মার্কিন ফেডারেল সরকারের কর্মচারীদের কাছ থেকে কাজের হিসাব চেয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তাদের কাছে একটি ই-মেইল পাঠানো হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, তারা গত সপ্তাহে কী কাজ করেছেন, সেই হিসাব আগামীকাল সোমবারের মধ্যে দিতে হবে।

ইলন মাস্ক ঘোষণা করেছেন, কেউ যদি ই-মেইলের জবাব না দেন তাহলে তিনি তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে ধরে নেওয়া হবে।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশে পাঠানো ২৯ মিলিয়ন ডলার গিয়েছিল দুই কর্মীর প্রতিষ্ঠানে: ট্রাম্প

ফের বৈঠকে বসছে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র

প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান ধনকুবের ইলন মাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দেয়ার কিছুক্ষণ পরই এই ই–মেইল পাঠানো হয়।

পোস্টে মাস্ক বলেন, “সব ফেডারেল কর্মচারী শিগগিরই একটি ই-মেইল পাবেন যেখানে তারা গত সপ্তাহে কী কাজ করেছেন তা জানতে চাওয়া হবে। সেটা জানাতে কেউ ব্যর্থ হলে তা ওই কর্মচারির পদত্যাগ হিসেবে গণ্য করা হবে।”

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে (সিপ্যাক) বক্তব্য দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই মাস্ক তার পোস্টটি করেন।

যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ। শনিবার বিকেলে ট্রাম্প ওয়াশিংটনে সিপ্যাকের বার্ষিক সম্মেলনে বলেন, “আমরা ফেডারেল কর্মীবাহিনী থেকে সমস্ত অপ্রয়োজনীয়, অযোগ্য এবং দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের সরিয়ে দিচ্ছি। আমরা সরকারকে আরো ছোট, আরো দক্ষ করতে চাই। আমরা সেরা ব্যক্তিদের রাখতে চাই এবং আমরা সবচেয়ে খারাপ ব্যক্তিদের রাখতে যাচ্ছি না।”

এরপরই ফেডারেল কর্মীদের কাছে কাজের হিসাব চেয়ে ইমেইল পাঠানোর তথ্য জানান মাস্ক। ই-মেইলে কর্মীদের পাঁচটি বুলেট পয়েন্টে তাদের গত সপ্তাহের কাজের সারসংক্ষেপ দিতে বলা হয়েছে। ই-মেইলটি অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্টের নতুন এইচআর ই-মেইল ঠিকানা থেকে এসেছে। সোমবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিট (ইস্টার্ন টাইম) পর্যন্ত ই-মেইলের জবাব দেওয়ার সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।

তবে কোনো ফেডারেল কর্মচারী মাস্কের অনুরোধে সাড়া দিতে ব্যর্থ হলে তিনি কোন আইনি-ভিত্তিতে তাকে বরখাস্ত করবেন, তা স্পষ্ট নয়। আবার যেসব কর্মচারী বিধিমোতাবেক গোপনীয় কাজের বিবরণ দিতে পারেন না, তাদের ক্ষেত্রে কী হবে, তা–ও পরিষ্কার নয়।

ফেডারেল কর্মচারীদের প্রতিনিধিত্বকারী বৃহত্তম ইউনিয়ন আমেরিকান ফেডারেশন অব গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ এই বার্তাটিকে ‘নিষ্ঠুর ও অসম্মানজনক’ বলে সমালোচনা করেছে এবং ফেডারেল কর্মচারীদের যেকোনো ‘বেআইনি ছাঁটাই’ চ্যালেঞ্জ করার অঙ্গীকার করেছে।

ইউনিয়নের সভাপতি এভারেট কেলি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আবারো ইলন মাস্ক এবং ট্রাম্প প্রশাসন ফেডারেল কর্মচারীদের এবং আমেরিকান জনগণকে তারা যে গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা প্রদান করে তার প্রতি তাদের চরম ঘৃণা প্রকাশ করেছে।”

রবিবার সকালে মাস্ক তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ লিখেছেন, “ইতিমধ্যেই প্রচুর সংখ্যক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

তিনি আরো যোগ করেছেন, “এরা হলেন সেই ব্যক্তি যাদের পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা উচিত।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ফেডারেল সরকারের ব্যয় কমানো এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য ইলন মাস্কের নেতৃত্বে নতুন দপ্তর ‘ডিওজিই’ চালু করেন ট্রাম্প।

মাস্কের এই দপ্তর বিগত সপ্তাহগুলোতে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবা (আইআরএস), পেন্টাগন এবং ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ ) এবং অন্যান্য সংস্থার হাজার হাজার সরকারি কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছে।

২০২২ সালে মাস্ক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টুইটার (যেটি এখন ‘এক্স’ নামে পরিচিত) অধিগ্রহণের পর সংস্থাটির কর্মীদের সঙ্গে যে ধরনের কঠোর আচরণ করেছিলেন, ঠিক একই আচরণ এবার দেখা গেল ফেডারেল কর্মীদের কাছে পাঠানো ই-মেইলেও।

ট্রাম্প বারবার মাস্কের সরকারী কর্মী ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন।

ট্রুথ সোশ্যালের একটি পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন, “মাস্ক ফেডারেল সরকারের আকার হ্রাস করার ক্ষেত্রে ‘দুর্দান্ত কাজ’ করছেন। কিন্তু এই প্রচেষ্টায় উনি আরো কঠোর হলে আমার ভালো লাগবে।’’

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ড র ল কর ম কর ম দ র কর ছ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে: আপ বাংলাদেশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত না হলে তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। এ সময় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির

জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর

দাবিগুলো হলো— আসন্ন জকসু নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত করতে হবে; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে; সব সংগঠনকে সমান সুযোগ দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে; অরাজনৈতিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবির প্রধান সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, “আমরা যখন জকসুর দাবিতে অনশন করছিলাম, তখন প্রশাসন ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের অনশন ভাঙিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একটি মহল নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে।”

তিনি বলেন, “ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা ও বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় ওই মাসে নির্বাচন অসম্ভব। তাই ২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচনের উপযুক্ত সময়।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা জানতে চাই, নির্বাচন পেছানোর মধ্য দিয়ে জকসু নির্বাচন ভণ্ডুল করার কোনো প্রক্রিয়া চলছে কিনা। পুরান ঢাকাকে অস্থিতিশীল করে একটি মহল নির্বাচন পণ্ড করতে চায়। শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম ভোট হবে জকসু নির্বাচন—তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ