প্রয়োজনীয় জনবল সংকটে রাউজানের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। উপজেলার ১৮১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শতাধিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার ৭টি পদও শূন্য। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ৬ জন কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র একজন।
এদিকে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাউজানের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নকাজ থমকে গেছে। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর মনোনীত ঠিকাদাররা পালিয়ে যাওয়ায় অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে থাকা কাজের মধ্যে রয়েছে ৩৪টি বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, ৪০টি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন ও বর্ধিত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণকাজ। 
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয় চলছে দু’জন-তিনজন শিক্ষক দিয়ে। সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার বৃক্ষভানুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৩ জন। সেখানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৭৩ জন। পাঁচটি ক্লাস সামলাতে হিমশিম তিন শিক্ষক। হলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে পাঠদান করছেন মাত্র চারজন শিক্ষক। এ বিদ্যালয়ে ৮ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও বাকিগুলো খালি। গর্জনীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে ৩ জন শিক্ষক দিয়ে। ডাবুয়া হিঙ্গলা ফজলুর কবির চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৪০ জন। এই বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষক থাকলেও, প্রধান শিক্ষক নেই। ৮ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন শিবু প্রসাদ দাশ।
জানা যায়, সরকারি উন্নয়ন বরাদ্দে যেসব বিদ্যালয়ে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছিল, সেটাও অনেকটা স্থবির। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কাজ ফেলে পালিয়েছেন প্রায় ঠিকাদার।  স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাউজানের প্রায় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পেতেন সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর মনোনীত ঠিকাদার। অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে থাকা কাজের মধ্যে রয়েছে ৩৪টি বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, ৪০টি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন ও বর্ধিত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণকাজ। প্রকৌশল বিভাগের লোকজন বলেছেন মূল ঠিকাদার কাজ না করে কমিশনের চুক্তিতে কাজ করতে দিয়েছে উপ-ঠিকাদারকে। অনভিজ্ঞ ঠিকাদার হওয়ায় অনেকে ঠিক সময়ে কাজে হাত দিতে পারেনি। 
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম সমকালকে বলেন, ‘অসমাপ্ত অবস্থায় থাকা কিছু উন্নয়ন কাজ ঠিকাদারের সঙ্গে বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিকল্প পন্থায় করা হচ্ছে। কিছু কাজ করা যাচ্ছে না স্থানীয়দের মধ্যে কোন্দল ও ভূমি সংক্রান্ত জটিলতায়।’
রাউজানে শূন্য পদ নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা স্বীকার করে সদ্য অবসরে যাওয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল কুদ্দুস সমকালকে বলেন, ‘চলমান সংকটের মধ্যে চলতি বছর আরও অনেক শিক্ষককের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তারা চলে যাবেন অবসরে। নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ায় সংকট আরও বাড়তে পারে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সেজনি: অবসর ভেঙে ফিরে বার্সার হয়ে ইতিহাস লিখছেন যিনি

২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতের কথা। ভিয়ারিয়ালের মাঠে ভিয়ারিয়ালকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে লিগে টানা ষষ্ঠ জয় আদায় করে নেয় বার্সেলোনা। কিন্তু জিতেও যেন স্বস্তি ছিল না বার্সা শিবিরে। হাঁটুতে মারাত্মক চোট পেয়ে যে স্ট্রেচারের করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে শূন্যে লাফিয়ে বল ধরার পর পড়ে গিয়ে ডান হাঁটুতে এই চোট পান জার্মান গোলরক্ষক।

সে সময়েই বোঝা যাচ্ছিল, খারাপ কোনো খবর পেতে যাচ্ছে বার্সেলোনা। হয়েছেও তাই। জানা যায়, গুরুতর এই চোটে মৌসুম শেষ হয়ে গেছে টের স্টেগেনের। দলের প্রধান গোলরক্ষককে হারিয়ে বার্সার তখন পাগলপ্রায় দশা।

ইনিয়াকি পেনিয়া দ্বিতীয় গোলরক্ষক হিসেবে থাকলেও মৌসুমজুড়ে তাঁর ওপর আস্থা রাখা কঠিনই ছিল। আর কোনো কারণে যদি তাঁকেও হারাতে হয়, তখন কী হবে! সব মিলিয়ে বার্সার আরেকজন গোলরক্ষককে দলে টানা জরুরি হয়ে দাঁড়ায়।

কিন্তু লা লিগার দলবদলের দুয়ার তখন বন্ধ হওয়ায় বিকল্প পথের সন্ধান করতে হয় বার্সাকে। এর মধ্যে একটা পথ পেয়েও যায় তারা। স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) বিশেষ শর্ত মেনে গোলরক্ষক ভেড়ানোর সুযোগ পায় কাতালান ক্লাবটি। শর্তটি হচ্ছে চোটাক্রান্ত খেলোয়াড়টিকে চার মাসের বেশি সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে যেতে হবে।

আরও পড়ুনআলিসন ও সেজনি: মানব থেকে অতিমানব০৬ মার্চ ২০২৫

পাশাপাশি যে খেলোয়াড়টি তারা নেবে, তাঁকে ফ্রি এজেন্ট হতে হবে এবং দলবদল শেষ হওয়ার আগেই আগের ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি শেষ করতে হবে। এ ছাড়া নতুন যে গোলরক্ষককে তারা কিনবে, তাঁকে আহত গোলরক্ষকের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন দেওয়ার অনুমতি পাবে ক্লাবটি। যেমন বার্সায় টের স্টেগেন বেতন পান বছরে ৯০ লাখ ইউরো। এখন নতুন গোলরক্ষকের বেতন হতে পারবে বছরে সর্বোচ্চ ৭০ লাখ ইউরো।

এত শর্ত মেনে খেলোয়াড় খুঁজে বের করা সহজ ব্যাপার ছিল না। কিন্তু এই কঠিন শর্তই বার্সাকে পৌঁছে দেয় ভয়চেক সেজনির কাছে। যিনি এক মাস আগে অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট জুভেন্টাসের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে চুক্তি ছিন্ন করে হয়ে যান ফ্রি এজেন্ট।  

দলের সঙ্গে ট্রফি হাতে সেজনির উদ্‌যাপন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩ কর্মকর্তার অবসর ও বরখাস্তের আদেশ আদালতে বহাল
  • ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করলো বিএসইসি
  • বাবার মরদেহ দুই বছর লুকিয়ে রাখেন সন্তান
  • সেজনি: অবসর ভেঙে ফিরে বার্সার হয়ে ইতিহাস লিখছেন যিনি