‘ছাত্র সংগঠন যেন দলীয় রাজনীতির জায়গায় নেমে না আসে’
Published: 24th, February 2025 GMT
বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাব্যবস্থা সাময়িকভাবে একটা নাজুক অবস্থা অতিক্রম করছে। নির্বাচিত ছাত্র সংসদ দ্বারা ছাত্রদের নেতৃত্ব বিকাশে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি; তবে তা যেন দলীয় রাজনীতির প্রভাবমুক্ত হয় বলে মন্তব্য করেছেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
তিনি বলেন, ছাত্র সংগঠন যেন দলীয় রাজনীতির জায়গায় নেমে না আসে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) আশুলিয়ার নলামে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ সমাবর্তন ও গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক বলয় তৈরি, পারস্পারিক সহনশীলতার অভাব, লেজুরবৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি, অপসংস্কৃতি, অপতৎপরতায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নির্বাচিত ছাত্র সংসদ দ্বারা ছাত্রদের নেতৃত্ব বিকাশের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। ছাত্রদের ভেতরে উন্নত চেতনা জাগ্রত এবং তাদের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গলের ও সুশৃঙ্খলতার জন্য ছাত্র সংগঠন প্রয়োজন। কিন্তু সেটা যেন দলীয় রাজনীতির জায়গায় নেমে না আসে।’’
এ সময় উপদেষ্টা গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি জাফরুল্লার স্মৃতিচারণ করেন।
দীর্ঘ এক দশক পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হলো। সর্বশেষ ২০১৪ সালে ৩য় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বিগত ১১ বছরে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েট হয়েছেন ৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।
সমাবর্তনের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) পিএইচডি সদস্য প্রফেসর মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণ বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ওয়ালিউল ইসলাম, ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা.
ঢাকা/সাব্বির/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শত বছর পেরিয়ে ‘শান্তির মিষ্টি’
বহু বছর আগে ইছামতী নদীর তীরে গড়ে ওঠে বান্দুরা বাজার। ব্রিটিশ আমলেই এটি ব্যবসাসমৃদ্ধ ‘গঞ্জ’ হিসেবে পরিচিতি পায়। সেখানেই নন্দ কুমার ঘোষ প্রতিষ্ঠা করেন ‘বিক্রমপুর অনন্তদেব মিষ্টান্ন ভান্ডার’। পরে নাম বদলে হয় ‘শান্তি মিষ্টান্ন ভান্ডার’। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ঘোষ পরিবার ধরে রেখেছে এ ব্যবসা। এলাকার মানুষের কাছে একনামে পরিচিত ‘শান্তির মিষ্টি’ হিসেবে।
সম্প্রতি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ঐতিহ্যবাহী দোকানটির কর্মীরা বেশ কর্মব্যস্ত। লাকড়ির চুলায় তৈরি হচ্ছে রসগোল্লা। পাশে দুধ জ্বাল দিচ্ছেন কারিগরেরা। দোকানের ক্যাশে বসে আছেন প্রবীণ সহদেব ঘোষ, হাসিমুখে ক্রেতাদের সামলাচ্ছেন। তাঁর দোকান-বাসা একই ছাদের নিচে।
প্রায় ৭০ বছর আগে সহদেব ঘোষ তাঁর বাবা মোহন লাল ঘোষের হাত ধরে এ ব্যবসায় নামেন। এখন বয়স ৯০ বছর। এ বয়সেও দোকানের দেখভাল করেন। সহদেব ঘোষ বললেন, এই ব্যবসাই তাঁর জীবনের অবলম্বন। তাঁর সন্তানেরা ইউরোপ-আমেরিকায় থাকলেও ছোট ছেলে সুধীর ঘোষ তাঁর সঙ্গেই থেকে দোকান চালান। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে চান তাঁরা।
কারিগর সিদ্দিকুর রহমান ১২ বছর ধরে কাজ করছেন এখানে। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু খাঁটি দুধের ছানা ব্যবহার করি। কোনো পানি বা ভেজালের সুযোগ নেই।’ দোকানের বিক্রয়কর্মী শ্যামল বলেন, ‘প্রতিদিন এত ক্রেতা আসে যে সামলানোই মুশকিল। তবে এই ভিড়েই আনন্দ লাগে!’
সহদেব ঘোষের ছোট ভাই মধু ঘোষ জানান, তাঁদের পরিবার প্রায় ১৩০ বছর ধরে এ ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছে। নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত পুরো বান্দুরা বাজারে একটাই মিষ্টির দোকান ছিল—এই শান্তি মিষ্টান্ন ভান্ডার। এখন প্রতিদিন ২০০-৩০০ কেজি মিষ্টি বিক্রি হয়, মৌসুমভেদে তা বাড়ে বা কমে। অনেকে ফোনে অর্ডারও দেন। তাঁদের দোকানে মিষ্টির দাম শুরু ২৮০ টাকা থেকে। সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা দামের মিষ্টি পাওয়া যায়। দেড় টাকা কেজি দরে মিষ্টি বিক্রি করে দোকানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে জানান মধু ঘোষ।
স্থানীয়দের ভাষ্য, ব্রিটিশ আমলে বান্দুরা ছিল নদীবন্দর ও ধানের আড়তের জন্য খ্যাত। খ্রিষ্টানপল্লির কারণে ব্যবসাও জমজমাট ছিল। সেই সময় থেকে শান্তি মিষ্টান্ন ভান্ডার স্থানীয়দের আস্থা অর্জন করে।
রসগোল্লা, মালাইচপ, চমচম, দই, রসমালাইসহ নানা ধরনের মিষ্টি পাওয়া যায় এই দোকানে