অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের গুঞ্জনে বহুবার খবরের শিরোনাম হয়েছেন নির্মাতা আদনান আল রাজীব। গত কয়েক বছরে ব্যক্তিগত কারণে থেমে থেমে আলোচনায় উঠে এসেছেন এই জুটি। আগামী সপ্তাহে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা রয়েছে। আর এ খবরে সীলমোহর দিয়েছেন মেহজাবীন।

১৯৮৭ সালের ১১ মে জন্মগ্রহণ করেন আদনান আল রাজীব। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের একটি স্কুলে পড়াশোনা করেন। ২০০৩ সালে বাংলাদেশে ফিরেন রাজীব। দেশে ফেরার পর মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত ‘ব্যাচেলর’ সিনেমা দেখে মুগ্ধ হন তিনি। তখন বিজ্ঞাপন-নাটক-সিনেমা নির্মাণের বিষয়ে কোনো ধারণাই ছিল না তার। তবে কাজ করার সুযোগ খুঁজছিলেন। রাজীবের বোন ফারুকীর সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেন। কেবল তাই নয়, তার বোন এক বন্ধুর সহযোগিতায় পরিচালক ফারুকীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেন।

ফারুকীর সঙ্গে যখন রাজীব দেখা করেন, তখন সাতজন তার সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। প্রথম সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা জানিয়ে রাজীব বলেন, “ফিল্ম মেকিংয়ের ব্যাপারে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। ফারুকী ভাই বলেছিলেন, ‘এটা কোনো কেকের টুকরো নয়। ফিল্ম মেকিংয়ের জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ। সত্যি যদি কাজটি করতে চাও তবে এ ব্যাপারে তোমাকে সিরিয়াস হতে হবে।’ আমি সঙ্গে সঙ্গে ‘হ্যাঁ’ বলে দিই।”

আরো পড়ুন:

সেই নির্মাতাকে বিয়ে করছেন মেহজাবীন চৌধুরী!

মেহজাবীন-পরীমণির পর বাধার মুখে অপু

এরপর নির্মাতা হয়ে ওঠার যাত্রা শুরু হয় আদনান আল রাজীবের। জনপ্রিয় টিভি ধারাবাহিক ‘৬৯’-এ ফারুকীর সহকারী পরিচালক হিসেবে রাজীবের প্রথম কাজ। এরপর দীর্ঘ পাঁচ বছর ফারুকীর সঙ্গে আঠারমতো লেগে থেকে সরাসরি কাজ করেন। সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে রাজীব বলেন, “এটি ছিল অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এই পাঁচ বছরে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, ফিকশন প্রযোজনার জন্য পরিচালক হতে চাই, নাকি টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের জন্য।”

২০০৯ সালে আদনান আল রাজীব নির্মাণ করেন ‘উচ্চতর পদার্থ বিজ্ঞান’। এটি তার নির্মিত প্রথম নাটক। দেশ টিভিতে নাটকটি প্রচারের পর দারুণ সাড়া পান তিনি। একই বছর বিজ্ঞাপন নির্মাতা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন রাজীব। এটি ছিল ‘ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন মানি ট্রান্সফার’-এর বিজ্ঞাপন।    

আদনান আল রাজীবের পরের গল্প কেবলই সাফল্যে ভরা। তার নির্মিত উল্লেখযোগ্য বিজ্ঞাপনের তালিকায় রয়েছে— বাংলালিংক, গ্রামীণফোন, রবি, এয়ারটেল (বেশ কয়েকটি), ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি, গ্ল্যাক্সোজ ডি, প্রাণ ওয়াটার, স্যামসাং, সেন্টার ফ্রেশ, মোজো প্রভৃতি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ভারতে ছড়িয়েছে রাজীবের সুখ্যাতি। এক্সপ্রেস মানি ট্রান্সফারের বিজ্ঞাপন যেমন বানিয়েছেন, তেমনি আইসিআইসিআই ব্যাংকের বিজ্ঞাপনও তার হাতে নির্মিত হয়েছে। দেশের জন্য নির্মিত বিজ্ঞাপনে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান যেমন অভিনয় করেছেন, ভারতের বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে রোহিত তিওয়ারি, সালিনা প্রকাশের মতো তারকাদের।

বিজ্ঞাপন ও টিভি নাটক নির্মাণ পাশাপাশি করেছেন আদনান আল রাজীব। তার নির্মিত নাটকের তালিকায় রয়েছে— ‘উচ্চতর পদার্থ বিজ্ঞান’, ‘প্রশ্নবোধক’, ‘পার্শ্ববর্তী প্রেম নিবেদন’, ‘মিডল ক্লাস সেন্টিমেন্ট’, ‘বিকেল বেলার পাখি’, ‘অ্যাট এইটটিন: অল টাইম দৌড়ের উপর’ প্রভৃতি। ২০১৭ সালের ঈদে প্রচার হয় ‘বিকেল বেলার পাখি’ নাটক। এ নাটকের জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসা কুড়ান আদনান।

দেশের বড় বড় তারকাদের নিয়ে অনেক কাজ করেছেন আদনান আল রাজীব। কিন্তু সে অর্থে রাজীবের নির্দেশনায় মেহজাবীনকে দেখা যায়নি বললেই চলে! ২০২২ সালে বাংলালিংকের একটি বিজ্ঞাপন নির্মাণ করেন রাজীব। এতে মডেল হন মেহজাবীন চৌধুরী। কক্সবাজারে গিয়ে বিজ্ঞাপনটির শুটিং করেন তারা। সেই সময়ে চর্চায় উঠে আসেন এই যুগল।

আদনান আল রাজীবের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। তার প্রযোজিত সিনেমা ‘মালতী’। এ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী। এর মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তার। বিশ্বের বিভিন্ন উৎসবে পুরস্কার জয়ের পর চলতি বছরে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় সিনেমাটি।

২০১৯ সালে হাতে হাত রেখে শপিংমলে ঘুরেবেড়ানোর একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। এর আগে রাজীব-মেহজাবীনের প্রেমে নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে ফিসফাস শোনা গেলেও ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর তুমুল আলোচিত হন তারা। যদিও প্রেমের গুঞ্জনের খবর সত্য নয় বলে দাবি করেন মেহজাবীন। তবে রাজীব-মেহজাবীনের প্রেমের সূচনা কোথা থেকে তা এখনো অজানা। এই অজানা অধ্যায় আড়ালে রেখেই নতুন জীবনে পা রাখতে যাচ্ছেন এই যুগল!

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হজ ব ন চ ধ র ট ভ ন টক ম হজ ব ন চ ধ র ন ম হজ ব ন ন আদন ন কর ছ ন র জন য ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মরিচখেতে তাজা গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করলেন সেনাসদস্যরা

সুনামগঞ্জে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় এক কৃষকের মরিচখেতে একটি তাজা গ্রেনেড পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের চালবন গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান তাঁর মরিচখেতে গিয়ে মাটি খোঁড়ার সময় ওই গ্রেনেড পান। বিষয়টি জানাজানি হলে উৎসুক লোকজন সেখানে ভিড় করেন। এরপর বিষয়টি বিশ্বম্ভরপুর থানার পুলিশকে জানানো হয়।

বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মখলিছুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রেনেড সাদৃশ্য ওই বস্তু দেখতে পায়। এরপর সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় থাকা সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে ঘটনাটি জানানো হয়। আজ দুপুরে সেখান থেকে লেফটেন্যান্ট আল হোসাইনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে প্রথমে এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে সেটি নিষ্ক্রিয় করার উদ্যোগ নেন তাঁরা। নিষ্ক্রিয় করার সময় গ্রেনেডটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। চারপাশের মাটি গর্ত হয়ে যায়।

সেনা কর্মকর্তা আল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেনেডটি বিশ্বযুদ্ধ কিংবা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কোনোভাবে আসতে পারে। এটি মাটির নিচে ১০০ বছরের কমবেশি সময়ে সক্রিয় থাকে। তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসীর উচিত ছিল আগেই বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানানো। এটি বিস্ফোরিত হলে জানমালের অনেক ক্ষতি হতে পারত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পানিতে ভাসছিল ২২ দিনের শিশুর মৃতদেহ, ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা
  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • আমাদের যত ঘুঘু 
  • বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা
  • কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়
  • শ্রীলঙ্কা পৌঁছেছেন মিরাজ-শান্তরা
  • পটুয়াখালীতে সৎমা ও দাদিকে গলা কেটে হত্যা
  • মরিচখেতে তাজা গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করলেন সেনাসদস্যরা