দিনভর তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ এবং অননুমোদিত লোডের বিনিময়ে সংগ্রহ করা হয় ঘুষের টাকা। এরপর সেই টাকা ভাগাভাগি হয় সরকারি দপ্তরে বসেই। সবাই সবার অংশ বুঝে নেন। যেই কক্ষে টাকার ভাগভাটোয়ারা হয়, তার অন্য পাশেই প্রধান কর্মকর্তার কক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, অফিসের প্রধান কর্মকর্তা বা ব্যবস্থাপক মশিউর রহমানের যোগসাজশে দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন নিম্নপদস্থ কর্মকর্তারা। তিতাস গ্যাসের নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা আঞ্চলিক বিক্রয় অফিসে এমন কয়েকজন কর্মকর্তার টাকা ভাগাভাগির কয়েকটি ভিডিও এসেছে  হাতে। ভিডিওতে টাকা ভাগাভাগিতে যাদের দেখা গেছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন সহকারী কারিগরি কর্মকর্তা মো.

হারুন শেখ, সিনিয়র প্রকর্মী (জোনাল) ইসমাইল প্রধান, পিসি অপারেটর মো. হাসান ইমাম, সাহায্যকারী মো. সামছুদ্দিন ও সিনিয়র গাড়িচালক মো. সোলায়মান।

দেশের গ্রাহকদের উন্নত সেবা, প্রাকৃতিক গ্যাসের দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ ও গ্যাস বিপণনে সুশাসন নিশ্চিতকরণে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় এবং পেট্রোবাংলার অধীনে তিতাস গ্যাস তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই সংস্থা ও তার কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নিজেরা আর্থিক সুবিধা নিয়ে গ্যাস চুরি তথা অবৈধ সংযোগ এবং অননুমোদিত লোড দিয়ে রাষ্ট্রীয় বিপুল আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ বহু পুরোনো। এবার ফতুল্লার আঞ্চলিক বিক্রয় অফিসে কয়েকজন কর্মচারীর টাকা ভাগাভাগির এমন দৃশ্য জ্বালানি খাতে সুশাসন প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

জানা গেছে, প্রতিদিনই ফিল্ড থেকে অবৈধ টাকা সংগ্রহ করে তা সংস্থাটির সহকারী কারিগরি কর্মকর্তা মো. হারুন শেখের কক্ষে বসে ভাগভাটোয়ারা করা হয়।  হাতে আসা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সহকারী কারিগরি কর্মকর্তা মো. হারুন শেখ তার নিজ কক্ষে বসে আছেন। আশপাশে দাঁড়িয়ে আছেন অন্য সবাই। সেখানে পিসি অপারেটর মো. হাসান ইমাম ১ হাজার টাকার কতগুলো নোট প্রথমে গণনা করেন। এরপর ছোট একটি স্লিপে সবার নাম লিখে লিখে টাকা দিচ্ছেন। বাকিরা হাসান ইমামের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজেরাও গুনে নিচ্ছেন। এ সময় একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘৫টা বেজে গেছে, তাড়াতাড়ি কর।’ আরও কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, লাল রঙের টিশার্ট পরিহিত সিনিয়র গাড়িচালক মো. সোলায়মান সবাইকে টাকা ভাগভাটোয়ারা করে দিচ্ছেন।

জানতে চাইলে মো. সোলায়মান  বলেন, ‘আমার মায়ের চিকিৎসার জন্য আমার কলিগ হারুন শেখের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিছিলাম। সেটা তাকে ফেরত দেওয়ার সময় কেউ একজন ছবি তুলেছে।’ পিসি অপারেটর মো. হাসান ইমামকে একাধিকবার ফোন দিলেও পাওয়া যায়নি।

সহকারী কারিগরি কর্মকর্তা মো. হারুন শেখ  বলেন, ‘আমি আপনাকে কোনো কথা বলব না। এ ঘটনার পরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি যা বলার কমিটির কাছে বলব।’

বক্তব্য জানতে তিতাস গ্যাসের ফতুল্লার আঞ্চলিক বিক্রয় অফিসের ব্যবস্থাপক মশিউর রহমানকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি। এ ঘটনার পরপরই ওই পাঁচজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ কর মকর ত সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার

আট বছর ধরে গাড়ি চালানোর পেশায় আছেন মো. শাহীন। প্রথমে চালাতেন ট্রাক, এখন যাত্রীবাহী বাস। তবে এটা তার মূল কারবারের আড়াল মাত্র। বাস চালানোর আড়ালে তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আনেন ইয়াবার বড় চালান। প্রতি চালানে ১০–২০ হাজার পিস ইয়াবা থাকে। এগুলো পৌঁছানোর বিনিময়ে তিনি পান মোটা অঙ্কের টাকা। প্রতি মাসে গড়ে ছয়টি চালান এনে তিনি অন্তত ছয় লাখ টাকা পান। ফলে লাভজনক এ কারবারে তিনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছেন।

সম্প্রতি রাজধানীর পূর্ব রামপুরা এলাকা থেকে বাসচালক শাহীন ও সুপারভাইজার সঞ্জিত রাজবংশীকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। ওই সময় বাসটিতে তল্লাশি চালিয়ে ১৫ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এই চালানটি ঢাকার গাবতলী এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে।

ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ জানান, আন্তঃজেলা বাসের চালক–হেলপারদের একটি অংশ মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে বিভিন্ন রুটের পরিবহনকর্মীদের মাদকসংশ্লিষ্টতার তথ্য পেতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজার থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস পূর্ব রামপুরার মোল্লা টাওয়ারের সামনে থামানো হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে চালক ও সুপারভাইজার স্বীকার করেন, তাদের কাছে মাদকদ্রব্য আছে। এরপর তাদের দেখানো অনুযায়ী চালকের আসনের নিচ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন ডিএনসি ধানমন্ডি সার্কেলের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, শাহীনের ভাষ্য অনুযায়ী, দুই বছর ধরে তিনি বাসে মাদক পরিবহনের কাজ করেন। এর আগে ট্রাক চালানোর সময় অন্য চালকদের মাধ্যমে এ কারবারের বিষয়ে জানতে পারেন। পরে টেকনাফের মাদক কারবারিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ও সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি প্রতি ১০ হাজার পিস ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আনুমানিক এক লাখ টাকা করে পান। এবারের চালানের জন্য পেতেন দেড় লাখের কিছু বেশি। তবে পৌঁছানোর আগেই তিনি ও তার সহযোগী ধরা পড়েন।

অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইয়াবার চালানের প্রেরক ও প্রাপকসহ আরও কয়েকজনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে পুরো চক্রটিকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • সোনাপুর-নোবিপ্রবি সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণে অংশীজন সভা
  • ‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
  • পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
  • মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে ৩ মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা
  • শ্রমজীবী মানুষের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ: শ্রম উপদেষ্টা
  • ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে