গোল হয়েছে কি না বুঝতে ৮ মিনিট ধরে ভিএআর চেক, কেন এত সময়
Published: 2nd, March 2025 GMT
৮ মিনিটে কত কিছু ঘটে যায়! ফুটবল মাঠে যেখানে কয়েক সেকেন্ডেই বদলে যায় ম্যাচের ভাগ্য, সেখানে ৮ মিনিট তো বহু দূরের বিষয়।
গতকাল এফএ কাপে বোর্নমাউথ ও উলভারহ্যাম্পটন ম্যাচে একটি গোল যাচাই করতে লেগে গেছে এমন ৮ মিনিট, যা ইংলিশ ফুটবলে সর্বোচ্চ সময় লাগার রেকর্ড। দর্শকদের তো বিরক্ত হওয়াই স্বাভাবিক। বিরক্ত হয়ে অনেকেই কাল মাঠে বসেই স্লোগান তুলেছিলেন, ‘লজ্জাজনক, এ আর ফুটবল নয়।’ প্রযুক্তিনির্ভর ফুটবলে কেন একটি গোল যাচাই করতে ৮ মিনিট লেগে গেল?
মজার ব্যাপার হলো, এফএ কাপে কালই প্রথমবার আধা স্বয়ংক্রিয় অফসাইড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্দেশ্যই ছিল সিদ্ধান্ত জানানোর প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুততর করা। সেটা করতে গিয়েই হয়ে গেছে দেরিতে সিদ্ধান্ত দেওয়ার রেকর্ড!
ঘটনাটি ঘটে মূলত ম্যাচের ৩৫ মিনিটে। ১-০ গোলে এগিয়ে থাকা বোর্নমাউথ তখন মিলোস কেরকেজের গোলে আরও একবার এগিয়ে যায়। রেফারি স্যাম ব্যারট গোলের স্বীকৃতিও দেন। এরপরই নাটকের শুরু।
তাঁরা বলেছিলেন এই প্রযুক্তি চলতি মৌসুমের প্রথম বা দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বিরতির সময় চালু করা হবে। কিন্তু স্পষ্টতই কিছু একটা ঠিকঠাক কাজ করেনি।বোর্নমাউথ কোচ আন্দোনি ইরাওলাদুই ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি টিমোথি উড ও ড্যারেন ইংল্যান্ড কেরকেজের সম্ভাব্য হ্যান্ডবলের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। বল কেরকেজের হাতে লাগলেও উড ও ইংল্যান্ড জানান, কেরকেজের হাতে বল লেগেছে অনিচ্ছাকৃতভাবে।
এরপর বোর্নমাউথের আরেক ফুটবলার ডিন হুইসেনের হ্যান্ডবল হয়েছে কি না, সেটিও যাচাই করা হয়। কিন্তু তাঁরও হ্যান্ডবল হয়নি। এরপর যাচাই করা হয় হুইসেন অফসাইডে ছিলেন কি না। সেখানেই বাঁধে বিপত্তি।
প্রযুক্তিরও যে সীমাবদ্ধতা আছে, সেটি আরও একবার বোঝা গেছে তখন। অবশ্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন আগেই সতর্ক করেছিল, গোলমুখে অতিরিক্ত ভিড় থাকলে সূক্ষ্ম অফসাইডের সিদ্ধান্ত দেওয়া নতুন এই প্রযুক্তির জন্য কঠিন হতে পারে। তখন ভিএআরকে আগের পদ্ধতিতে ফিরতে হবে।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিতেছে বোর্নমাউথ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক