Samakal:
2025-08-01@20:48:29 GMT

অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন

Published: 22nd, February 2025 GMT

অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন

এ দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব ইউনিট বিশেষত পুলিশ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত নিয়মিত বাহিনী, গোয়েন্দা দপ্তরসহ র‍্যাবের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ; তারা প্রতিনিয়ত আইনের ব্যত্যয় করছে। গত দুই দশকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে প্রায় চার হাজার নাগরিক। এর মধ্যে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে এক হাজারেরও বেশি।

ক্রসফায়ার, এনকাউন্টার, বন্দুকযুদ্ধের কথা বলে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আমরা নাগরিকরা সব সময় চেয়েছি ক্রসফায়ারে নয়, বরং আইনগত প্রতিকারে সমস্যাগুলোর সমাধান হোক। রাষ্ট্রের মদদে যখন আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নামে এসব নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, প্রকৃত অর্থে তখন রাষ্ট্রের দেউলিয়াত্ব প্রকাশ পায়। কোনো সমাজ ব্যবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য দায়মুক্তি দেওয়া চলতে পারে না। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চলতে থাকা অনিয়ম, নিষ্ঠুর আচরণে সম্পৃক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তখন বেপরোয়া হয়ে ওঠে। কার্যত বাংলাদেশে তা-ই ঘটেছে। যখন আমরা জানতে পারি একজন আসামিকে হেফাজতে রেখে আসামির স্ত্রীকে ধর্ষণ করার মতো ঘটনা ঘটেছে, তখন আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়, আমরা একটি সভ্য সমাজে বসবাস করছি! এ ধরনের আচরণ যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও অগ্রহণযোগ্য। এ ধরনের অপরাধ সংঘটনের দুঃসাহস আমাদের হতবাক করে। কাজেই উত্থাপিত অভিযোগটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করতে হবে। প্রয়োজনে অভিযোগটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের আওতায় নিয়ে ন্যায়সংগত বিচারের মুখোমুখি করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কী করে এতটা অধঃপতন হলো? তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তারা কি তাহলে রাজনৈতিক প্রচ্ছন্ন বলয়ে ঢুকে এই ধরনের জঘন্য অপরাধ করার সাহস পাচ্ছে বা পেয়েছে? এভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মবহির্ভূত আচরণ ও কর্মকাণ্ড চলতে থাকলে এ ধরনের গুরুতর অভিযোগ হয়তো উঠতেই থাকবে।
বিনা পরোয়ানায় আসামি বা সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার বা আটকের ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন ও মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ না করাটা যে অন্যায় কিংবা বলা যায় আইনের ব্যত্যয়, এই বার্তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মনে রাখতে হবে। আসামিকে না পেয়ে স্ত্রী কিংবা সন্তানদের আটক করে নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে স্বাভাবিক পদ্ধতি বলে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বলে মনে হয়। সম্প্রতি কক্সবাজার জেলায় পিতাকে আটক করতে গিয়ে না পেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলেসন্তানকে আটক করেই শুধু ক্ষান্ত হয়নি, তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলাও দেওয়া হয়েছে। যদিও হাইকোর্টে মামলা হওয়ার পরে সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে।

আমরা চাই আমাদের নিরাপত্তা। একই সঙ্গে যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন বা থাকবেন, তাদের কর্মকাণ্ড ও আচরণ যেন আইন ও বিধিসম্মত হয়। অন্যথায় আইনের শাসন ও জবাবদিহি শব্দ দুটি অকার্যকর হয়ে ওঠার সমূহ আশঙ্কা রয়ে যাবে। নির্দয়-নিষ্ঠুর আচরণের শিকার হয়ে দেশের কোনো মানুষের প্রাণহানি ঘটুক, সেটি কারও কাম্য নয়। কেননা, জীবনের অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না।
এ দেশে ক্রসফায়ারে হত্যা বন্ধ হোক চিরতরে। কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করে থানা হেফাজতে নিষ্ঠুর নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। ‘গুম’-এর মতো ঘটনা যেন এ দেশে আর কখনও ফিরে না আসে সেই অঙ্গীকার করতে হবে। বিগত দিনে কে কী করেছে তা আমরা স্পষ্টভাবে জানতে চাই। সামনের দিনে এ পরিস্থিতি যেন কোনো ক্রমেই না ঘটতে পারে সেই পথে চলতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে হবে, অন্যথায় তাদের নিয়ে যে সামাজিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা গভীর ক্ষত তৈরি করবে। 

আবু আহমেদ ফয়জুল কবির: মানবাধিকারকর্মী
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এ ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেয়ায় বিএনপি নেতা আটক

ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার নিত্যানন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপি নেতা মহিদুল ইসলামসহ ৬ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

 আজ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে তাদের আটক করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় চাল বিতরণের জন্য কার্ড প্রদানের তালিকায় নিত্যানন্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম তার পছন্দের কিছু লোকের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে বলেন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সেই অনুযায়ী কার্ড না দেয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ২০-২৫ জন অনুসারীসহ পরিষদে হাজির হন। এ সময় তিনি ইউনিয়ন পরিষদ সচিব হাফিজুর রহমানকে টেনে-হিঁচড়ে পরিষদ থেকে তুলে নিয়ে যান। একইসঙ্গে পরিষদের ভেতরে থাকা সেবাপ্রত্যাশী ও কর্মচারীদের আটকে রেখে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। সচিবকে তুলে নিয়ে শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গেলে সেনাবাহিনী ওই বিএনপি নেতাসহ ৬ জনকে আটক করে। সচিব হাফিজুর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। 

আরো পড়ুন:

রাকসু থেকে জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্বে যারা

‘নাসীরুদ্দীন আলোচনায় আসতে বিতর্কিত বক্তব্য দিচ্ছেন’

ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই ঘণ্টা পর তালা ভেঙে ভেতরে আটকে পড়াদের উদ্ধার করে। 

শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান জানান, ইউনিয়ন পরিষদের তালা দেয়ার ঘটনায় ৬ জন আটক হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।

শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভ্রা দাস বলেন, ‘‘পরিষদে তালা দিয়ে সচিবকে তুলে নিয়ে তারা উপজেলায় আসে। আমি ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। সরকারি অফিসে তালা দেয়ার অপরাধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আটক করেছে।’’
 

ঢাকা/সোহাগ/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ত্রাণ নেওয়ার কয়েক মিনিট পর হত্যা করা হয় ক্ষুধার্ত শিশুটিকে: সাবেক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা
  • থানা হোক ন্যায়বিচারের প্রথম ঠিকানা: আইজিপি
  • থানায় হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়ার আহ্বান আইজিপির
  • ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেয়ায় বিএনপি নেতা আটক
  • ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক
  • শিক্ষার গতিপথ ও উন্নয়ন নিয়ে ঢাবিতে সেমিনার
  • শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 
  • ‘আমি কী অপরাধ করেছি’— সবাই জানেন শিরোনামটা...
  • নারীদের নিয়ে বারে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আচরণ, আমিরাতের ক্ষোভে রাষ্ট্রদূতকে ফেরত নিচ্ছে ইসরায়েল
  • অফিসে প্রেম করার আগে জেনে রাখুন