রাবিতে শিক্ষক দিবস পালিত, জাতীয়করণের দাবি
Published: 18th, February 2025 GMT
নানা আয়োজনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটিকে জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন, উপাচার্য ভবন ও হলগুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ ড.
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়। এ সময় শহীদ ড. শামসুজ্জোহার কন্যা সাবিনা জোহা খান (ডালিয়া) উপস্থিত ছিলেন। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন হল, ইনস্টিটিউট, বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এর আগে, সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শহীদ ড. শামসুজ্জোহার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী জোহা স্মারক বক্তৃতাসহ নানা আয়োজন করা হয়।
বাবার কবরে ফুল দিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে ড. জোহার কন্যা সাবিনা জোহা খান সাংবাদিকদের বলেন, “পাঁচ যুগ পরেও শিক্ষার্থীরা বাবাকে ধারণ করে- এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়া-পাওয়া নেই। এটি সন্তানের জন্য গর্বের বিষয়।” দিবসটিকে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণা করার দাবিতে সবাইকে এক হয়ে আওয়াজ তোলার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, “যেখানেই অপশাসন, নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন সেখানেই ড. জোহার নাম এসেছে। গত জুলাই আন্দোলনেও রংপুরের শহীদ আবু সাইদ জোহা স্যারকে স্মরণ করেছিলেন। অথচ দিবসটি এখনও জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পায়নি।” দিবসটি জাতীয় শিক্ষক দিবস উপলক্ষে স্বীকৃতি পেতে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে দাবি জানাবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি গণঅভ্যুত্থানের এই দিনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের তৎকালীন রিডার ড. সৈয়দ মহম্মদ শামসুজ্জোহা প্রক্টরের দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলিতে নিহত হন। তাই দিনটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। তিনিই দেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য দ বসট
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়
শ্রম আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ কবে হবে, সে বিষয়ে আর সময়সীমার কথা বলছে না শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গত নভেম্বর মাসে এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এ অধ্যাদেশ হবে। মার্চ শেষে এপ্রিলও শেষ হচ্ছে আজ বুধবার।
সচিবালয়ে আজ ‘মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আইন সংশোধনীর ক্ষেত্রে সময়সীমা থাকার পক্ষে নন তিনি। শ্রমিক–মালিকদের স্বার্থ রক্ষাসহ শিগগিরই তা করা হবে। বিষয়টি এখন কোন প্রক্রিয়ায় আছে, তা বলতে রাজি হননি শ্রম উপদেষ্টা।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। তিনি আরও বলেন, ‘একসময় স্লোগান ছিল দুনিয়ার মজদুর, এক হও।’ এখন তা বদলে গেছে। এখন হবে ‘দুনিয়ার মালিক-শ্রমিক, এক হও’। এখন ভালো মালিকেরা শ্রমিকদের সন্তানের মতো মনে করেন।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ১০১টি ধারা ও উপধারা সংশোধন হবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১০ থেকে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
আইএলওর বৈঠকে যোগ দিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে যে দলটি জেনেভা সফর করে, সেখানে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হোসেন সরকার ও শ্রম উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম ছিলেন।
এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আইএলওর গভর্নিং বডির বৈঠক থেকে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন হবে। উপদেষ্টা তখন এ–ও বলেছিলেন, আগের সরকারের আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) নেতৃত্বাধীন দলকে আইএলও পর্ষদে অপদস্থ করা হয়েছিল। অথচ এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বরং প্রশংসা করা হয়েছে। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো তুলে নেওয়ার কথাও বলেছিল।
জানা গেছে, শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতির অভিযোগ এনে জাপানসহ ছয়টি দেশের পক্ষ থেকে আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলাগুলো চলমান।
আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলিয়ে দেশে ৭ কোটি ৬৫ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এদিকে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদকে (টিসিসি) শ্রমিকপক্ষ জানিয়েছে, আইন সংশোধনের সময় সব শ্রমিকের কথা মাথায় না রেখে প্রধানত পোশাক খাতের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মে দিবস আর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ–স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপরে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।
এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের দেওয়া হবে পুরস্কার।