প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ১৫৯ জন সহকারী উপজেলা বা থানা শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রায় দুই বছর হতে চললেও পরীক্ষার তারিখ এখনো প্রকাশ করা হয়নি। দীর্ঘদিনেও পরীক্ষা না হওয়ায় আবেদনকারী প্রার্থীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

২০২৩ সালের জুনে প্রথম এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এক বছর পর আবার সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। দীর্ঘদিনেও পরীক্ষা না হওয়ার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে পিএসসি থেকে বলা হয়, ‘এ নিয়োগ নিয়ে কিছু জটিলতা থাকায় এত দিন পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। আমরা দ্রুত পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।’

আরও পড়ুনদেশে–বিদেশে পড়াশোনা শেষে ইন্টেলে চাকরি পেলেন হাসান উল বান্না, বেতন বছরে দুই কোটি০৬ মার্চ ২০২৫

পিএসসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটিইও নিয়োগে আবেদন করেছেন ৯৩ হাজার ৪০ প্রার্থী। পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ চলমান। কয়েকটি বিসিএসের নিয়োগ কার্যক্রম নিয়ে পিএসসি ব্যস্ত সময় পার করছে। জুন পর্যন্ত বিসিএসের পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ততা রয়েছে। জুনের পর এটিইও নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হবে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে তারিখ ঘোষণা করব।’

এটিইও পদে আবেদনকারী মো.

রায়হানুল হক বলেন, ‘এটিইও পদের বিজ্ঞপ্তি এমনিতেই কম প্রকাশ করা হয়। দীর্ঘদিন পর মাত্র ১৫৯ জন এটিইও নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুই বছরেও পরীক্ষা নেওয়ার খোঁজ নেই। পিএসসিতে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। পরীক্ষার জন্য আর কত দিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’

২০২৩ সালের ২৬ জুন ১৫৯ জন এটিইও নিয়োগে প্রথম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। অনলাইনে আবেদনের সময় শেষ হওয়ার এক দিন আগে বিজ্ঞপ্তিটি স্থগিত করে পিএসসি। তখন পিএসসি প্রথম আলোকে জানায়, এটিইও নিয়োগে আবেদনের ক্ষেত্রে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে নিয়োগবিধির সঙ্গে অসামঞ্জস্যের কারণে অনলাইনে আবেদন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন৪৮ জেলায় ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, এইচএসসি পাস ১৮-৩৫ বয়সীর সুযোগ, ভাতা দৈনিক ২০০০৬ মার্চ ২০২৫

আগের বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনসংক্রান্ত যে জটিলতা ছিল, সেটি সংশোধন করে ২০২৪ সালের ২৭ জুন নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিকের সব শিক্ষকের আবেদনের সুযোগ রাখা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, সহকারী উপজেলা বা থানা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে আবেদনের জন্য কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতক ডিগ্রিসহ দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার্স ডিগ্রি থাকতে হবে।

বিভাগীয় প্রার্থীরা সহকারী উপজেলা বা থানা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে আবেদন করতে পারবেন। বিভাগীয় প্রার্থী বলতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষককে বোঝানো হয়েছে। বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে চাকরির দুই বছরের অভিজ্ঞতা যে বাধ্যবাধকতা ছিল, সেটিও বাদ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনচিকিৎসক নিয়োগে বিশেষ বিসিএস নিতে চায় পিএসসি০৬ মার্চ ২০২৫

বিভাগীয় প্রার্থীদের বয়স ৪৫ বছর হলেও আবেদন করতে পারবেন। করোনাভাইরাসের কারণে চাকরির বয়স কমানোর যে প্রজ্ঞাপন দিয়েছিল সরকার, সেই শর্ত অনুযায়ী ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যেসব প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৪৫ বছর ছিল, তাঁরাও আবেদনের সুযোগ পান।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৬ জুন ১৫৯ জন এটিইও নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর চারটি মামলা হয়। এর মধ্যে একটি মামলায় উচ্চ আদালত নিয়োগ কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। এ মামলার শুনানি না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগের কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ও পর ক ষ দ ই বছর প এসস প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।

চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই  তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ