বর্ণাঢ্য আয়োজনে গ্লেনরিচের ‘গ্লেনফেস্ট’ আয়োজিত
Published: 22nd, February 2025 GMT
সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে উত্তরা গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের উদ্যোগে আয়োজিত কার্নিভাল ‘গ্লেনফেস্ট’। উপভোগ্য এ আয়োজনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও দর্শনার্থীরা।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গ্লেনরিচ উত্তরা সিনিয়র ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় এ উৎসব।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, উত্তরার অধ্যক্ষ ড.
তিনি বলেন, ‘‘গ্লেনফেস্ট শুধুমাত্র একটি কার্নিভালই নয়; এ উদ্যোগ আমাদের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষের বাইরেও শেখার মানসিকতা গড়ে তোলার প্রয়াসের প্রতিফলন। সবার অংশগ্রহণে এবারের আয়োজনও দারুণভাবে শেষ হয়েছে। পাশাপাশি, ঢাকার সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজনের ক্ষেত্রে অনন্য উদাহরণ তৈরি করছে। সবার উচ্ছ্বাস ও প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ দেখে আমরা আনন্দিত। তারা সবাই এ আয়োজন উপভোগ করেছেন।’’
উৎসবে অতিথিদের জন্য ছিল আকর্ষণীয় নানা আয়োজন, যথা: রিং টস, টিন ক্যান অ্যালি, বটল নকডাউন, বল ইন এ বাকেট, আর্চারি ফান, কয়েন টস, নাগরদোলা, ঘোড়ার গাড়ি, ডল ক্যাচার, জঙ্গল জাম্পার, বাস্কেটবল শ্যুটার, মিনি ট্রেন, বাবল হাউস ও ক্যাচ দ্য স্টিক।
এ ছাড়াও, গ্লেনফেস্টে দেশীয় হস্তশিল্প, বই, কনফেকশনারি, পোশাক ও বাহারি খাবারের স্টলও ছিল। কার্নিভালে টেক অ্যাকাডেমির ব্যবস্থাপনায় রোবটিক শোর আয়োজন করা হয়, যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে রোবোটিক্স ও অ্যানিমেশন শো ছাড়াও এবং হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্যে ছিল নৃত্য, তাকি ইয়াসির নির্ঝরের সংগীত পরিবেশনা এবং মাঠের মধ্যে স্নোফ্লেক ডিসপ্লে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও দর্শনার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় এক প্রাণের আনন্দোৎসবে।
গ্লেনফেস্ট আয়োজনে টাইটেল স্পন্সর হিসেবে ছিল ইউনাইটেড হেলথকেয়ার। কো-স্পন্সর হিসেবে ছিল এক্সেলেন্স কনসালট্যান্টস, গোল্ড স্পন্সর হিসেবে আইবিডি পার্টনারশিপ গ্রুপ ও লংকাবাংলা এবং সিলভার স্পন্সর হিসেবে আয়োজনে যুক্ত ছিল প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। স্পন্সর প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন।
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গোলের উৎসবের ম্যাচে বার্সা-ইন্টারের রুদ্ধশ্বাস ড্র
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল মানেই তো উত্তেজনার চূড়ান্ত রূপ। আর মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাতালোনিয়ার মন্টজুইকে যা দেখা গেল— তা যেন শুধুই একটি ফুটবল ম্যাচ নয়, বরং ছয় গোলের অনির্দেশ্য গল্প। যেখানে বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে একসঙ্গে রচনা করল রোমাঞ্চ আর বীরত্বের এক অপূর্ব মহাকাব্য। দুইবার পিছিয়ে পড়েও অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে ৩-৩ গোলে সমতা টানল কাতালান জায়ান্টরা।
ম্যাচ শুরুই হলো যেন বজ্রপাত দিয়ে। সময়ের কাঁটায় মিনিটও পেরোয়নি। এর মধ্যেই ইন্টারের মার্কুস তুরাম এক চতুর ব্যাকহিল ফিনিশে বল ঠেলে দেন জালে। সেই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো কাতালান রক্ষণভাগ। এরপর ২১ মিনিটে কর্নার থেকে ডেনজেল ডামফ্রিসের অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে যেন বার্সার হৃদয়েই ঘা লাগে, ইন্টারের লিড তখন ২-০ গোলে।
তবে ইতিহাস বলে— বার্সেলোনার যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখনই তারা সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই ধারাতেই, ডানদিক থেকে দুরন্ত ছন্দে এগিয়ে এসে বক্সে ঢুকে বল জালে পাঠালেন কিশোর বিস্ময় লামিনে ইয়ামাল। ইন্টারের দ্বিতীয় গোলের মাত্র তিন মিনিট পর আসে এই গোল, যা এই ম্যাচে বার্সার ফেরার না বলা প্রতিশ্রুতি হয়ে উঠেছিল।
সেই ইয়ামাল পরে আরও একবার প্রায় গোল করে ফেলছিলেন। কিন্তু ভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়। বল লাগে পোস্টে। তবে কাতালান আশা তখনও নষ্ট হয়নি। ৩৮ মিনিটে ফেরান তোরেস ডানদিক থেকে আসা পাসে ওয়ান-টাইম ফিনিশে বল জড়ান জালে, ফিরিয়ে আনেন সমতা। ম্যাচ তখন যেন টানটান থ্রিলারে রূপ নেয় এবং শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে বলের দখলে ও খেলার ছন্দে এগিয়ে থাকলেও ৬৪ মিনিটে আবারও হোঁচট খায় বার্সা। কর্নার থেকে হেডে ডামফ্রিস করেন তার দ্বিতীয় গোল। ইন্টার আবারও এগিয়ে যায়। কিন্তু বার্সা মানেই তো ক্ষণিকের বিশ্রামে আবার অগ্নি হয়ে ওঠা। দ্রুতই আসে জবাব। রাফিনহার দূরপাল্লার গর্জে ওঠা শট প্রথমে লাগে পোস্টে, এরপর ফিরে এসে লেগে যায় গোলরক্ষক ইয়ান সমারের পিঠে, এরপর বল ঢুকে পড়ে জালে। ম্যাচ আবারও ৩-৩। যদিও এটি আত্মঘাতী গোল হিসেবে গণ্য হয়, কাতালানদের জন্য তা যেন নবজন্মের এক চুম্বন।
শেষ বাঁশি পর্যন্ত দুই দলই তীব্রভাবে চেষ্টা করেছে জয় ছিনিয়ে নিতে। কিন্তু ভাগ্য সেদিন ছিল ভারসাম্যপন্থী।
এখন সব অপেক্ষা দ্বিতীয় লেগের। আগামী ৬ মে মিলানের ঐতিহাসিক সান সিরো স্টেডিয়ামে লেখা হবে এই নাটকের অন্তিম অঙ্ক। এক ম্যাচ, এক ফলাফল, এক জয়ী— আর সেই জয়ীর জন্য অপেক্ষা করছে মিউনিখের আলো-আড়ম্বরের রাত। ইউরোপীয় ফুটবলের মঞ্চে চূড়ান্ত পরীক্ষার দিন।
সান সিরোর আকাশে হয়তো আবার জ্বলে উঠবে এক নতুন রূপকথার তারা।
ঢাকা/আমিনুল