চাঁদপুরে সদরে মামাতো দুই ভাই-বোনকে দেখাশোনার জন্য বাড়িতে রাখা এক তরুণীকে নির্যাতনের অভিযোগে ওই তরুণীর মামা ও মামিকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার চাঁদপুর আমলি আদালতের বিচারক তাদের দুজনকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

নির্যাতনের শিকার রোজিনা সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাকে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

আসামিরা হলেন, ভুক্তভোগীর মামা আবুল মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লা ও তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই পিন্টু দত্ত।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের মাদ্রাসা সড়কের মোল্লা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো.

বাহার মিয়া।

রোজিনার বাবা বাদী হয়ে প্রধান আসামি মামী রোকেয়া বেগম ও দ্বিতীয় আসামি মামা রুবেলের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনে মামলা দায়ের করেন।  

ওই সড়কের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষার্থী মোরশেদ আলম ও ফরহাদ হোসেন জানান, রাস্তার পাশে ২০ বছরের ওই তরুণীকে কান্না করতে দেখে কারণ জিজ্ঞাসা করেন তারা। উত্তরে ওই তরুণী তাদের জানান, মামার বাসা থেকে তিনি পালিয়ে এসেছেন। পরে তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান।

খবর পেয়ে সদর থানার এএসআই কাউসার ওই তরুণীকে উদ্ধারের পাশাপাশি রুবেল মোল্লা ও রোকেয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।

নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী বলেন, ৬ মাস আগে মামাতো ভাই-বোনকে দেখাশোনার জন্য আমাকে আনা হয়। বাড়িতে কাজ করার সময় কারণে-অকারণে মামি আমাকে মারধর করতেন। কোনো ভুল হলেই গালমন্দ করতেন। কাজ করলে ভুল হতে পারে। আমাকে পুতা, কাঠ ও দা দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন মামি। চার মাস এভাবে মারধর করা হয়। মামা কয়েকবার ওষুধ এনে দিয়েছে, কিন্তু জখম ভালো হয় না।

ঘটনাটি জেনে থানায় যান ওই তরুণীর বাবা আলী আহম্মদ ভুঁইয়া। মেয়েকে নির্যাতনের চিত্র দেখে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি বলেন, আমার মেয়ে এমন নির্যাতনের শিকার আমি জানতাম না। সে ঢাকায় আমার বড় মেয়ের কাছে ছিল। আমাকে না জানিয়ে সেখান থেকে তাকে রুবেলের বাসায় নেওয়া হয়। আমি মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য বললে, পরে নিয়ে আসব বলত। রোকেয়া আমার মেয়েকে এমন নির্যাতন করেছে কেউ না দেখলে বিশ্বাস করবে না। এই নিষ্ঠুর মহিলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করি।

ওসি বাহার মিয়া বলেন, খবর পেয়ে গৃহকর্মী মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। আটক স্বামী-স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ