পর্ষদ সভা সামনে রেখে লেনদেনের শীর্ষে রবি
Published: 16th, February 2025 GMT
বছর শেষের লাভ–লোকসানের হিসাব চূড়ান্ত করতে আগামীকাল সোমবার পরিচালনা পর্ষদের সভা করবে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিকম কোম্পানি রবি আজিয়াটা। এই পর্ষদ সভা কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে শেয়ারবাজারে রবির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের বাড়তি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
বিনিয়োগকারীদের বাড়তি এই আগ্রহে লেনদেন বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ারের। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ রোববার লেনদেনের শীর্ষে ছিল রবি আজিয়াটা। এদিন ডিএসইতে কোম্পানিটির প্রায় ২০ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়, যা ঢাকার বাজারের মোট লেনদেনের প্রায় ৫ শতাংশ।
গত সপ্তাহেও ঢাকার বাজারে লেনদেনের শীর্ষস্থানে ছিল রবি আজিয়াটা। গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের প্রতিদিনই গড়ে প্রায় ১১ কোটি টাকার সমমূল্যের শেয়ারের হাতবদল হয়েছে। ওই সপ্তাহে বাজারের প্রতিদিনের মোট লেনদেনের আড়াই শতাংশের বেশি এককভাবে রবি আজিয়াটার দখলে ছিল। আর চলতি সপ্তাহে এসে এই লেনদেন আরও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকার বাজারের মোট লেনদেনের ৫ শতাংশই এই কোম্পানির দখলে চলে এসেছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি রবি আজিয়াটা তাদের আজকের পরিচালনা পর্ষদের সভার কথা জানায়। সেখানে বলা হয়, গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। এ বৈঠক থেকে হিসাব বছর শেষে শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণারও কথা রয়েছে। এ কারণে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভাকে কেন্দ্র করে শেয়ারবাজারে লেনদেনে নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানে উঠে এসেছে কোম্পানিটি।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি পর্ষদ সভার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে গত তিন কার্যদিবসে ঢাকার বাজারে রবির প্রতিটি শেয়ারের দাম এক টাকা বা সাড়ে ৩ শতাংশ বেড়েছে। ১১ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২৮ টাকা ৭০ পয়সা। গতকাল দিন শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ টাকা ৭০ পয়সায়।
সর্বশেষ ২০২৩ সালে রবি আজিয়াটা শেয়ারধারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তাতে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে বিনিয়োগকারীরা এক টাকা লভ্যাংশ পান। ২০২৩ সালে সব মিলিয়ে কোম্পানিটি লভ্যাংশ বাবদ বিতরণ করে প্রায় ৫২৪ কোটি টাকা।
রবি আজিয়াটা ২০২০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটি সর্বোচ্চ মূলধনি কোম্পানি। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৫ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আজ য় ট
এছাড়াও পড়ুন:
আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে মাদকের একটি মামলায় আসামি সেজে আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যাওয়া এক যুবককে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। তাঁর নাম মো. রাকিব। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি মো. সুমনের হয়ে আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন রাকিব। আদালতের আদেশে ১ জুলাই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে আটক রাকিবকে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আসামিকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট নগরের আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে অভিযান চালিয়ে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে র্যাব, যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গাড়িচালক রাহাত ইসলামকে। পালিয়ে যান চালকের সহকারী (হেলপার) মো. সুমন। এ ঘটনায় র্যাব কর্মকর্তা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে রাহাত ইসলাম ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়।
আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই মধ্যে সুমনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে সুমন নিজেকে কারামুক্ত রাখতে তাঁর পরিবর্তে নোয়াখালীর রাকিবকে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় ১ জুলাই। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা শুনানি শেষে আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সুমনের হয়ে রাকিব আত্মসমর্পণের সময় তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওয়াহিদ মুরাদ।
আদালতে একজনের পরিবর্তে আরেকজন আত্মসমর্পণের বিষয়টি ধরা না পড়লেও কারাগারে গিয়ে ধরা পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) ভোটারদের আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত আছে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আঙুলের ছাপে ধরা পড়েছে অনেক বন্দীর আসল পরিচয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের জুলাই পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা ১৬ জনের আঙুলের ছাপে শনাক্ত করা হয়।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত থেকে কারাগারে আসা প্রত্যেক নতুন আসামির আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। সেখানে আসামির জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা আসল পরিচয় উঠে আসে। ইকবাল হোসেন আরও বলেন, ‘সুমনের হয়ে কারাগারে আসা রাকিব স্বীকার করেছেন তিনি মাদক মামলার প্রকৃত আসামি নন। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি সুমন সেজেছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, দ্রুত কারাগার থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে। তাই তিনি রাজি হয়েছেন। বিষয়টি চিঠি দিয়ে আদালতকে জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে ‘আয়নাবাজি’, ধরা পড়েছে আঙুলের ছাপে০৮ নভেম্বর ২০২৩কারাগার থেকে চিঠি পাওয়ার পর মামলা করার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে আসামিকে আত্মসমর্পণকারী আইনজীবী ওয়াহিদ মুরাদের কাছে কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আদালতের প্রসিকিউশন শাখার আকবর শাহ থানার জিআরও সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত রোববার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মো. রাকিব ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়। সুমন এখনো পলাতক।