ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের ছোট্ট গ্রাম বীরহুলিতে আমার বাড়ি। ছোটবেলায় খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। খেলাধুলার ব্যাপারে বাধা না দিলেও খেলাকে পেশা হিসেবে নেওয়ার ব্যাপারে বাড়িতে আপত্তি ছিল। তাই স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর পর মাথা থেকে খেলার ভূত নামাতে হয়। কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়জীবনেও আর খেলার মাঠে ফেরা হয়নি। তবে খেলোয়াড় না হতে পারার আক্ষেপ সব সময়ই আমাকে পোড়াত।

২০০৮ সালের দিকে আমার সঙ্গী হয় সাইকেল। ভ্রমণ বরাবরই পছন্দ, তাই সাইকেল নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতাম। পাহাড়-পর্বতে ট্রেকিংয়েও যেতাম। বেড়ানোর পাশাপাশি আমরা কয়েকজন আবার সাইকেল র‍্যালি, দল বেঁধে ট্রেকিংয়ের আয়োজন করতাম। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের শুরুর দিকে ঢাকায় উইমেন্স ম্যারাথনের আয়োজন করলাম। অনেকটা কৌতূহলবশেই প্রতিযোগী হিসেবে নিজেও নাম লেখালাম। শেষ মুহূর্তে সংশয়, অনেক দিন ধরে খেলাধুলার মধ্যে নেই, এত দূর দৌড়াতে পারব তো। ম্যারাথনে আর অংশ নেওয়া হলো না। তবে অগ্রগতি কিছুটা হলো, একই বছরের ডিসেম্বরে দিনাজপুরে হাফ ম্যারাথনে প্রথমবার এত লম্বা দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিলাম। মাত্র আড়াই ঘণ্টায় দৌড় শেষ করে মনে হলো—আরে দৌড়ানো তো বেশ সহজ!

আরও পড়ুনবুয়েটে প্রথম তোফায়েল বললেন, সময়ের দিকে তাকাইনি২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫দেশ–বিদেশের ম্যারাথনে অংশ নেন সিফাত ফাহমিদা নওশিন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ