বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেছেন, ‘সংস্কার চ্যাপ্টার ক্লোজ করে দেন। নির্বাচনী চ্যাপ্টার খোলেন। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। রাজনীতিবিদদের হাতে রাজনীতিটা ছেড়ে  দেন। যারা রাজনীতিতে নেই, রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকবে না; তারা যদি সব ঠিকঠাক করে আমরা বসে বসে কি কলা খাব?’

বগুড়ার আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক জনসভায় আবদুস সালাম এ কথাগুলো বলেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের মোকাবিলাসহ বিভিন্ন দাবিতে বগুড়া জেলা বিএনপি এই জনসভার আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আবদুস সালাম। এ সময় অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘সময় নষ্ট করে ফেলেছেন। ছয় মাস সময় অতিবাহিত করেছেন। সংস্কার করবেন কি করবেন না, তা ডিসাইড করতে পারেননি। আপনার দ্বারা আর তেমন কিছু সম্ভব হবে না। মানুষের ভোটের যে অধিকার ছিনতাই হয়েছিল, সেই অধিকার ফিরিয়ে দিন। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেন। নির্বাচন কমিশন ঠিক করেন। কালো টাকার মালিক যাতে নির্বাচনে আসতে না পারে সেই ব্যবস্থা করেন।’

গত বছর ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকার পতনের পর বগুড়ায় বিএনপি বড় আকারে জনসভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম (বাদশা)।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে আবদুস সালাম আরও বলেন, ‘সংস্কার, সংস্কার করছেন। অথচ আপনি আসার আগেই আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের জন্য ৩১ দফা দিয়েছিলেন। সেটা একবারও খুলে দেখেননি। তারেক রহমানের সেই ঘোষণার মধ্যেই সব আছে। ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে এ দেশে কেউ স্বৈরাচার হতে পারবে না। বিনা ভোটে রাষ্ট্রক্ষমতায় কেউ আসতে পারবে না। পরপর দুই দফা কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন দল গঠন করার প্রতি ইঙ্গিত করে আবদুস সালাম বলেন, ‘কেউ কেউ বলেন, নির্বাচন দিলে তো বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। নির্বাচন পরে, আগে সংস্কার। এটা ষড়যন্ত্র। যারা দল করবেন লাফালাফি করছেন, দল করেন। নির্বাচনে আসেন। যাঁরা বলছেন, যেনতেন নির্বাচন চাই না;  আগে সংস্কার চাই। তাঁরা জনগণকে ভয় পান, জনগণের রায় মেনে নিতে ভয় পান, তাঁরা জনগণের বন্ধু নয়। ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। বিএনপির সঙ্গে জনগণ আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থা কয়দিন পর “ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি” হবে।’

বিএনপির নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে আবদুস সালাম বলেন, ‘আগামী দিনে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের সন্তান। তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে বগুড়াবাসীর গর্ব। বগুড়ার সাতটি আসন তারেক রহমানের। তাঁকে সাতটি আসন উপহার দেওয়ার জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’  

জনসভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ কে এম মাহবুবর রহমান ও হেলালুজ্জামান তালুকদার (লালু), বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান (চন্দন), বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ স স ল ম ত র ক রহম ন রহম ন র ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।  

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।

তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।” 

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে। 

বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়
  • ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ
  • রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত স্থগিতের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের
  • ট্রাম্প কানাডাকে ‘ভেঙে ফেলতে’ চেয়েছিলেন
  • পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
  • হামদর্দের গাজার জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তা
  • প্রশাসক নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট, ইউনিয়ন পরিষদটিতে চার মাস ধরে সব সেবা বন্ধ
  • সংসদে সংরক্ষিত আসন, না তৃণমূল রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ?
  • স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে: