একসময়ের জনপ্রিয় যোগাযোগমাধ্যম স্কাইপে বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। আগামী ৫ মে ২০২৫ থেকে স্কাইপে আর ব্যবহার করা যাবে না। প্রতিষ্ঠানটি তাদের নতুন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মাইক্রোসফট টিমসকে মূল যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সামনে আনতে চায়।
এক ব্লগ পোস্টে মাইক্রোসফট জানিয়েছে, ‘ব্যবহারকারীদের আরও আধুনিক ও কার্যকর যোগাযোগের অভিজ্ঞতা দিতে স্কাইপে বন্ধ করে টিমসকে পুরোপুরি অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’ আগামী তিন মাসের মধ্যে ধাপে ধাপে স্কাইপে ব্যবহারকারীদের টিমসে স্থানান্তর করা হবে। মাইক্রোসফট জানায়, স্কাইপে বন্ধ হয়ে গেলেও ব্যবহারকারীরা তাঁদের আগের সব সুবিধা টিমসের মাধ্যমেই পাবেন। স্থানান্তরের প্রক্রিয়া সহজ করতে স্কাইপের বর্তমান ব্যবহারকারীরা তাঁদের অ্যাকাউন্টের তথ্য দিয়েই মাইক্রোসফট টিমসে বিনা খরচে লগইন করতে পারবেন। এতে আগের মতোই ব্যক্তিগত ও গ্রুপ কল, বার্তা আদান-প্রদান, ফাইল শেয়ারিংসহ অন্যান্য সুবিধা পাওয়া যাবে।
মাইক্রোসফটের ভাষ্য, ‘টিমসে লগইন করলেই স্কাইপের আগের সব চ্যাট ও কন্ট্যাক্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থানান্তর হয়ে যাবে। ফলে ব্যবহারকারীরা আগের মতোই নিরবচ্ছিন্নভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যেতে পারবেন।’ স্কাইপে বন্ধ হওয়ার আগে ব্যবহারকারীদের সামনে দুটি বিকল্প রাখা হয়েছে। প্রথমত, স্কাইপের বর্তমান অ্যাকাউন্টের তথ্য ব্যবহার করে টিমসে লগইন করলেই আগের চ্যাট ও কন্ট্যাক্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে। ফলে ব্যবহারকারীরা ঠিক আগের মতোই তাঁদের যোগাযোগ চালিয়ে যেতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, যাঁরা টিমসে যেতে চান না, তাঁরা চাইলে স্কাইপের বার্তা, কন্ট্যাক্ট ও কলের হিস্ট্রির সব তথ্য ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করতে পারবেন।
এ ছাড়া ৫ মে পর্যন্ত স্কাইপে ও টিমস একই সঙ্গে ব্যবহার করা যাবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে টিমস অ্যাপ ডাউনলোড করে স্কাইপের অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করলেই আগের সব চ্যাট ও কন্ট্যাক্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেয়ে যাবেন।
মাইক্রোসফট নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য স্কাইপে ক্রেডিট ও কলিং সাবস্ক্রিপশন সেবা বন্ধ করে দিচ্ছে। তবে যাঁরা আগে থেকেই এসব সেবা ব্যবহার করছেন, তাঁরা পরবর্তী মেয়াদ শুরুর আগপর্যন্ত এসব সেবা ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া ৫ মের পরও স্কাইপের পেইড ব্যবহারকারীরা স্কাইপে ওয়েব পোর্টাল বা মাইক্রোসফট টিমসের মাধ্যমে ‘স্কাইপে ডায়াল প্যাড’ ব্যবহার করতে পারবেন।
মাইক্রোসফটের ভাষ্য, স্কাইপে বন্ধ হলেও টিমস ব্যবহারকারীদের আরও আধুনিক ও উন্নত যোগাযোগের অভিজ্ঞতা দেবে। টিমসের বহুমুখী ফিচার স্কাইপের তুলনায় বেশি কার্যকর হবে।
বিশ্বব্যাপী কয়েক কোটি মানুষ দুই দশক ধরে স্কাইপে ব্যবহার করে আসছেন। তবে গত কয়েক বছরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় স্কাইপে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে।
সূত্র: ইন্ডিয়াটুডে ডটইন
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
কম্পিউটার থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস ও ভিডিও কল করা যাবে
কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ওয়েবে যুক্ত হতে যাচ্ছে ভয়েস ও ভিডিও কলের সুবিধা। মেটা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এই সুবিধা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে উইন্ডোজ ও ম্যাকওএস–এর হোয়াটসঅ্যাপ ওয়েব সংস্করণে। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ডব্লিউ আ বেটা ইনফো–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন এই সুবিধা চালু হলে কম্পিউটারের ওয়েব সংস্করণ থেকেই সরাসরি ভয়েস ও ভিডিও কল করা যাবে।
ব্যবহারকারীরা স্মার্টফোনে লগইন না করেও ব্যক্তিগত বা গ্রুপ কল করতে পারবেন। এর ফলে মুঠোফোন থেকে নির্ভরতা কমবে, আর ডেস্কটপে কাজ করার সময়ও হোয়াটসঅ্যাপ কল গ্রহণ বা শুরু করা যাবে অনায়াসে। হোয়াটসঅ্যাপ ওয়েবে সরাসরি অ্যাকাউন্টে লগইন করার সুযোগ না থাকলেও এটি মূলত ‘কম্প্যানিয়ন ডিভাইস’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। একজন ব্যবহারকারী সর্বোচ্চ চারটি যন্ত্রকে মূল অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন। এর মধ্যে স্মার্টফোন, ডেস্কটপ অ্যাপ কিংবা ওয়েব সংস্করণ থাকতে পারে। এত দিন ওয়েব সংস্করণ ব্যবহার করে শুধু বার্তা আদান-প্রদান করা গেলেও এবার যোগ হতে যাচ্ছে ভয়েস ও ভিডিও কলের সুবিধা।
নতুন এই সুবিধাটি এখনো পরীক্ষাধীন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এটি ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হতে পারে। কল সুবিধাটি চালু হলে হোয়াটসঅ্যাপের ওয়েবের ওপরের দিকে ডান পাশে থাকা কল আইকন থেকে ভয়েস বা ভিডিও কল শুরু করা যাবে। ব্যবহারকারীরা ইনকামিং কলও গ্রহণ করতে পারবেন, ফলে ডেস্কটপ ব্যবহার করেই হোয়াটসঅ্যাপ কল ব্যবস্থাপনা করা আরও সহজ হবে।
সুবিধাটি শুধু উইন্ডোজ ও ম্যাকওএসের ডেস্কটপ অ্যাপেই আপাতত পরীক্ষাধীন রয়েছে। নতুন কলিং সুবিধার পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপে বার্তার প্রতিক্রিয়া জানানোর নতুন একটি সুবিধাও যুক্ত হচ্ছে। এতে ইমোজির পাশাপাশি স্টিকার ব্যবহার করেও বার্তার জবাব দেওয়া যাবে। মেটা বলছে, এ সুবিধা এখনো উন্নয়ন পর্যায়ে রয়েছে এবং খুব শিগগিরই চালু করা হতে পারে।
এ ছাড়া সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে ‘অ্যাডভান্সড চ্যাট প্রাইভেসি’ নামের একটি নিরাপত্তা–সুবিধা যুক্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া চ্যাট এক্সপোর্ট করা বা মিডিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে যন্ত্রে সংরক্ষিত হওয়া বন্ধ রাখা যাবে। এর ফলে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য ও সংবেদনশীল কনটেন্ট আরও সুরক্ষিত থাকবে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস