মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনার ঘিরে চার স্তরের নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এর পাশাপাশি রাত আটটা থেকে শহীদ মিনারের চারপাশে এক কিলোমিটার দূরে গোয়েন্দা পুলিশের মোবাইল টিম তৎপরতা শুরু করবে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো.

সাজ্জাত আলী এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, শহীদ মিনার চত্বর এলাকায় সকাল থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এছাড়া বিকেল পাঁচটায় পুলিশ ফোর্স মোতায়েন হবে। এরপর রাত ৯টায় গোয়েন্দা পুলিশসহ অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হবে। তারা শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত এই এলাকায় দায়িত্ব পালন করবেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘দিবসকে ঘিরে প্রথম প্রহর থেকেই ভিআইপিসহ জনসমাগম হবে। এজন্য মহানগরবাসীকে অনুরোধ করব আপনারা ১২টা ৪০ মিনিটের পর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আসবেন। এ সময় মোবাইল ও মানিব্যাগসহ প্রয়োজনীয় জিনিস নিজ দায়িত্বে রাখবেন। এছাড়া কোনো ধরনের ধার্য পদার্থ ও বিস্ফোরক দ্রব্য বহন করা থেকে বিরত থাকবেন। সবাইকে শহীদ মিনারে প্রবেশের আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হবে।’

নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এখন পর্যন্ত শহীদ দিবস ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আশঙ্কা নেই। জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নাকচ করে দেন তিনি। এছাড়া যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে রয়েছে তাদের নিয়েও ডিএমপি কোনো হুমকি দেখছে না বলে জানান তিনি।  

শেখ সাজ্জাদ আলী বলেন, এখানে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কোনো ইন্টারেস্ট থাকার কথা না। তাদের অপারেশন এলাকাও না। তারপরও যারা জামিনে আছে তাদের মনিটর মনিটরিং করা হচ্ছে।

এ সময় আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শহীদ মিনারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপির পাশাপাশি র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এমপ ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা

রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত

ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত

উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”

এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।

বিবৃতিতে  বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। 

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।

ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।

ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ