শর্ত দিয়ে ভোজ্যতেল বিক্রি করলে জরিমানা
Published: 16th, February 2025 GMT
ভোজ্যতেল বিক্রিতে শর্ত জুড়ে দিলে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কাওরান বাজারের টিসিবি ভবনে পবিত্র রমজান উপলক্ষে ভোজ্যতেলের হালনাগাদ তথ্য সম্পর্কে অবহিত, মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে মতবিনিময় সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, ভোজ্যতেল বিক্রিতে শর্তজুড়ে দিলে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে। বাজারে তেলের সঙ্গে চাল, আটা ও চা পাতাসহ নানা ধরনের পণ্য কিনতে ভোক্তাদের শর্ত আরোপ করা হচ্ছে। বাজারে এসবের প্রমাণ মিলেছে কিন্তু তেল রিফাইনকারী কোম্পানিগুলো তা অস্বীকার করছে। আমরা বাজারে কোথাও এ অবস্থা দেখতে পেলে কোম্পানি ও ডিলারদের জরিমানা করব।
সভায় উপস্থিত বক্তাদের কেউ কেউ ডিলারদের বিরুদ্ধে সঠিক সময়ে পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ করলে তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে ছয়টি তেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানে তেল পরিশোধন হওয়া সত্ত্বেও বিগত তিন-চার মাস ধরে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। কারণ নির্ধারিত তারিখে পণ্য দেওয়া হয় না। ভবিষ্যতে এরকম করলে আমরা এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।’’
সভায় অধিদপ্তরের পরিচালক ফকির মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘রাজধানীর ৪টি বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে খুচরা দোকানে তেল কম। কারণ ডিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তেলের সঙ্গে অন্যান্য বিভিন্ন পণ্য কেনার শর্ত জুড়ে দেওয়ার বিষয়টির ও সত্যতা পাওয়া গেছে। পাইকারি বিক্রির ক্ষেত্রে তারা কোনো রশিদ দেখাতে পারছে না। আবার দেখা গেছে খোলা তেলের দাম বোতলজাত তেলের চেয়ে বেশি।’’
সভায় উপস্থিত নিউ মার্কেট বাজারের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের বলেন, ‘‘বাজারে ৫ লিটারের তেল নেই, বর্তমানে বাজারে কোনো কোম্পানির তেল নেই। আমরা ৫ কার্টন চাইলে আমাদের এক কার্টন দেওয়া হয়। তেল চাইলে সাথে পোলাওর চাল, আটা, লবণ, চা পাতাসহ অন্যান্য পণ্য কেনার শর্ত জুড়ে দেয় তারা। তেলের অর্ডার নিয়েও তারা এসব পণ্য দিচ্ছে।’’
টি কে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতাহার বাজারে সরবরাহ কম থাকার বিষয়ে বলেন, ‘‘বিদেশ থেকে সয়াবিন আসতে ৫০-৬০ দিন ও পাম তেল ১০-১২ দিন সময় লাগে। রমজান উপলক্ষে দুটি কোম্পানি দ্বিগুণ এলসি করেছে কিন্তু সেপ্টেম্বরের এলসি অক্টোবরের শেষদিকে করা হয়েছে এবং পণ্য ডিসেম্বরে আসার কথা থাকলেও ব্রাজিলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জাহাজ চলাচল ১৫ দিন বন্ধ থাকায় এই দেরি হয়েছে। আগামী ২৪ তারিখে বড় ধরনের চালান আসবে, আশা করি ২৬ ফেব্রুয়ারির পর তেলের সংকট হবে না।’’
সভায় অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, ভোজ্য তেল মিল মালিক, বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স এন্ড বনস্পতি ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, খুচরা ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী, কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ জ যত ল সরবর হ
এছাড়াও পড়ুন:
কাফকো সার কারখানায় গ্যাস বিক্রির চুক্তি সই
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) সার কারখানায় গ্যাস বিক্রি করতে কোম্পানিটির সঙ্গে নতুন করে চুক্তি সই করেছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। দিনে গড়ে সাড়ে পাঁচ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে সার কারখানায়। চুক্তির পর দীর্ঘ দিনের বকেয়া গ্যাস বিল পরিশোধ করেছে কাফকো।
আজ বুধবার বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) মিলনায়তনে গ্যাস বিক্রির চুক্তিটি করা হয়। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, এ চুক্তির মধ্য দিয়ে সার কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে, যা দেশের কৃষি ও শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরাসরি অবদান রাখবে।
কর্ণফুলী গ্যাসের পক্ষে কোম্পানির সচিব কবির উদ্দিন আহম্মদ এবং কাফকোর পক্ষে কোম্পানি সচিব খাজা সাইদুর রহমান চুক্তিতে সই করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান, কর্ণফুলী গ্যাসের চেয়ারম্যান এস এম মঈন উদ্দীন আহম্মেদ, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান, বিসিআইসি চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান, কর্ণফুলী গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, কাফকো ও পেট্রোবাংলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ চুক্তি কাফকোর মতো বৃহৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এবং স্থানীয়ভাবে সার উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে আমদানিনির্ভরতা কমাতেও অবদান রাখবে। এই অংশীদারত্ব বাংলাদেশের শিল্প ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চুক্তি স্বাক্ষর শেষে কাফকোর পক্ষে শিল্পসচিব মো. ওবায়দুর রহমান কর্ণফুলী গ্যাসের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এস এম মঈন উদ্দীন আহম্মেদ এর কাছে বকেয়া গ্যাস বিল বাবদ ৯২৩ কোটি ৮১ লাখ ১৮ হাজার ৬১৬ টাকা এবং ডিমান্ড চার্জ বাবদ ৩৪ কোটি ৩৭ লাখ ৩৫ হাজার ৮৪৮ টাকার দুটি চেক হস্তান্তর করেন।