ইসলামী বন্ড ছেড়ে এবার গ্রামীণ রাস্তায় সেতু নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের জন্য ৭ বছর মেয়াদে ৩ হাজার কোটি টাকার ‘সুকুক’ ছাড়া হবে। আগামী মার্চে এই নিলাম হতে পারে। ভাড়ার হার কত হবে তা পরে ঠিক হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্ত হয়। নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের জন্য প্রথম সুকুকের মাধ্যমে ২০২০ সালে ৮ হাজার কোটি টাকা তুলেছিল সরকার।

শরিয়াহভিত্তিক বন্ড ‘সুকুক’ নামে পরিচিত। সুকুক একটি আরবি শব্দ; যার অর্থ সিলমোহর লাগিয়ে কাউকে মালিকানা দেওয়ার আইনি দলিল। বিনিয়োগকারীদের টাকায় গড়ে ওঠা এ প্রকল্প সরকারের ভাড়া হিসেবে পরিচালিত হয়। প্রচলিত ধারার বন্ড ইস্যু করে টাকা তুলে সরকার যে কোনো কাজে খাটাতে পারে। অন্যদিকে নির্দিষ্ট প্রকল্পের বিপরীতে সুকুক ইস্যু করা হয়। 
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশের ৮টি বিভাগের ৫৮টি উপজেলায় ৮২টি সেতু নির্মাণের কাজ চলমান আছে। এসব এলাকায় মোট ১৭ হাজার ৬৯৭ মিটার দৈর্ঘ্য, ৩৮ হাজার ৮০০ মিটার সংযোগ সড়ক ও ৪,২৩০ মিটার নদীশাসনের কাজ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রকল্প এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষি ও অকৃষিপণ্য পরিবহন ব্যবস্থা সহজীকরণ ও ব্যয় কমানো সম্ভব হবে। এর ফলে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত হবে। এটি হবে পঞ্চম বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগ সুকুক।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে ডেপুটি গভর্নর ড.

মো. কবির আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত সব সদস্যের সম্মতিতে এ প্রকল্পের বিপরীতে সুকুক ইস্যুর সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে সিআইবিআরআর-২ সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট সুকুক। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, নতুন এ প্রকল্পে সুকুক ইস্যুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন এর ভাড়াসহ অন্যান্য বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে। আগামী মার্চের মধ্যে আবারও শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কমিটির বৈঠক করে এরপর ভাড়ার হারসহ অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
সরকারের নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি ইসলামী বন্ড সুকুকের আওতায় দুই নিলামে চার হাজার কোটি টাকা করে ৮ হাজার কোটি টাকা তুলেছে সরকার। এর মধ্যে প্রথম নিলাম অনুষ্ঠিত হয় ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় নিলাম হয় ২০২১ সালের ৯ জুন। উভয় নিলামে ব্যাপক সাড়া পেয়েছিল সরকার। ওই সময় চাহিদার প্রায় তিনগুণ আবেদন পড়েছিল। চাহিদার কয়েকগুণ বেশি আবেদন আসায় আনুপাতিক হারে সবার মাঝে ভাগ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বন ড এ প রকল প প রকল প র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন

স্তূপ করে রাখা ইলিশে ভরে গেছে ঘাট। চারদিকে মাছের গন্ধ, বরফের ঠান্ডা ধোঁয়া, ক্রেতার হাঁকডাক। কেউ দর কষছেন, কেউ আবার টাটকা ইলিশ দেখে ব্যাগভর্তি করে নিচ্ছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী নদীর তীরে ফিশারিঘাটের নতুন মাছবাজারে গিয়ে দেখা গেল এই ব্যস্ত চিত্র।

নিষেধাজ্ঞার পর বাজার যেন নিজের ছন্দে ফিরেছে। গত ২৫ অক্টোবর সাগরে মাছ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। এর পর থেকেই একের পর এক ট্রলার ভিড়ছে ঘাটে—কোনো ট্রলারভর্তি লইট্টা, কোনোটা ছুরি, চিংড়ি, ফাইস্যা বা ইলিশে ভরপুর। ভোর থেকেই আড়তগুলোয় শুরু হয় নিলাম, পরে সেই মাছ চলে যায় শহরের বাজারে। এমনকি জেলার গ্রামীণ হাটবাজারেও পৌঁছে যাচ্ছে ট্রাকভর্তি মাছ।

গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, নদীর ঘাট ঘেঁষে ট্রলার। ঘাটে নামছে বরফঠান্ডা মাছের বাক্স। আড়তের সামনে ইলিশের স্তূপ ঘিরে ক্রেতাদের ভিড়। বিক্রেতারা তখন বরফ ছুড়ে দিচ্ছেন মাছের ওপর। ছোট আকারের ইলিশের দাম ক্রেতাদের কেউ হাঁকছেন ১০ হাজার, কেউ ১২ হাজার টাকা—শেষমেশ দর থামছে ১৬ হাজার টাকায়। ওই দরে বিক্রি হলো ১ মণ ছোট আকারের ইলিশ। এক কেজিতে পড়ছে পাঁচ থেকে ছয়টি করে মাছ।

নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহে ঘাটতি ছিল। এখন ধীরে ধীরে সব ঠিক হচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন সাগরের নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় অনেক জেলে গভীর সমুদ্রে যেতে পারেননি। ফলে বড় ইলিশ আসছে কম।নুর মোহাম্মদ, আড়তদার

মেসার্স হাজি আবদুল গণি ফিশিংয়ের স্বত্বাধিকারী নুর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে জানান, নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই জেলেরা সমুদ্রে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু বড় আকারের ইলিশ এখনো তেমন ধরা পড়ছে না। ছোট ও মাঝারি ইলিশই বাজারে বেশি আসছে।

ব্যস্ত ঘাট, ব্যস্ত আড়ত

ফিশারিঘাটে এখন সকাল থেকেই যেন উৎসবের আমেজ। ট্রলার ঘাটে ভিড়লেই শুরু হয় কর্মচাঞ্চল্য। আড়তগুলোর সামনেই চলছে বাক্সে মাছ ভরানোর কাজ। আড়তদারেরা জানান, চট্টগ্রামের এই ঘাটে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়। নিষেধাজ্ঞার সময় বাজার একটু স্তিমিত থাকে। অন্য সময় লেগে থাকে ব্যস্ততা।

ছোট ইলিশ কেজিতে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কোনো ইলিশ সাড়ে ৩০০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। বড় আকারের যেগুলো, সেগুলোর দাম একটু চড়া; প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

আড়তদার নুর মোহাম্মদের মতে, নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহে ঘাটতি ছিল। এখন ধীরে ধীরে সব ঠিক হচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন সাগরের নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় অনেক জেলে গভীর সমুদ্রে যেতে পারেননি। ফলে বড় ইলিশ আসছে কম। একই আক্ষেপ করলেন মেসার্স মা মরিয়ম ফিশিংয়ের কর্ণধার ছৈয়দ নুর। তিনি বলেন, বড় আকারের ইলিশ কম আসছে। তবে অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ প্রচুর ধরা পড়ছে। বিক্রিও ভালো।

দরদাম যেমন

ফিশারিঘাটের পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ছোট ইলিশ কেজিতে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কোনো ইলিশ সাড়ে ৩০০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। বড় আকারের যেগুলো, সেগুলোর দাম একটু চড়া—প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

মাছের ওপর বরফ ছিটানো হচ্ছে। গতকাল দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম নগরের ফিশারিঘাট নতুন মাছ বাজারে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের আছে: ট্রাম্প
  • দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
  • চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
  • জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন
  • বাজারে আগাম সবজি আসতে দেরি, দাম চড়া
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প
  • জুলাই বিরোধিতা: ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’