দিনাজপুরে কৃষকের কাজে আসছে না রাবার ড্যাম, বেড়েছে খরচ
Published: 5th, March 2025 GMT
শুষ্ক মৌসুমে সেচ দেওয়ার জন্য দিনাজপুর সদর উপজেলায় আত্রাই ও সাঁইতাড়া নদীতে নিমিত দুটি রাবার ড্যাম কাজে আসছে না। নদীতে পানি না থাকায় অন্তত আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ ব্যাহত হচ্ছে। এখন গভীর ও অগভীর নলকূপ দিয়ে সেচ দিতে গিয়ে বেশি খরচ পড়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচের অভাবে দিনাজপুর সদর ও চিরিরবন্দর উপজেলার কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থাকত। কৃষক ও জেলেদের দুরবস্থার কথা বিবেচনা করে ২০০১ সালে কাঁকড়া নদীতে এলজিইডি ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩০ ফুট দীর্ঘ সাঁইতাড়া রাবার ড্যাম নির্মাণ করে। পরে ২০১৩ সালে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আত্রাই-কাঁকড়ার মোহনার কাছাকাছি মোহনপুর রাবার ড্যামটি নির্মাণ করা হয়। ৪৪ কিলোমিটার এলাকায় পানি মজুত রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন ১৩৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ড্যামটি নির্মাণ করা হয়।
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে আত্রাই নদ। এই নদেরই একটি শাখা নদী হচ্ছে কাঁকড়া নদী। সম্প্রতি দুটি নদ–নদীরই খননকাজ করা হয়েছে। আত্রাই নদের মোহনপুর এলাকায় করা হয়েছে মোহনপুর রাবার ড্যাম এবং কাঁকড়া নদীর সাঁইতারা এলাকায় আছে সাঁইতারা রাবার ড্যাম। উদ্দেশ্য ছিল শুষ্ক মৌসুমে দুটি রাবার ড্যামে পানি আটকে রেখে কৃষককে সেচ সুবিধা দেওয়া। কিন্তু মোহনপুর রাবার ড্যামের দুটি ব্যাগ ছিদ্র হওয়ায় এবার পানি ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। আবার কাঁকড়া নদী পুরোপুরি খননকাজ হয়নি। ফলে ওই নদীতে থাকা সাঁইতারা রাবার ড্যামটি চালু করা হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ড্যামটি চালু না থাকায় পানি কাঁকড়া নদীর আশপাশে না এসে গভীর খননকৃত আত্রাই নদের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে দুটি রাবার ড্যামই কাজে আসছে না কৃষকের।
সম্প্রতি আত্রাই ও কাঁকড়া নদী এবং মোহনপুর ও সাঁইতাড়া রাবার ড্যাম ঘুরে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। মোহনপুর রাবার ড্যামের বিষয়ে তাঁরা বলেন, প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে ড্যামটির সমস্যা দেখা দেয়। এবার মোহনপুর রাবার ড্যামের দুটি স্থানে চার ফুট ছিদ্র হয়েছে। রাবার ড্যামগুলো বারবার ফুটো হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ব্যবস্থা নেয় না। এই সমস্যার সুযোগ নিয়ে লাভবান হচ্ছেন নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীরা। সাঁইতাড়া রাবার ড্যামের বিষয়ে স্থানীয়রা বলছেন, সম্প্রতি নদী দুটির খননকাজ করা হয়েছে। তবে কাঁকড়া নদীর আংশিক খননকাজ করায় পানি আত্রাই নদের দিকে নেমে যাচ্ছে। কাঁকড়ার উভয় পাড়ের কৃষক পানি পাচ্ছেন না।
দিনাজপুরে মোহনপুর ও সাঁইতাড়া রাবার ড্যাম নদীগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার সুকদেবপুর এলাকায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম হনপ র র ব র ড য ম র উপজ ল এল ক য় ই নদ র
এছাড়াও পড়ুন:
সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে
১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।
নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।
এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।