জাতিসংঘের প্রতিবেদন পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করবে বিএনপি: লক্ষ্মীপুরে এ্যানি
Published: 16th, February 2025 GMT
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদন বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করবে বলে জানিয়েছেন দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। আজ রোববার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের পৌর লাহারকান্দি উচ্চবিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। এই দলিল বাংলাদেশ সরকারকে সংরক্ষিত করতে হবে।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানানোর জন্য পাঠ্যপুস্তকে এই প্রতিবেদন অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন জানিয়ে এ্যানি বলেন, ‘আগামী দিনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সরকারের নেতৃত্ব দেবে। তখন জাতিসংঘের এই ঐতিহাসিক দলিল আমরা (বিএনপি) পাঠ্যপুস্তকে রাখার ব্যবস্থা করব।’
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মে যে দেশপ্রেম জাগ্রত হয়েছে, তা অনুভব করার মতো। এটি আমাদের অনুপ্রাণিত করে। বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার পরও তারা পিছপা হয়নি। হেলিকপ্টার থেকে টার্গেট করে, গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষের গণ-আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরাসরি নির্দেশ দিয়ে ছাত্র-জনতাকে খুন করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনার সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশকে ধ্বংস করার জন্য এমন কিছু বাকি নেই যা শেখ হাসিনা করেননি। কারণ, তাঁর কাছে ক্ষমতাই বড় ছিল। ক্ষমতাকে স্থায়ী করতে তিনি একের পর এক গুম-খুন করেছেন। এ্যানি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের নাম বই থেকে বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতার ঘোষক সম্পর্কে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল। প্রকৃত তথ্য জানতে দেওয়া হয়নি। পাঠ্যবইয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে এবং স্কুল সমাবেশে (অ্যাসেম্বলি) জয় বাংলা মুখস্থ করানোর চেষ্টার মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ছাত্ররা শেখ হাসিনার গুম-খুন ও অপকর্মের ফলে তাঁকে মনে রাখেনি। তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। উল্টো আন্দোলন করে ক্ষমতা শুধু নয়, দেশ থেকেই তাড়িয়েছে।
পৌর লাহারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুরাদ হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সাহাব উদ্দিন, হাসানুজ্জামান চৌধুরী; লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, বিদ্যালয়ের আজীবন সদস্য আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত র জনত ব এনপ ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের
গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।
মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।