চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শুরু থেকেই এই আলোচনা আছে। টুর্নামেন্টে ‘স্বাগতিক পাকিস্তান, কিন্তু ঘরের মাঠের সুবিধাটা পাচ্ছে ভারত’—দুবাইয়ে সব ম্যাচ খেলা ভারতকে নিয়ে এমন প্রশ্ন ওঠাই তো স্বাভাবিক।

কোনো সাধারণ দর্শক নন, ভারতের বাড়তি সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার রেসি ফন ডার ডুসেনও। ফাইনালে ওঠার পর সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই ভারত কোচ গৌতম গম্ভীরের সামনে প্রশ্ন উঠেছিল। যে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ক্ষেপে গিয়েছেন গম্ভীর।

গম্ভীরের মেজাজ হারানো অবশ্য নতুন কিছু নয়। তিনি বরং এই প্রশ্নে মেজাজ ধরে রাখতে পারলেই অবাক হতে হতো। সংবাদ সম্মেলনে তাঁর মেজাজ হারানো দেখে গত নভেম্বরেই তাঁকে সংবাদ সম্মেলনে দেখতে চান না বলে জানিয়েছিলেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বিশ্লেষক সঞ্জয় মাঞ্জরেকার।

গম্ভীর কাল দাবি করেছেন, ভারত এখানে কোনো বাড়তি সুবিধা পায়নি, ‘দেখুন, প্রথমত, এই ভেন্যু আমাদের জন্য যতটা নিরপেক্ষ, অন্য যেকোনো দলের জন্যও ততটাই নিরপেক্ষ। আমরা এখানে (খুব বেশি) খেলিনি। শেষ কবে এখানে খেলেছি, তা আমার মনে নেই। আসলে, আমরা এমন কোনো পরিকল্পনাই করিনি। পরিকল্পনাটা এমন ছিল যে, যদি আমরা ১৫ সদস্যের দলে দুজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার রাখি, তাহলে আমরা পাকিস্তানে খেলি বা যেখানেই খেলি না কেন, আমরা দুজন বিশেষজ্ঞ স্পিনারকেই খেলাতাম। কারণ এটি উপমহাদেশের একটি টুর্নামেন্ট।’

তিনি যোগ করেছেন, ‘ব্যাপারটা এমন নয় যে আমরা ইচ্ছে করেই স্পিনের ফাঁদ পাততে চেয়েছি। আপনি যদি দেখেন, প্রথম দুটি ম্যাচে আমরা মাত্র একজন বিশেষজ্ঞ  স্পিনার খেলিয়েছি। এই ম্যাচে এবং আগের ম্যাচে আমরা দুজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার খেলিয়েছি।’

কাল ভারত ফাইনাল নিশ্চিত করার পর জানা গেছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল কোথায় হবে। ভারত হেরে গেলে ফাইনাল হতো লাহোরে, যা এখন হবে দুবাইয়ে। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকা আর অস্ট্রেলিয়া তো জানতই না, সেমিফাইনালে তাদের কোথায় খেলতে হবে। তাই আগেভাগেই দুই দল এসে দুবাইয়ে উপস্থিত হয়েছিল। পরে ভারত অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনাল নিশ্চিতের পর দক্ষিণ আফ্রিকা ফিরেছে লাহোরে।  অন্যদিকে ভারত আগে থেকেই জানে, কোন মাঠে এবং কী ধরনের কন্ডিশনে তারা সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচ খেলবে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এ সুবিধা একমাত্র ভারত ছাড়া আর কেউই পাচ্ছে না।

এরপরও গম্ভীরের দল কোনো সুবিধা পাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন তিনি। উল্টো ক্ষেপে সমালোচকদের বড় হতে বলেছেন ভারতের প্রধান কোচ, ‘অতিরিক্ত সুবিধা নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। কীসের অতিরিক্ত সুবিধা? আমরা এখানে একদিনও অনুশীলন করিনি। আমরা আইসিসি একাডেমিতে অনুশীলন করছি। ওখানকার কন্ডিশন আর এখানকার কন্ডিশন ১৮০ ডিগ্রি আলাদা। কিছু মানুষ সব সময় অভিযোগ করতেই ভালোবাসে। আসলে তাদের উচিত বড় হওয়া। তাই, আমি মনে করি না যে আমাদের কোনো অতিরিক্ত সুবিধা ছিল।’

অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ হারের পর নিজেদেরই দোষ দিয়েছেন, ‘দেখুন, আমি এসব কথায় বিশ্বাস করি না। ঘটনা যা হওয়ার তাই হয়েছে। ভারত এখানে সত্যিই ভালো ক্রিকেট খেলেছে। এই পিচ তাদের খেলার ধরনের সঙ্গে যায়, কারণ তাদের দলে থাকা স্পিনার ও পেসাররা এমন কন্ডিশনের জন্য উপযুক্ত। তারা ভালো খেলেছে, আমাদের হারিয়েছে, এবং যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গম ভ র ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় বিএনপি কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা, নিহত ১

খুলনা নগরের আড়ংঘাটায় কুয়েট আইটি গেট–সংলগ্ন বিএনপির কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে ইমদাদুল হক (৫৫) নামের এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সোয়া নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মামুন শেখসহ আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রাতে মামুন শেখ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে ওই কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চারটি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশে থাকা শিক্ষক ইমদাদুল হকের শরীরে লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে আবার গুলি চালালে মামুন শেখসহ অন্য দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

নিহত ইমদাদুল বছিতলা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য, তিনি একটি মাহফিলের অনুদান সংগ্রহের জন্য ওই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।

আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার বলেন, মামুন শেখ প্রায়ই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ে বসে আড্ডা দেন। গতকাল রাতেও তিনি আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছিল। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ