মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিমের কাছে দলের চাওয়া ছিল ভালো পারফরম্যান্স। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন দু’জনই। ব্যাটিং ব্যর্থতা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে তাদের দলে থাকা। গতকাল তো ঢাকার ক্রিকেটপাড়ার আলোচনার বিষয়ই ছিল মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের অবসর।
সংগঠকদের অনেকে বলাবলি করছিলেন, রাওয়ালপিন্ডিতে আজ প্রি-ম্যাচ সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেবেন দুই ভাইরা ভাই। যদিও বিসিবির কাছে এ রকম কোনো বার্তা নেই। মাহমুদউল্লাহ বা মুশফিক বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের কাছে নিজেদের পরিকল্পনা জানাননি।
জাতীয় দলের ম্যানেজমেন্টকেও নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলেননি দুই সিনিয়র ক্রিকেটার। সেদিক থেকে ধরে নিতে পারেন– মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের অবসর ঘোষণার আলোচনা ক্রিকেটানুরাগীদের চাওয়া।
বৈশ্বিক ক্রিকেটে মাহমুদউল্লাহ ভালোই খেলেন। ২০১৫ ও ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি আছে তাঁর। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে তোলায় বড় ভূমিকা রেখেছেন। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলে রান করতে পারেননি। শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে রান পেলে মাহমুদউল্লাহর পক্ষে বলার লোকের অভাব হবে না। যদিও বয়স বিবেচনায় মিডল অর্ডার এ ব্যাটারকে জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রাখতে চায় না বিসিবি।
মাহমুদউল্লার মতো মুশফিকের ওয়ানডে ক্যারিয়ারও শেষ দেখছেন অনেকে। জাতীয় দলের এ দুই সিনিয়র ক্রিকেটারের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, ‘টুর্নামেন্ট চলাকালে তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইনি। তারাও কিছু বলেনি। বাইরের আলোচনা থেকে তো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না। তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে দেশে ফিরুক। সময় সুযোগ বুঝে কথা বলা যাবে। নির্বাচক প্যানেল, কোচিং প্যানেল এবং যাদের নিয়ে কথা হচ্ছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে বাকি সিদ্ধান্ত। মে-জুনে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হবে। তার আগে কথা বলার সুযোগ আছে।’
চলমান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষে জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেল বিশ্বকাপকেন্দ্রিক পরিকল্পনা হাতে নিতে চায়। ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের দল গোছানোর কাজে হাত দিতে চায় পরবর্তী দ্বিপক্ষীয় সিরিজ থেকে। একজন নির্বাচকের মতে, ‘কোনো সন্দেহ নেই, ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা হবে। কোন কোন পজিশনে খেলোয়াড় নিতে হবে, সেটা নিয়ে কাজ শুরু হয়ে গেছে। ব্যাটিং, বোলিং প্রতিটি পজিশনে একাধিক বিকল্প খোঁজা হচ্ছে। সবাই যাতে পারফরম্যান্স করার চাপ ফিল করে, সে পরিবেশ তৈরি করা না গেলে ভালো করা কঠিন।’
মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকরা ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার কথা চিন্তাও করেন না। এ দুই ব্যাটারই ভালো করে জানেন, আইসিসির শেষ টুর্নামেন্ট খেলছেন তারা। সরব না নীরবে অবসর ঘোষণা করবেন, সে সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে।
জাতীয় দল-সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, ‘তারা ভালো খেলতে না পেরে চুপ হয়ে আছে। অবসর নিয়ে কোনো কিছু বলছে না। নীরবেই হয়তো ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা। সেটা না করলে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।’
মাশরাফি বিন মুর্তজাও জাতীয় দল থেকে অবসর নেননি। সে তুলনায় মাহমুদউল্লাহ বিসিবিকে স্বস্তি দিয়েছেন টেস্ট ও টি২০ ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে। হতে পারে দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এ বছর জুলাই-আগস্টের সিরিজে বিদায় বলে দেবেন। এ কারণেই হয়তো বিশেষ ব্যবস্থায় মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকের জন্য বিদায়ী সিরিজ আয়োজন করা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় দল
এছাড়াও পড়ুন:
২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করলো বিএসইসি
গত ৫ মার্চ চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে হেনস্তা করার অভিযোগে নিজ সংস্থার ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে এ ঘটনায় দুইজন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিএসইসির জরুরি কমিশন সভায় এ কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। আজ বুধবার সকালে কাজে যোগ দেওয়ার পর সাময়িক দরখাস্তের আদেশ হাতে পেয়েছেন তারা।
বিএসইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সাময়িক বরখাস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন, সহকারী পরিচালক আবদুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।
মামলার আসামিদের বাইরে আরো যে ৬ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তারা হলেন- পরিচালক আবুল হাসান, পরিচালক ফখরুল ইসলাম মজুমদার, অতিরিক্ত পরিচালক মিরাজ উস সুন্নাহ, উপ-পরিচালক নানু ভূঁইয়া, সরকারি পরিচালক আমিনুর রহমান খান এবং সহকারী পরিচালক তরিকুল ইসলাম।
যে দুই কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে, তারা হলেন- মাকসুদা মিলা, সহকারী পরিচালক (রেজিস্ট্রেশন) এবং কাউসার পাশা বৃষ্টি, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা।
বরখাস্তের আদেশে হিসেবে গত ৫ মার্চ শেয়ারবাজার তদন্ত কমিটির চারটি প্রতিবেদনের বিষয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় বৈঠককালে কমিশনের অনুমতি ছাড়াই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জোরপূর্বক প্রবেশ করে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের হেনস্তা এবং ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
সাময়িক বরখাস্ত মিরাজ উস সুন্নাহর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক কমিশন সভায় ঢুকে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অভিযোগ আনা হলেও ওই সভায় চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনায় আগেই (গত ৬ মার্চ) ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি করেছিলেন। এ মামলায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে জামিনে আছেন তারা।
মামলার ১৬ আসামির মধ্যে নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে এরই মধ্যে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। আরেকজন নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার আবেদন করেছেন।
ওই মামলার আসামিদের বাইরে আরো ছয়জনকে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ এনে বরখাস্ত করা হয়েছে।