায় ঘটেছে কি না, সেটি নিয়েও অনেকক্ষণ কথা হয়। পরে ঈদের ছুটির কথা বলে তিনি পুলিশ পাঠাননি। তবে আমাদের থানায় যাওয়ার কথা বলেন। আমরা নিরাপত্তাজনিত কারণে আর থানায় যাইনি। এরপর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আসাদুজ্জামানকে বিস্তারিত জানিয়েছি। তিনি অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি ও পরে মামলা করার পরামর্শ দেন।’
এ ঘটনার বিষয়ে জানতে আজ বিকেল পাঁচটার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি রাঙামাটি জেলার। তাঁর এলাকা চট্টগ্রাম। তিনি তাঁদের স্থানীয় থানায় যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, তাঁর থানা এলাকায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ফলে তাঁর আইনিভাবে কিছুই করার নেই। অবশ্য একজন (মারজিয়া প্রভা) তাঁকে ফোন করেছিলেন। তিনি যে জায়গার নাম দেন, সেটি থানা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে।
এরপর পাশের রাঙ্গুনিয়া থানায় যোগাযোগ করা হলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কবির মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এ ছাড়া ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে, সেটি তাঁর থানায় পড়েছে কি না, এ বিষয়ে নিশ্চিত নন।