বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগিতা একটি অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র হিসেবে রয়ে গেছে বলে জানিয়েছে নয়া দিল্লি। শুক্রবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, ভারত ও বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের সম্পর্ক জোরদার করছে, পারস্পরিক সম্মত প্রকল্পগুলো সময়মত বাস্তবায়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে।

তিনি আরো জানান, সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং স্থানীয় সমস্যাগুলি প্রকল্প বাস্তবায়নকে প্রভাবিত করলেও, উন্নয়ন সহযোগিতা তাদের সম্পর্কের একটি অগ্রাধিকার ক্ষেত্র। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য সরকারি আলোচনাগুলো প্রকল্পের পোর্টফোলিওকে যৌক্তিকীকরণ এবং দক্ষতার সাথে প্রকল্পগুলো সম্পাদনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে। বাংলাদেশের কাছ থেকে সহায়তা এবং ছাড়পত্র না পেয়ে ভারত এই প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বলেন, “উন্নয়ন সহযোগিতা বাংলাদেশের জনগণের সাথে আমাদের সম্পর্কের একটি অগ্রাধিকার ক্ষেত্র। সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং দীর্ঘস্থায়ী স্থানীয় সমস্যা এই প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের গতিকে প্রভাবিত করেছে। তাই, আনুষ্ঠানিক আলোচনা প্রকল্পের পোর্টফোলিওকে যুক্তিসঙ্গত করার এবং পারস্পরিক সম্মত প্রকল্পগুলো সময়সীমার মধ্যে বাস্তবায়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সমর্থন এবং মুলতুবি থাকা অনুমোদন প্রাপ্তির সাপেক্ষে, আমরা এই প্রকল্পগুলো নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি।”

গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা করতে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) ৮৬তম বৈঠক বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। কলকাতার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তি প্রসঙ্গে জয়সওয়াল বলেন, “ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গার পানি চুক্তি বাস্তবায়নের তদারকির জন্য গঠিত যৌথ কমিটির ৮৬তম সভা ২০২৫ সালের ৬ মার্চ কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়। এই নিয়মিত কারিগরি সভা, যা বছরে তিনবার অনুষ্ঠিত হয়, ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি বাস্তবায়নের সাথে সম্পর্কিত একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোগত ব্যবস্থার অংশ। বৈঠকে, উভয় পক্ষ গঙ্গার পানি চুক্তি, পানি প্রবাহ পরিমাপ এবং পারস্পরিক স্বার্থের অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ