ভালোবাসা দিবসে যমুনায় গোসলে নেমে কলেজছাত্র নিখোঁজ, ২১ ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার
Published: 15th, February 2025 GMT
বগুড়ার ধুনটে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে যমুনা নদীর বাঁধে ঘুরতে গিয়ে নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হয়েছিলেন কলেজছাত্র জুনায়েদ রহমান (১৮)। নিখোঁজের ২১ ঘণ্টা পর আজ বেলা একটার দিকে উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে যমুনা নদীর বানিয়াজান স্পার (বাঁধ) সংলগ্ন নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা।
লাশ উদ্ধার হওয়া জুনায়েদ জেলার শেরপুর উপজেলা সদরের টাউন কলোনি এলাকার জাহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের (আরডিএ) উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে যমুনার বানিয়াজান বাঁধে ঘুরতে এসে নদীতে গোসল করতে নামেন জুনায়েদসহ চার শিক্ষার্থী। ঠিকমতো সাঁতার না জানায় নদীর প্রবল স্রোতে চারজন ডুবে যায়। পরে ধুনট ফায়ার সার্ভিসের স্থানীয় ডুবুরিরা তল্লাশি চালিয়ে তিন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করলেও জুনায়েদ নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর সন্ধান না পেয়ে পরে রাজশাহী থেকে ডুবুরি দল ডাকা হয়। আজ দুপুরে ডুবুরি দল নদীতে তল্লাশি চালিয়ে জুনায়েদের লাশ উদ্ধার করে।
নিখোঁজের পর উদ্ধার হওয়া ওই তিন শিক্ষার্থী হলেন শেরপুর টাউন কলোনি এলাকার আবুল কালাম আজাদ ছেলে ও শেরপুর আরডিএ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নাফিজ ইকবাল (১৮), শেরপুর টাউন কলোনি এলাকার গোলাম সরোয়ারের ছেলে ও আরডিএ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শোয়াইব আহম্মেদ (১৮) এবং সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা উপজেলার হারচি গ্রামের সোলায়মান আলীর ছেলে ও রাজধানীর মিরপুরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী মো.
নিহত জুনায়েদের বন্ধু শোয়াইব আহম্মেদ বলেন, যমুনায় নদীর স্পারে (বাঁধ) বেড়াতে এসে তাঁরা চারজন বন্ধু নদীতে গোসল করতে নেমেছিলেন। নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে তাঁরা ডুবে যান। পরে তিনজনকে উদ্ধার করা হয়। মুঠোফোনে সেলফি তুলতে গিয়ে নদীতে পড়ে যাওয়ায় তথ্য সঠিক নয় বলে তিনি জানান।
ধুনট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনজুর মোরশেদ প্রথম আলোকে বলেন, যমুনা নদীতে চার বন্ধু গোসল করতে নেমে তীব্র স্রোতের কারণে নিখোঁজ হয়েছিলেন। তিনজনকে গতকালই জীবিত উদ্ধার করা হয়। জুনায়েদ নামের এক শিক্ষার্থীর সন্ধান না পাওয়ায় আজ রাজশাহী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ডাকা হয়। তারা নদীতে তল্লাশি চালিয়ে বেলা একটার দিকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক