আ.লীগ-জামায়াত-জাপার সমালোচনা করে যা বললেন ফারুক
Published: 14th, February 2025 GMT
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক বলেছেন,“জামায়াতে ইসলামী আওয়ামী লীগকে, শেখ হাসিনাকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে জীবন দিতে হয়েছে। আমি মনে করি, তার পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল শেখ হাসিনার।”
শুক্রবার (১৪ ফেবব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম’ আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টিরও (জাপা) সমালোচনা করেন জয়নাল আবদীন ফারুক।
জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও পবিত্র রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে এ নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশে জয়নাল আবদীন ফারুক বলেন,“গত ৫৪ বছরে কোনোদিন দেখিনি স্বাধীনতা দিবসে একটা মিছিল করতে। যখনই অন্তর্বর্তী সরকার অক্টোবর-নভেম্বরে নির্বাচনের কথা বলা শুরু করল, তখনই আপনাদের মুখে রাম নাম। আবার শুনি, স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কীসের ইঙ্গিত? সংস্কারের পর নির্বাচন? কোথায় ছিলেন স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়, কোথায় ছিলেন গত ১৬ বছর?”
তিনি বলেন, “আমরা শুনেছি আপনাদের একটা পত্রিকার মাধ্যমে, ১৯৭১ সালে আমরা যারা যুদ্ধ করেছিলাম, তাদেরকে অমুসলিম বলা হয়েছে। আবার নতুন চক্রান্ত শুরু করেছেন। কোথায় ছিলেন, আমার নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য হাঁটুজলে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছেন। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি ১৬ বছর হাসিনার কাছে মাথা নত করিনি। এখন এই সরকারকে সমর্থন দিয়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হলে আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করব না।”
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, “জামায়াতে ইসলামী আপনারাও আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। পরিণামে কী পেয়েছেন? আপনাদের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মেরেছে।”
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের উদ্দেশে জয়নাল আবদীন ফারুক বলেন, “তিনবার জাতীয় নির্বাচনে বৈধতা দিয়ে; শেখ হাসিনাকে, আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করে আপনাদের দল আজ বিলীনের পথে।”
তিনি আরো বলেন,“বিগত ১৬ বছরে আমরা অনেক কষ্ট করেছি, অনেক কটূক্তি শুনেছি, অনেক ব্যথা পেয়েছি, অনেক জেল খেটেছি। জনগণের কথা বলতে গিয়ে এই প্রেস ক্লাবের সামনে থেকেই আমাদের নেতৃবৃন্দসহ গ্রেপ্তার হয়েছি। এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে আজকে ভারতের আশ্রয় গ্রহণকারী শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রকে তার (শেখ হাসিনার) বাবা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। এটা আমরা কখনোই শেখ মুজিবের কাছে আশা করিনি। সে কারণেই তাকে জীবন দিতে হয়। মানুষের ভালোবাসার সম্মান যে ব্যক্তি দিতে পারে না, সে ব্যক্তি কোনোদিনও ক্ষমতাই থাকতে পারে না। তার আরেক প্রমাণ শেখ হাসিনা।”
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন—বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, সাধারণ সম্পাদক মো.
ঢাকা/মামুন/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ল আবদ ন ফ র ক আপন দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।