বগুড়া সদরের সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হকের বিরুদ্ধে অধিদপ্তরের আওতাধীন যুবক-যুবতীদের নামে বরাদ্দ ঋণের টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। একাধিকবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তদন্ত কমিটি সত্যতাও পায়। তবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বহাল রয়েছেন এনামুল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এনামুল জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা দেওয়ান মো.

রায়হানুল হকের কাছে ঋণ ছাড়ে একাধিকবার অনুরোধ করেন। এ জন্য তিনি পাঁচবিবির ঢাকারপাড়া গ্রামের মনিরা চৌধুরী মেমিকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তাঁর নামে দুই বছর আগে দুই লাখ টাকা ঋণ নেন। টাকা নেওয়ার পর আর কিস্তি দেননি মেমি। এমনকি ঠিকানাতেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। রায়হানুল যোগাযোগ করলে এনামুল বলেন, মেমির সঙ্গে তাঁর বনিবনা নেই। ফলে ঋণ পরিশোধে তিনি কোনো সহায়তা করতে পারবেন না।
এ ঘটনায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি জয়পুরহাট জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতিয়ার রহমান সহায়তা চেয়ে বগুড়া জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালককে চিঠি দেন। চিঠিতে প্রতারণার জন্য এনামুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও ঋণের টাকা আদায়ে অনুরোধ জানানো হয়।
এনামুল কাহালুতে চাকরি করাকালে উপজেলার দুর্গাপুরের নূহুর আলী নামে এক ব্যবসায়ী ঋণের জন্য আবেদন করেন। তাঁকে ঋণ দেওয়ার জন্য মর্টগেজ হিসেবে একটি জমির মূল দলিল নেন তিনি। পরে এটি দিয়ে আব্দুল মজিদের নামে ২০ হাজার টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন এনামুল।

নূহুর আলী বলেন, ‘আমার দলিলে অন্যজনের নামে ঋণ নেওয়া হলো। অথচ আমি জানতেও পারলাম না। কয়েক বছর ঘুরেও দলিল ফেরত পাচ্ছি না।’
জানা যায়, নূহুর আলীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক এ এইচ এম এনামুল হকের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি হয়। কমিটি গত বছর ২৭ অক্টোবর প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এনামুল হক প্রতারণার মাধ্যমে একজনের দলিল দিয়ে আরেকজনের নামে ঋণের টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন।
ঋণ ছাড়ে ঘুষ, জালিয়াতি ছাড়াও এনামুলের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে বগুড়ার শাজাহানপুরে কর্মরত অবস্থায় ভাড়া বাসায় নারী নিয়ে ফুর্তি করার সময় ধরা পড়েন। পরে এনামুলকে সুনামগঞ্জের ছাতকে বদলি করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পর রাজনৈতিক তদবিরে আবারও বগুড়া সদরে আসেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, এনামুল আগে আওয়ামী লীগের কয়েক নেতার ছত্রছায়ায় ছিলেন। এখন ভোল পাল্টে ভর করেছেন বিএনপির নেতাদের ঘাড়ে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না যুব অধিদপ্তর।

অভিযোগের বিষয়ে এনামুল হক বলেন, ‘আমি সব টাকা পরিশোধ করেছি। সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। রাজনীতির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বগুড়ার উপপরিচালক তোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘এনামুল হকের বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে উল্টো আমার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক অভিযোগ করা হয়। এরপরও এনামুলের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঋণ র জন ত ল হক র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

নরসিংদীতে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে কলেজছাত্র নিহত

নরসিংদীর রায়পুরায় তিতাস কমিউটার ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে মো. রওনক (১৭) নামের এক কলেজশিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রায়পুরার পলাশতলী ইউনিয়নের আশারামপুর এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ।

নিহত মো. রওনক রায়পুরা সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। সে উপজেলার পলাশতলী ইউনিয়নের পলাশতলী গ্রামের মইনুল হোসেনের ছেলে।

রেলওয়ে পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত ব্যক্তির স্বজন সূত্র জানায়, মুঠোফোনের ব্যাটারি মেরামত করতে গতকাল দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নরসিংদী শহরের উদ্দেশে রওনা হয় রওনক। বেলা সাড়ে তিনটায় মেথিকান্দা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকাগামী তিতাস কমিউটারের ছাদে চেপে বসে। যাত্রাবিরতি শেষে ট্রেনটি আবার যাত্রা শুরুর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যায় রওনক। রেললাইনের পাথরে আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে তাঁর লাশ রেললাইন থেকে সরিয়ে আনে ও ঘটনাটি নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে জানান। খবর পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. জহুরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। এরই মধ্যে তাঁর স্বজনেরা ঘটনাস্থলে এসে লাশ শনাক্ত করেন।

নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ঢাকাগামী তিতাস কমিউটার ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় স্কুলছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, যুবক গ্রেপ্তার
  • নরসিংদীতে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে কলেজছাত্র নিহত
  • ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে হামলা: সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়