চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ছাত্রীর মায়ের পরকীয়া প্রেমের ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ায় শিক্ষক মাসুদ হাসানকে (২৬) খুন করা হয়েছে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার হুমায়ুন কবির।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন হুমায়ুন কবির। আদালতের পুলিশ পরিদর্শক নাসির উদ্দিন মৃধা বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। গৃহবধূ শাহানাজ সুলতানার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল হুমায়ুন কবিরের। নিহত মাসুদ হাসান ছিলেন শাহানাজ সুলতানার বাড়ির গৃহশিক্ষক। তিনি বদনপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে।

পরিদর্শক নাসির উদ্দিন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, আলোচিত মামলায় গ্রেপ্তার হুমায়ুন কবির আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর আসামি শাহানাজ সুলতানার রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আজ বুধবার ওই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আদালতের নির্দেশে হুমায়ুন কবির ও শাহানাজ সুলতানাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) দামুড়হুদা মডেল থানা-পুলিশের সহযোগিতায় গতকাল দুপুরে বদনপুর গ্রাম থেকে মৃত নূর ইসলামের ছেলে হুমায়ুন কবিরকে গ্রেপ্তার ও তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিজানুর রহমানের স্ত্রী শাহানাজ সুলতানাকে গ্রেপ্তার ও খুনে ব্যবহৃত কোদাল উদ্ধার করে।

হুমায়ুন কবির অবিবাহিত এবং পেশায় কৃষক। আদালতে জবানবন্দিতে তিনি জানান, একই এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী শাহানাজ সুলতানার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। মাসুদ হাসান শাহানাজের মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতেন। তাঁদের দুজনের ঘনিষ্ঠতার খবর ও মুঠোফোনে ধারণ করা কথোপকথন সম্প্রতি শাহানাজের স্বামীর পরিবারসহ স্থানীয় লোকজনকে জানিয়ে দেন। ৫–৬ দিন আগে শাহানাজ বিষয়টি হুমায়ুনকে জানিয়ে বলেন যে, মাসুদ হাসানকে খুন না করতে পারলে তাঁর সঙ্গে কথা বন্ধ করে দেবেন। শাহানাজের চাপে হুমায়ুন গৃহশিক্ষক মাসুদ হাসানকে খুনের পরিকল্পনা করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি হুমায়ুন ও মাসুদ বদনপুর গ্রামের ঘোলার বাগান এলাকায় ভুট্টাখেতে সেচ দেওয়ার জন্য যান। দুপুর ১২টার দিকে হুমায়ুনের জমিতে সেচ দেওয়া শেষ হলে মাসুদ হাসান তাঁর জমিতে সেচ দেওয়া শুরু করেন। সেচ দেওয়া শুরু হলে ভুট্টাখেতের মধ্যে গিয়ে তা তদারকি শুরু করেন মাসুদ। পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক হুমায়ুন পেছন থেকে কোদাল দিয়ে মাসুদকে মাথায় আঘাত করেন। পরে আরও দুটি কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন এবং সেচনালার মধ্যে কোদাল রেখে বাড়িতে চলে আসেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ