ইবির উপাচার্যের সঙ্গে সমন্বয়কদের মতবিনিময়
Published: 3rd, March 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কবৃন্দ।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসানের পরিবর্তে মেধার ভিত্তিতে নতুন কাউকে নিয়োগের দাবি করেন সমন্বয়করা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখার সমন্বয়ক এসএম সুইট, সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, তানভীর মন্ডল, গোলাম রব্বানী, সাজ্জাতুল্লাহ শেখসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমন্বয়করা বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে আসছে। কিন্তু আমরা দেখছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনেক জায়গায় এখনো আওয়ামীলীগ বা তার ফ্যাসিস্টরা বসে আছে। এ ব্যাপারে আমরা সোচ্চার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে ফ্যাসিস্টরা কোনোভাবেই জায়গা পাবে না।
তারা আরো বলেন, আমরা আজ একটা দাবি নিয়ে এসেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অন্যতম স্টেক হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। কিন্তু সেটাও ফ্যাসিস্টদের দখলে। উপাচার্য স্যার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে নতুন একজন রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়া হবে। অলরেডি তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। আমরা চাই একজন সৎ যোগ্য ব্যক্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল কাজগুলো পরিচালিত হোক।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, এর আগে আমরা শুনেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রেজিস্ট্রার নিজে কোনো ড্রাফট তৈরি করতে পারে না, ইংরেজিতে কথা বললে তিনি সেটা বুঝতে পারে না। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হলে এসব পদের পরিবর্তন আনতে হবে।
ইবির প্রধান সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখতে পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাসিবাদের যারা দোসর ছিল, বর্তমান প্রশাসন এখনো তাদের পুরোপুরি ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছে, তারা খুব দ্রুতই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বলেছি, আমাদের যে বিভিন্ন ফাঁকা পোস্ট আছে, সেখানে সৎ ও যোগ্য ব্যাক্তি নিয়োগ দেওয়া হোক। অবশ্যই নিয়োগগুলো মেধার ভিত্তিতে হওয়া উচিত। উপাচার্য আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। অতীতে যারা দুর্নীতি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারেও আশ্বস্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে।”
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে যদি তাদের কোন দাবি নিয়ে আসে আর সেটি যদি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মতান্ত্রিক হয়, তাহলে অবশ্যই সে ব্যাপারে আমরা বিবেচনা করব। আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরবর্তী বাংলাদেশ সৃষ্টিতে অবদান রাখা অন্যান্য ছাত্র সংগঠনও আছে, আমি সব ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে কথা বলি।”
তিনি বলেন, “যেহেতু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন ধারার একটি নব উত্থিত আন্দোলনকারী দল এবং তারা এ বাংলাদেশের পরিবর্তন সাধন করেছে। সেহেতু আমরা অবশ্যই তাদের মূল্যায়ন করব।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ