জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদন বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করবে বলে জানিয়েছেন দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। আজ রোববার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের পৌর লাহারকান্দি উচ্চবিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। এই দলিল বাংলাদেশ সরকারকে সংরক্ষিত করতে হবে।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানানোর জন্য পাঠ্যপুস্তকে এই প্রতিবেদন অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন জানিয়ে এ্যানি বলেন, ‘আগামী দিনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সরকারের নেতৃত্ব দেবে। তখন জাতিসংঘের এই ঐতিহাসিক দলিল আমরা (বিএনপি) পাঠ্যপুস্তকে রাখার ব্যবস্থা করব।’

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মে যে দেশপ্রেম জাগ্রত হয়েছে, তা অনুভব করার মতো। এটি আমাদের অনুপ্রাণিত করে। বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার পরও তারা পিছপা হয়নি। হেলিকপ্টার থেকে টার্গেট করে, গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষের গণ-আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরাসরি নির্দেশ দিয়ে ছাত্র-জনতাকে খুন করা হয়েছে।’

শেখ হাসিনার সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশকে ধ্বংস করার জন্য এমন কিছু বাকি নেই যা শেখ হাসিনা করেননি। কারণ, তাঁর কাছে ক্ষমতাই বড় ছিল। ক্ষমতাকে স্থায়ী করতে তিনি একের পর এক গুম-খুন করেছেন। এ্যানি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের নাম বই থেকে বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতার ঘোষক সম্পর্কে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল। প্রকৃত তথ্য জানতে দেওয়া হয়নি। পাঠ্যবইয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে এবং স্কুল সমাবেশে (অ্যাসেম্বলি) জয় বাংলা মুখস্থ করানোর চেষ্টার মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ছাত্ররা শেখ হাসিনার গুম-খুন ও অপকর্মের ফলে তাঁকে মনে রাখেনি। তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। উল্টো আন্দোলন করে ক্ষমতা শুধু নয়, দেশ থেকেই তাড়িয়েছে।

পৌর লাহারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুরাদ হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সাহাব উদ্দিন, হাসানুজ্জামান চৌধুরী; লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, বিদ্যালয়ের আজীবন সদস্য আলমগীর হোসেন প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত র জনত ব এনপ ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ