২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের আকাশে দেখা যাবে যেসব চমক
Published: 15th, February 2025 GMT
ফেব্রুয়ারি মাসের রাতের আকাশ শীতকালীন নক্ষত্রপুঞ্জ পর্যবেক্ষণের সেরা সময়। শীতের কুয়াশা না থাকায় সপ্তাহজুড়েই আকাশে মহাজাগতিক অনেক চমক দেখা যাবে। এ সপ্তাহের আকাশে যা যা দেখা যাবে, সেগুলো দেখে নেওয়া যাক।
১৫ ফেব্রুয়ারি
আজ শনিবার বাংলাদেশের আকাশে গ্রহের মেলা দেখা যাবে। সন্ধ্যার আকাশে বুধ গ্রহ দেখা যাবে ৬টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত। বুধগ্রহ স্বল্প সময়ের জন্য দৃশ্যমান হলেও শুক্রগ্রহ দেখা যাবে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত। মঙ্গল গ্রহ সন্ধ্যা থেকে ভোররাত ৪টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত এবং বৃহস্পতি গ্রহ দেখা যাবে সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১টা ৩৭ মিনিট পর্যন্ত। এদিন আকাশে ক্যাসিওপিয়া নামের তারকাপুঞ্জ পর্যবেক্ষণ করা যাবে। তবে শনি, নেপচুন ও ইউরেনাস গ্রহ দেখতে বেশ কষ্ট হবে।
১৬ ফেব্রুয়ারি
সন্ধ্যার পর থেকে আকাশে শুক্র গ্রহ স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। তবে একটু খেয়াল করলেই মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহ দেখার সুযোগ মিলতে পারে। তিনটি গ্রহই সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দেখা যাবে। তবে এদিন শনি, ইউরেনাস, বুধ ও নেপচুন স্পষ্টভাবে দেখার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আকাশ পরিষ্কার থাকলে সন্ধ্যার আকাশে দুরবিন বা বাইনোকুলারের মাধ্যমে ক্যামেলোপারডালিস নামের তারকাপুঞ্জে দেখা যাবে।
১৭ ফেব্রুয়ারি
এদিন সন্ধ্যায় শুক্র গ্রহ যেকোনো টেলিস্কোপের আইপিস থেকে দেখলে ২৫ ভাগ বেশি আলোকিত অবস্থায় দেখা যাবে। দৃশ্যত গ্রহটির আপাত ব্যাস বর্তমানে ৪০ আর্কসেকেন্ড। আকাশে খুব ছোট কোণ পরিমাপ করতে জ্যোতির্বিদ্যায় একক হিসেবে আর্ক সেকেন্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। দিনের বেলায় ভার্গো তারকামণ্ডলের স্পিকা নামের আলোকিত তারার পাশেই অবস্থান করবে আমাদের চাঁদ, যদিও তা দিনের আকাশে দেখার সুযোগ পাব না আমরা।
১৮ ফেব্রুয়ারি
আকাশে শুক্র গ্রহ স্পষ্টভাবে অবস্থান করবে সন্ধ্যার সময়। অন্যদিকে মধ্যরাত পর্যন্ত স্পষ্টভাবে দেখা যাবে মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহ। এদিন রাত একটার সময় চাঁদ পৃথিবী থেকে সর্বোচ্চ দূরে অর্থাৎ ৪ লাখ ৪ হাজার ৮৮২ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করবে।
২০ ফেব্রুয়ারি
রাত ১১টার সময় ক্যানসার তারকামণ্ডলের এম৪৪ নামের তারকাসংঘ দেখা যাবে। যেকোনো সাধারণ বায়নোকুলার দিয়েই এই তারকাসংঘ দেখা যাবে। এদিন চাঁদের শেষার্ধ দেখারও সুযোগ মিলবে। এর পাশাপাশি সন্ধ্যা ৬টা ৩৬ মিনিটে বৃহস্পতি গ্রহ সবচেয়ে আলোকিত অবস্থায় দেখা যাবে।
২১ ফেব্রুয়ারি
দিনের বেলায় চাঁদের অবস্থান থাকবে বৃহৎ লাল তারকা অ্যান্টারেসের কাছে। সকাল ১০টার সময় সূর্য থেকে ৮৩ ডিগ্রি দূরে চাঁদের অবস্থান দেখা যাবে। এদিন রাত ৯টা ০৭ মিনিটে আকাশের ঠিক মাঝখানে মঙ্গল গ্রহ দেখা যাবে।
সূত্র: বিবিসি স্কাই অ্যাট নাইট ম্যাগাজিন, অ্যাস্ট্রোনমি, স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ ও স্কাই ম্যাপস
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত: বিবিসি
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ফলে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জনে পৌঁছেছে। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা বিবিসি।
অন্যদিকে আল জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।