বগুড়ার ধুনটে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে যমুনা নদীর বাঁধে ঘুরতে গিয়ে নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হয়েছিলেন কলেজছাত্র জুনায়েদ রহমান (১৮)। নিখোঁজের ২১ ঘণ্টা পর আজ বেলা একটার দিকে উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে যমুনা নদীর বানিয়াজান স্পার (বাঁধ) সংলগ্ন নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা।

লাশ উদ্ধার হওয়া জুনায়েদ জেলার শেরপুর উপজেলা সদরের টাউন কলোনি এলাকার জাহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের (আরডিএ) উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে যমুনার বানিয়াজান বাঁধে ঘুরতে এসে নদীতে গোসল করতে নামেন জুনায়েদসহ চার শিক্ষার্থী। ঠিকমতো সাঁতার না জানায় নদীর প্রবল স্রোতে চারজন ডুবে যায়। পরে ধুনট ফায়ার সার্ভিসের স্থানীয় ডুবুরিরা তল্লাশি চালিয়ে তিন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করলেও জুনায়েদ নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর সন্ধান না পেয়ে পরে রাজশাহী থেকে ডুবুরি দল ডাকা হয়। আজ দুপুরে ডুবুরি দল নদীতে তল্লাশি চালিয়ে জুনায়েদের লাশ উদ্ধার করে।

নিখোঁজের পর উদ্ধার হওয়া ওই তিন শিক্ষার্থী হলেন শেরপুর টাউন কলোনি এলাকার আবুল কালাম আজাদ ছেলে ও শেরপুর আরডিএ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নাফিজ ইকবাল (১৮), শেরপুর টাউন কলোনি এলাকার গোলাম সরোয়ারের ছেলে ও আরডিএ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শোয়াইব আহম্মেদ (১৮) এবং সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা উপজেলার হারচি গ্রামের সোলায়মান আলীর ছেলে ও রাজধানীর মিরপুরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী মো.

আবদুল্লাহ (২০)।

নিহত জুনায়েদের বন্ধু শোয়াইব আহম্মেদ বলেন, যমুনায় নদীর স্পারে (বাঁধ) বেড়াতে এসে তাঁরা চারজন বন্ধু নদীতে গোসল করতে নেমেছিলেন। নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে তাঁরা ডুবে যান। পরে তিনজনকে উদ্ধার করা হয়। মুঠোফোনে সেলফি তুলতে গিয়ে নদীতে পড়ে যাওয়ায় তথ্য সঠিক নয় বলে তিনি জানান।

ধুনট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনজুর মোরশেদ প্রথম আলোকে বলেন, যমুনা নদীতে চার বন্ধু গোসল করতে নেমে তীব্র স্রোতের কারণে নিখোঁজ হয়েছিলেন। তিনজনকে গতকালই জীবিত উদ্ধার করা হয়। জুনায়েদ নামের এক শিক্ষার্থীর সন্ধান না পাওয়ায় আজ রাজশাহী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ডাকা হয়। তারা নদীতে তল্লাশি চালিয়ে বেলা একটার দিকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যমুনা সেতুতে ঈদের ছুটির শেষ ৪৮ ঘণ্টায় ৭ কোটি টাকার টোল আদায়

ঈদের ছুটি শেষে গত দুই দিনে সড়কে কর্মস্থলগামী মানুষের চাপ বেড়ে যায় বহুগুণ। বেড়ে যায় যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন পারাপারও। বেড়েছে টোল আদায়ও। গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টায় ১ লাখ ৭৭৭টি যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৬ কোটি ৯১ লাখ ৪৯ হাজার ৪৫০ টাকা।

যমুনা সেতু টোলপ্লাজা সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ হাজার ৫৯৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩৬ হাজার ২৫০ টাকা। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৮ হাজার ২৬৬টি যানবাহন রয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার ২০০ টাকা। অপর দিকে ঢাকাগামী ৩৩ হাজার ৩২৯টি যানবাহন পার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৪ হাজার ৫০ টাকা।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের দিকে ১৮ হাজার ৩৬৫টি যানবাহন পার হয়। এতে টোল আদায় হয় ১ কোটি ৪৮ লাখ ৩৮ হাজার ৩০০ টাকা। অপর দিকে ঢাকাগামী যানবাহন ছিল ৩০ হাজার ৮১৭টি। এর বিপরীত টোল আদায় ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯০০ টাকা।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির জানান, স্বাভাবিক সময়ে ১৮ থেকে ২০ হাজার যানবাহন প্রতিদিন পারাপার হয়। এবার ঈদের ছুটির শুরুতে এবং শেষে যানবাহন পারাপার কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ