জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ইন্টারনেট সেবার ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে হামলা ও মারধরে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের পাকুরদাড়িয়া গ্রামের মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সাতজনকে গতকাল রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজমুল হায়দার জানান, আহত ব্যক্তিদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিলকপুর বাজারে তিলকপুর নেটওর্য়াক নামে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট থেকে লাইন নিয়ে পাকুরদাড়িয়া গ্রামে গ্রাহকদের সংযোগ দিয়েছিলেন ওই গ্রামের সাদ্দাম হোসেন। সম্প্রতি তিলকপুর নেটওয়ার্কের মালিক বেলাল হোসেন ও সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব বাধে। এ ঘটনার পর সাদ্দাম হোসেন রাজশাহীর একটি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের লাইনের সংযোগ নেন। আক্কেলপুর উপজেলায় ওই ব্রডব্যান্ডের সংযোগের অনুমতি ছিল না। তিলকপুর নেটওয়ার্কের মালিক ঘটনাটি জানতে পারেন। তিনি সাদ্দাম হোসেনকে বাদ দিয়ে নিজের লোকজন দিয়ে পাকুরদাড়িয়া গ্রামে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার জন্য তার টানছিলেন। গতকাল দুপুরে তার টানার সময় বেলাল হোসেনের লোকজনকে বাধা দেন সাদ্দাম হোসেন।

ওই ঘটনার পর গতকাল বিকেলে বেলাল হোসেন চন্দরদীঘি বাজারে এসে সাদ্দামের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে বেলাল হোসেনের ওপর চড়াও হন সাদ্দাম। খবর পেয়ে বেলালের লোকজন ৮ থেকে ১০টি মোটরসাইকেল নিয়ে সন্ধ্যায় চন্দনদীঘি বাজারে আসেন। তাঁরা সাদ্দাম হোসেন ও তাঁর সহযোগীদের খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তাঁদের না পেয়ে পাকুরদাড়িয়া গ্রামের তিন মাথা মোড়ে যান তাঁরা। সেখানে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা, মারধর ও দোকান ভাঙচুর করেন। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে সাতজনকে রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে আনা হয়।

ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন রায়কালী ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা রাজু আহাম্মেদ। তিনি বলেন, ‘আমি মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পাকুরদাড়িয়া মোড়ে কাজ করছিলাম। আমার সামনে মোড়ের একটি দোকানে কয়েকজন ক্যারম খেলছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে তিলকপুর বাজারের ১৫ থেকে ২০ জন ব্যক্তি এসে হামলা চালিয়ে দোকান ভাঙচুর করেন। আমরা এগিয়ে গেলে তাঁরা আমাদের মারধর করেন।’

তিলকপুর নেটওয়ার্কের মালিক বেলালের চাচাতো ভাই সাব্বির হোসেন বলেন, ‘আমরা চন্দনদীঘি বাজারে বৈঠক শেষ করার পর সাদ্দাম হোসেন আমার চাচাতো ভাই বেলাল হোসেনকে মারতে উদ্যত হন। এ ঘটনার পর আমরা সন্ধ্যায় চন্দনদীঘি বাজারে এসেছিলাম। সেখান থেকে তিলকপুর ফেরার পথে পাকুরদাড়িয়া গ্রামের মোড়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়। এতে তিলকপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি বিশাল, তিলকপুর নেটওয়ার্কের মালিক বেলাল হোসেনসহ পাঁচজন আহত হন।’

আক্কেলপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) স্বপন কুমার বলেন, ইন্টারনেট ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ বন দ ব র ল কজন ম রধর ব যবস উপজ ল গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

চারঘাটের নন্দনগাছীতে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে রেলপথ অবরোধ

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির (স্টপেজ) দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এতে নেতৃত্ব দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ।

এ সময় আন্দোলনকারীরা স্টেশন সংস্কার ও আন্তনগর ট্রেন থামানোর দাবি-সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন তুলে ধরেন। বেলা একটার দিকে কর্মসূচি শেষ হলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। দাবির মধ্যে ছিল সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং স্টেশনের সংস্কার।

১৯২৯ সালে উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনটি স্থাপিত হয় নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর এলাকায়, যা নন্দনগাছী স্টেশন নামে পরিচিত। শতবর্ষী স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। নিয়ম অনুযায়ী এই স্টেশনে স্টেশনমাস্টার, টিকিট মাস্টার, পোর্টারম্যান, পয়েন্টসম্যান, গেটম্যানসহ জনবল ছিল ১২ জন। বর্তমানে শুধু পোর্টারম্যান পদে একজন কর্মরত আছেন। শুধু দুটি লোকাল ট্রেন সেখানে থামে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অবরোধে অংশ নেওয়া লোকজন ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে ট্রেন থামানোর দাবিতে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী থেকে ঈশ্বরদীগামী একটি মেইল ট্রেন এলে স্টেশনে প্রবেশের আগেই জাতীয় পতাকা ও লাল পতাকা নিয়ে ট্রেনটি থামিয়ে দেন আন্দোলনকারী। তাঁরা ট্রেনের চালকের রুমে গিয়ে ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নেন। তাঁরা কেউ রেললাইনে, কেউ ট্রেনের ছাদে উঠে আবার কেউ প্ল্যাটফর্মে অবস্থান নেন। প্রায় ১০-১২ মিনিট পর ট্রেনটিকে যেতে দেওয়া হয়।

এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আসে চিলাহাটি থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর ট্রেন বরেন্দ্র এক্সপ্রেস। নন্দনগাছী রেলস্টেশনে ট্রেনটির নির্ধারিত যাত্রাবিরতি নেই। তবে দাবি আদায়ের জন্য রেললাইনে সাধারণ লোকজন অবস্থান নেওয়ায় ট্রেন দুটি সেখানে থামতে বাধ্য হয়। প্রায় ১৫ মিনিট ট্রেনটিকে আটকে থাকার পর আবু সাইদ চাঁদের সহযোগিতায় ট্রেনটি সেখান থেকে রাজশাহীর দিকে রওনা হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ