সারাদেশে অব্যাহত হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।

শুক্রবার (৭ মার্চ) ঢাকার পল্টনে মশাল মিছিল ও সমাবেশ করে এ দাবি জানায় তারা। সমাবেশ থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, “স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলছেন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। অথচ আমরা দেখছি একের পর এক হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি আর মব জাস্টিসের ঘটনা। নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি সংগঠন আজ বায়তুল মোকাররমের সামনে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে মিছিল করেছে। মেট্রোরেলে যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন নিপীড়িত নারীর পরিচয় সামনে এনে তাকে আবারও হেনস্তা করা হয়েছে। অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে নিতে একদল অপরাধী থানা ঘেরাওয়ের দুঃসাহস দেখিয়েছে। এভাবে চলতে পারে না। এসব অপরাধীকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।”

যুব ইউনিয়ন সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম বলেন, “আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে এখানে দাঁড়িয়েছি। আমার মেয়ের বয়সী একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। রাস্তাঘাটে, ক্যাম্পাসে নারীর জন্য অনিরাপদ হয়ে উঠছে। যেখানে সেখানে মব জাস্টিসের নামে সংঘটিত হচ্ছে অপরাধ।” 

সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অন্ধ না হয়ে গেলে এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। একটা স্বৈরাচারের বিদায়ের পর আপনারা দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনাদের কাছে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা তা পূরণ করুন। বিগত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বামপন্থীরা যেমন সোচ্চার ছিল, বর্তমান অনাচারের বিরুদ্ধেও তারা রাস্তায় নেমেছে। ভবিষ্যতেও জনগণের দাবির পক্ষে আমরা রাজপথে থাকব।”

সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতিসহ সব ধরনের অপরাধে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।

এর আগে ছাত্র ইউনিয়ন ও যুব ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা একটি মশাল মিছিল নিয়ে পল্টন এলাকা প্রদক্ষিণ করে সমাবেশস্থলে জড়ো হন।

ঢাকা/হাসান/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র উপদ ষ ট ইউন য ন অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনগণের সহজে ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে হবে: সিনিয়র সচিব
  • অবিলম্বে গণভোটের দাবি চাকসুর
  • নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্ট
  • ক্ষমতার লোভে কেউ কেউ ধর্মকে ব্যবহার করছে: আব্দুস সালাম
  • মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১
  • উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
  • মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতা ভিন্ন
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা
  • ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা