দেশে প্রথম জিকা ভাইরাসের গুচ্ছ সংক্রমণ শনাক্ত
Published: 4th, March 2025 GMT
দেশে প্রথমবারের মতো জিকা ভাইরাসে ক্লাস্টার (গুচ্ছ) সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। অর্থাৎ এক স্থানে একাধিক ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসটির অস্তিত্ব মিলেছে। গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)-এর ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্যানুযায়ী, একই এলাকার পাঁচ ব্যক্তি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এলাকাটির নাম প্রকাশ করেনি সংস্থাটি। এক দশক আগে বাংলাদেশে প্রথম জিকা ভাইরাস শনাক্তের পর এবার গুচ্ছ সংক্রমণের দেখা মিলল।
ক্লাস্টার সংক্রমণের বিষয়ে আইসিডিডিআর,বি বলছে, গবেষকরা ২০২৩ সালে ঢাকার রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে আসা জ্বরে আক্রান্ত ১৫২ রোগীর নমুনা পিসিআরভিত্তিক পরীক্ষা করেন। এতে পাঁচজনের নমুনায় জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়, যাদের বসবাস এক কিলোমিটারের মধ্যে। এই রোগীদের কেউ-ই দুই বছরের মধ্যে বিদেশ ভ্রমণ করেননি। তারা পরীক্ষা করানও একই সময়ে। ফলে বিষয়টি একই সংক্রমণ চক্রের অংশ হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এ ছাড়া পাঁচজন আক্রান্তের মধ্যে একজন ডেঙ্গু ভাইরাসেও সংক্রমিত হয়েছিলেন।
আইসিডিডিআর,বির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সমগ্র জিনোম সিকোয়েন্সিং এবং তুলনামূলক বিশ্লেষণ ব্যবহার করে দেখা যায়, বাংলাদেশি এই স্ট্রেইন (অণুজীবের উপপ্রকার) এশিয়ান লাইনেজের অন্তর্গত। এতে আক্রান্ত হলে মাইক্রোসেফালি ও অন্যান্য স্নায়বিক রোগের মতো গুরুতর সংকট দেখা দিতে পারে। এই স্ট্রেইন ২০১৯ সালে কম্বোডিয়া ও চীনে দেখা যায়।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু, উষ্ণ তাপমাত্রা ও দীর্ঘ বর্ষাকাল এডিস মশার জন্য সর্বোত্তম প্রজনন পরিস্থিতি তৈরি করে। এ কারণে মশাবাহিত অনেক রোগ হয়। ডেঙ্গু ছাড়াও এখানে চিকুনগুনিয়া দেখা গিয়েছিল। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো জিকাও এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় প্রথম জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়, তবে তা বানরের শরীরে। এর পর ১৯৫২ সালে প্রথম মানবদেহে শনাক্ত হয়। এর পর তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের অনেক দেশে।
জিকা আক্রান্তের লক্ষণ ডেঙ্গুর মতো হলেও ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ধরা পড়ে না। বছরজুড়ে মানুষের শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। জিকা ভাইরাসে আক্রান্তের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। জিকা আক্রান্ত হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হলে অথবা পরে জিকা আক্রান্ত হলে শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে শিশুর জন্ম হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০১৬ সালে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালিত একটি পর্যালোচনা গবেষণায় প্রথমবারের মতো দেশে জিকা ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি উঠে আসে। ওই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ২০১৪ সালে। যদিও এই রোগীর বিদেশ ভ্রমণের কোনো ইতিহাস ছিল না। বিষয়টিতে ধারণা করা হয়, ২০১৫ সালে ব্রাজিলে প্রাদুর্ভাবের আগেই বাংলাদেশে জিকা ভাইরাস গোপনে সংক্রমিত হচ্ছিল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ক রমণ প রথম রমণ র
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে।
আগামী বছরের ১-২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়া কাপ। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের ড্র সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ দুপুরে। যেখানে শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ।
‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। জাঁকজমকপূর্ণ ড্রতে বাংলাদেশ ছিল চার নম্বর প্লটে। সঙ্গী ছিল ইরান ও ভারত। গ্রুপিং ড্রতে টুর্নামেন্টের একমাত্র অভিষিক্ত দল বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল নির্বাচিত হয়।
পরের রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের চতুর্থ দল হয় উজবেকিস্তান। এরপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চীন বাংলাদেশের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল।
ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র্যাঙ্কিং ৫৫)। র্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না।
প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা।
এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ।
ঢাকা/ইয়াসিন