প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম এবং ভাস্কর নভেরা আহমেদকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে দুটি ডকুফিল্ম। অনন্যা রুমা নির্মিত তথ্যচিত্র দুটোর নাম হলো— ‘মনির: টেল অব টু কান্ট্রিস’ ও ‘নভেরা’।
নভেরা আহমেদকে নিয়ে ‘নভেরা’ তথ্যচিত্র প্যারিসে নির্মিত হয়েছে। নভেরা আহমেদ এবং তার স্বামী গ্রেগয়ার দ্য ব্রুনসের সাক্ষাৎকার, নভেরা আহমেদের জীবনের শেষ সময়ের দৃশ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে এটি।
চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে দুই যুগ ধরে কাজ করছেন অনন্যা রুমা। ক্যারিয়ারের দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কাজটি সম্পন্ন করেন। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টায় ধানমন্ডিস্থ আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে প্রদর্শনী হবে এটি। এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চিত্রসমালোচক মঈনুদ্দিন খালেদ, আলোচিত্র শিল্পী নাসির আলী মামুন, খ ম হারুণ, অভিনেতা কেরামত মওলা, ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান, চিত্রশিল্পী আইভি জামান, শহীদ কবির। আগত অতিথিরা ফিল্মের নানা দিক নিয়ে কথা বলবেন।
আরো পড়ুন:
সুচিত্রা সেনের অজানা কথা নিয়ে ‘সূর্যতপা সুচিত্রা’
বরেণ্য অভিনেতা মুরালি গ্রেপ্তার
শিল্পী মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশের জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস চাঁদপুর জেলায়। চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম ঢাকা চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা শেষে চারুকলায় শিক্ষকতা শুরু করেন ১৯৬৬ সালে। ১৯৬৯ সালে স্পেন সরকারের বৃত্তি নিয়ে সেদেশে পাড়ি জমান উচ্চ শিক্ষার জন্য। এরপর থেকে স্পেনেই স্থায়ী হন। স্পেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তার বহু একক ও যৌথ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া স্পেন ও মিশরের বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চারুকলা প্রদর্শনীতে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৯৭ সালে স্পেনের রাষ্ট্রীয় পদক পান মনিরুল ইসলাম। ২০১০ সালে তিনি ভূষিত হন স্পেনের মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা ‘দ্য ক্রস অব দি অফিসার অব দি অর্ডার অব কুইন ইসাবেলা’য়। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননার পাশাপাশি তিনি ১৯৯৯ সালে একুশে পদক, শিল্পকলা একাডেমি পদকসহ বিভিন্ন পদক ও সম্মাননা অর্জন করেন।
অন্যদিকে, নভেরা আহমেদ ছিলেন একজন বাংলাদেশি ভাস্কর। শহীদ মিনারের নকশাকার তিনি। ১৯৩৯ সালের ২৯ মার্চ বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন নভেরা। বাংলাদেশের আধুনিক ভাস্কর্যশিল্পের অন্যতম অগ্রদূত এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথম বাংলাদেশি আধুনিক ভাস্কর তিনি। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদক প্রদান করে। তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত প্যারিসে বসবাস করেন।
১৯৪৭ সালে কলকাতা থেকে কুমিল্লায় চলে আসেন নভেরা। কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হন। পিতার অবসরগ্রহণের পর তাদের পরিবার আদি নিবাস চট্টগ্রামে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এরপর চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন তিনি। পরবর্তীতে আইন শিক্ষার জন্য তাকে লন্ডনে পাঠানো হয় ১৯৫০ সালে। ১৯৫১ সালে ভর্তি হন ক্যাম্বারওয়েল স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফটসে ন্যাশনাল ডিপ্লোমা ইন ডিজাইনের মডেলিং ও স্কাল্পচার কোর্সে। সেখানে পাঁচ বছর মেয়াদের ডিপ্লোমা কোর্স করার পর ১৯৫৫ সালে ইতালির ফ্লোরেন্স ও ভেনিসে ভাস্কর্য বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ শুরু করেন।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ভ স কর গ রহণ আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচ নেওয়ার সময় কিংবা ছক্কা ঠেকাতে গিয়ে অনেক সময় শরীরের ভারসাম্য থাকে না। ফিল্ডাররা তাই বাধ্য হয়েই একটি কৌশল অবলম্বন করেন।
বলটি ওপরে ছুড়ে দিয়ে সীমানা পেরিয়ে যান। বাউন্ডারি সীমানার বাইরে থাকতেই লাফ দিয়ে বলটি হাতের ধাক্কায় আবারও ওপরে ছুড়ে দিয়ে সীমানার ভেতরে ফেরত পাঠান এবং তারপর ক্যাচটি নেন কিংবা ছক্কা বাঁচান। এই কাজ করতে গিয়ে কেউ কেউ বাউন্ডারি সীমানার বাইরে একাধিকবার শূন্যে লাফিয়েও বল হাত দিয়ে স্পর্শ করেন।
ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) নতুন নিয়ম অনুযায়ী এভাবে ক্যাচ নেওয়া কিংবা ছক্কা বাঁচানো আর বৈধ থাকছে না।
আরও পড়ুনস্বপ্ন পূরণ হতে ৬৯ রান দরকার, এবার কি পারবে ‘চিরকালের চোকার’ দক্ষিণ আফ্রিকা১০ ঘণ্টা আগেইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষ দিকে নতুন এ নিয়ম কার্যকরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে। আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনে নিয়মটি সংযুক্ত হবে চলতি মাসেই। এরপর এমসিসির বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত হবে আগামী বছরের অক্টোবরে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একজন ফিল্ডার বাউন্ডারি সীমানার বাইরে লাফিয়ে শুধু একবারই বল স্পর্শ করতে পারবেন। এরপর সীমানার ভেতরে ঢুকে তাঁকে ক্যাচ নিতে হবে। ২০২৩ সালে বিগ ব্যাশে সিডনি সিক্সার্সের জর্ডান সিল্কের ক্যাচ বাউন্ডারি সীমানার বাইরে (লাফিয়ে) দ্বিতীয়বার স্পর্শ করে সীমানার ভেতরে ফেরত পাঠান ব্রিসবেন হিটের মাইকেল নেসের। শূন্যে লাফিয়ে বলটি দ্বিতীয়বার স্পর্শ করে তিনি সীমানার বাইরেই পা রাখেন এবং দৌড়ে ভেতরে ঢুকে ক্যাচটি নেন। এমসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী এমন ক্যাচ আর আইনসিদ্ধ হবে না।
নেসের সেই ক্যাচ নেওয়ার পর ম্যাচ শেষে বলেছিলেন, ২০২০ বিগ ব্যাশে ম্যাথু ওয়েডের ক্যাচ অনেকটা এভাবেই নিয়েছিলেন ম্যাট রেনশ—যেখান থেকে তিনি ওভাবে ক্যাচটি নেওয়ার প্রেরণা পান। সে সময় দুটি ক্যাচের বৈধতা নিয়েই বিতর্ক হয়েছিল। তখন অনেকেই বলেছিলেন, বাউন্ডারি সীমানার ক্যাচের নিয়ম পাল্টানো হোক, যেটা সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ২০১০ সালে।
আরও পড়ুনম্যাক্সওয়েল, ক্লাসেন, পুরান—জাতীয় দল ছাড়তেই ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের অধিনায়ক১২ ঘণ্টা আগেচলতি বছরের শুরুতে ক্যাচ নেওয়ার প্রশ্নবিদ্ধ এই নিয়ম পুনরায় যাচাইয়ের জন্য এমসিসি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিল আইসিসির ক্রিকেট কমিটি। এরপর দুই পক্ষই এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে এবার সেটি হালনাগাদ করল। এ বিষয়ে এমসিসির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা প্রতিটি সদস্যদেশের বোর্ডের কাছে পাঠিয়েছে আইসিসি। সেখানে বলা হয়েছে, বর্তমান নিয়মের অধীন ‘অসাধারণ’ ফিল্ডিং দেখা গেলেও সেটা ‘অস্বাভাবিক কিছু ক্যাচেরও জন্ম দিয়েছে, যা সিংহভাগ ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টদের চোখে অবৈধ’।
নেসেরের ক্যাচের উদাহরণ টেনে এমসিসি বলেছে, ব্রিসবেন হিটের এই ফিল্ডার সীমানার ‘ভেতরে’ ক্যাচটি নেওয়া সম্পন্ন করার আগে ‘বানি হপড’ (ছোট্ট লাফ) করেছেন। ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘এমসিসি নতুন আইন করেছে, যেখানে সীমানার বাইরে “বানি হপড” পুরোপুরি নির্মূল করা হয়েছে। তবে এসব ক্যাচে ফিল্ডার সীমানার ভেতরে থেকে বল শূন্যে ছুড়ে দিয়ে বাইরে পা রাখার পর ক্যাচটি ধরতে ডাইভ দিয়ে ফিরতে পারবেন। আমাদের সমাধান হলো, সীমানার বাইরে চলে যাওয়া ফিল্ডারকে শূন্যে থাকতে একবারই বল স্পর্শ করতে দেওয়ার সীমারেখা বেঁধে দেওয়া এবং তারপর ডেলিভারিটির বাকি সময় সম্পন্ন করতে সীমানার ভেতরে থাকতে হবে।’
রিলে অর্থাৎ একাধিক ফিল্ডার মিলে ক্যাচের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে। বাউন্ডারি সীমানার বাইরে বল স্পর্শ করা ফিল্ডারকে সীমানার ভেতরে ফিরতে হবে তাঁর সতীর্থ ক্যাচ নিলেও।
১৭ জুন শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মধ্যকার গল টেস্ট দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র। এই ম্যাচের সঙ্গে আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনও হালনাগাদ করা হবে। নতুন এই নিয়ম কার্যকর হবে আগামী বছরের অক্টোবর থেকে।