মেহজাবীনের বিয়ে: আদনান আল রাজীবকে কতটা জানেন?
Published: 18th, February 2025 GMT
অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের গুঞ্জনে বহুবার খবরের শিরোনাম হয়েছেন নির্মাতা আদনান আল রাজীব। গত কয়েক বছরে ব্যক্তিগত কারণে থেমে থেমে আলোচনায় উঠে এসেছেন এই জুটি। আগামী সপ্তাহে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা রয়েছে। আর এ খবরে সীলমোহর দিয়েছেন মেহজাবীন।
১৯৮৭ সালের ১১ মে জন্মগ্রহণ করেন আদনান আল রাজীব। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের একটি স্কুলে পড়াশোনা করেন। ২০০৩ সালে বাংলাদেশে ফিরেন রাজীব। দেশে ফেরার পর মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত ‘ব্যাচেলর’ সিনেমা দেখে মুগ্ধ হন তিনি। তখন বিজ্ঞাপন-নাটক-সিনেমা নির্মাণের বিষয়ে কোনো ধারণাই ছিল না তার। তবে কাজ করার সুযোগ খুঁজছিলেন। রাজীবের বোন ফারুকীর সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেন। কেবল তাই নয়, তার বোন এক বন্ধুর সহযোগিতায় পরিচালক ফারুকীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেন।
ফারুকীর সঙ্গে যখন রাজীব দেখা করেন, তখন সাতজন তার সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। প্রথম সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা জানিয়ে রাজীব বলেন, “ফিল্ম মেকিংয়ের ব্যাপারে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। ফারুকী ভাই বলেছিলেন, ‘এটা কোনো কেকের টুকরো নয়। ফিল্ম মেকিংয়ের জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ। সত্যি যদি কাজটি করতে চাও তবে এ ব্যাপারে তোমাকে সিরিয়াস হতে হবে।’ আমি সঙ্গে সঙ্গে ‘হ্যাঁ’ বলে দিই।”
আরো পড়ুন:
সেই নির্মাতাকে বিয়ে করছেন মেহজাবীন চৌধুরী!
মেহজাবীন-পরীমণির পর বাধার মুখে অপু
এরপর নির্মাতা হয়ে ওঠার যাত্রা শুরু হয় আদনান আল রাজীবের। জনপ্রিয় টিভি ধারাবাহিক ‘৬৯’-এ ফারুকীর সহকারী পরিচালক হিসেবে রাজীবের প্রথম কাজ। এরপর দীর্ঘ পাঁচ বছর ফারুকীর সঙ্গে আঠারমতো লেগে থেকে সরাসরি কাজ করেন। সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে রাজীব বলেন, “এটি ছিল অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এই পাঁচ বছরে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, ফিকশন প্রযোজনার জন্য পরিচালক হতে চাই, নাকি টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের জন্য।”
২০০৯ সালে আদনান আল রাজীব নির্মাণ করেন ‘উচ্চতর পদার্থ বিজ্ঞান’। এটি তার নির্মিত প্রথম নাটক। দেশ টিভিতে নাটকটি প্রচারের পর দারুণ সাড়া পান তিনি। একই বছর বিজ্ঞাপন নির্মাতা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন রাজীব। এটি ছিল ‘ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন মানি ট্রান্সফার’-এর বিজ্ঞাপন।
আদনান আল রাজীবের পরের গল্প কেবলই সাফল্যে ভরা। তার নির্মিত উল্লেখযোগ্য বিজ্ঞাপনের তালিকায় রয়েছে— বাংলালিংক, গ্রামীণফোন, রবি, এয়ারটেল (বেশ কয়েকটি), ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি, গ্ল্যাক্সোজ ডি, প্রাণ ওয়াটার, স্যামসাং, সেন্টার ফ্রেশ, মোজো প্রভৃতি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ভারতে ছড়িয়েছে রাজীবের সুখ্যাতি। এক্সপ্রেস মানি ট্রান্সফারের বিজ্ঞাপন যেমন বানিয়েছেন, তেমনি আইসিআইসিআই ব্যাংকের বিজ্ঞাপনও তার হাতে নির্মিত হয়েছে। দেশের জন্য নির্মিত বিজ্ঞাপনে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান যেমন অভিনয় করেছেন, ভারতের বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে রোহিত তিওয়ারি, সালিনা প্রকাশের মতো তারকাদের।
বিজ্ঞাপন ও টিভি নাটক নির্মাণ পাশাপাশি করেছেন আদনান আল রাজীব। তার নির্মিত নাটকের তালিকায় রয়েছে— ‘উচ্চতর পদার্থ বিজ্ঞান’, ‘প্রশ্নবোধক’, ‘পার্শ্ববর্তী প্রেম নিবেদন’, ‘মিডল ক্লাস সেন্টিমেন্ট’, ‘বিকেল বেলার পাখি’, ‘অ্যাট এইটটিন: অল টাইম দৌড়ের উপর’ প্রভৃতি। ২০১৭ সালের ঈদে প্রচার হয় ‘বিকেল বেলার পাখি’ নাটক। এ নাটকের জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসা কুড়ান আদনান।
দেশের বড় বড় তারকাদের নিয়ে অনেক কাজ করেছেন আদনান আল রাজীব। কিন্তু সে অর্থে রাজীবের নির্দেশনায় মেহজাবীনকে দেখা যায়নি বললেই চলে! ২০২২ সালে বাংলালিংকের একটি বিজ্ঞাপন নির্মাণ করেন রাজীব। এতে মডেল হন মেহজাবীন চৌধুরী। কক্সবাজারে গিয়ে বিজ্ঞাপনটির শুটিং করেন তারা। সেই সময়ে চর্চায় উঠে আসেন এই যুগল।
আদনান আল রাজীবের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। তার প্রযোজিত সিনেমা ‘মালতী’। এ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী। এর মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তার। বিশ্বের বিভিন্ন উৎসবে পুরস্কার জয়ের পর চলতি বছরে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় সিনেমাটি।
২০১৯ সালে হাতে হাত রেখে শপিংমলে ঘুরেবেড়ানোর একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। এর আগে রাজীব-মেহজাবীনের প্রেমে নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে ফিসফাস শোনা গেলেও ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর তুমুল আলোচিত হন তারা। যদিও প্রেমের গুঞ্জনের খবর সত্য নয় বলে দাবি করেন মেহজাবীন। তবে রাজীব-মেহজাবীনের প্রেমের সূচনা কোথা থেকে তা এখনো অজানা। এই অজানা অধ্যায় আড়ালে রেখেই নতুন জীবনে পা রাখতে যাচ্ছেন এই যুগল!
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হজ ব ন চ ধ র ট ভ ন টক ম হজ ব ন চ ধ র ন ম হজ ব ন ন আদন ন কর ছ ন র জন য ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুব্রত কুমার বিশ্বাসকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় ২৬ জুলাই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গতকাল সোমবার বিকেলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
সুব্রত কুমার বিশ্বাস পাবনার ঈশ্বরদী পৌর শহরের পোস্ট অফিসপাড়ার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সান্ধ্যকালীন (ইভিনিং) স্নাতকোত্তর শ্রেণির এক ছাত্রী যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং বিয়ের আশ্বাসে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। কিন্তু পরে বিয়েতে অস্বীকৃতি জানালে ছাত্রীটি ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বিভাগের প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর ২৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি ওই বছরের ৯ অক্টোবর শিক্ষক সুব্রতকে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল বিষয়টি নিয়ে উচ্চতর তদন্ত করে। তদন্তে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এরপর তদন্ত কমিটি তাঁকে স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। এ সুপারিশের ভিত্তিতেই রিজেন্ট বোর্ড বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক সুব্রত কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম আবদুল আওয়াল প্রথম আলোকে বলেন, রিজেন্ট বোর্ডে একজন শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি আইন অনুযায়ীই হয়েছে।