বছর শেষের লাভ–লোকসানের হিসাব চূড়ান্ত করতে আগামীকাল সোমবার পরিচালনা পর্ষদের সভা করবে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিকম কোম্পানি রবি আজিয়াটা। এই পর্ষদ সভা কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে শেয়ারবাজারে রবির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের বাড়তি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

বিনিয়োগকারীদের বাড়তি এই আগ্রহে লেনদেন বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ারের। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ রোববার লেনদেনের শীর্ষে ছিল রবি আজিয়াটা। এদিন ডিএসইতে কোম্পানিটির প্রায় ২০ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়, যা ঢাকার বাজারের মোট লেনদেনের প্রায় ৫ শতাংশ।

গত সপ্তাহেও ঢাকার বাজারে লেনদেনের শীর্ষস্থানে ছিল রবি আজিয়াটা। গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের প্রতিদিনই গড়ে প্রায় ১১ কোটি টাকার সমমূল্যের শেয়ারের হাতবদল হয়েছে। ওই সপ্তাহে বাজারের প্রতিদিনের মোট লেনদেনের আড়াই শতাংশের বেশি এককভাবে রবি আজিয়াটার দখলে ছিল। আর চলতি সপ্তাহে এসে এই লেনদেন আরও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকার বাজারের মোট লেনদেনের ৫ শতাংশই এই কোম্পানির দখলে চলে এসেছে।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি রবি আজিয়াটা তাদের আজকের পরিচালনা পর্ষদের সভার কথা জানায়। সেখানে বলা হয়, গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। এ বৈঠক থেকে হিসাব বছর শেষে শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণারও কথা রয়েছে। এ কারণে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভাকে কেন্দ্র করে শেয়ারবাজারে লেনদেনে নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানে উঠে এসেছে কোম্পানিটি।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি পর্ষদ সভার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে গত তিন কার্যদিবসে ঢাকার বাজারে রবির প্রতিটি শেয়ারের দাম এক টাকা বা সাড়ে ৩ শতাংশ বেড়েছে। ১১ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২৮ টাকা ৭০ পয়সা। গতকাল দিন শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ টাকা ৭০ পয়সায়।

সর্বশেষ ২০২৩ সালে রবি আজিয়াটা শেয়ারধারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তাতে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে বিনিয়োগকারীরা এক টাকা লভ্যাংশ পান। ২০২৩ সালে সব মিলিয়ে কোম্পানিটি লভ্যাংশ বাবদ বিতরণ করে প্রায় ৫২৪ কোটি টাকা।

রবি আজিয়াটা ২০২০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটি সর্বোচ্চ মূলধনি কোম্পানি। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৫ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আজ য় ট

এছাড়াও পড়ুন:

আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ

২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন হলে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ গতকাল শুক্রবার তার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকের এ তারিখ নির্ধারণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আইএমএফের এ বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পেয়ে যাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে হতে পারে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।

এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—মূলত এ তিন কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।

আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও তা আর পাওয়া যায়নি। আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। গত বছরও তাই হয়েছে। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। মার্কিন প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেক দিন।

পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে শর্ত পরিপালন নিয়ে দর–কষাকষিতে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল মূলত মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চাইলেও করতে চাইছিল না সরকার।

সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত পর্ষদ বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আইএমএফ অর্থ ছাড় করে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাকিবের যে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তামিম
  • ‘আমি একা হয়ে গিয়েছিলাম’—তামিমের আবেগঘন স্বীকার
  • ১৫ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়ে তিন গুণ
  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা
  • শাহরুখের পারিশ্রমিক ৪২৩ কোটি টাকা!
  • অন্য বছরের চেয়ে এই জুনে ডেঙ্গু বেশি
  • ইরানকে পরমাণু জগতে ঠেলে দিয়েছে ইসরায়েলই
  • আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কিস্তির প্রস্তাব উঠছে আইএমএফ পর্ষদে
  • আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ
  • সামরিক শক্তিতে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে কে এগিয়ে