‘আমার কোনো বাহিনী নেই সব সময় অভিযান সম্ভব নয়’
Published: 8th, March 2025 GMT
রাউজানে অবৈধভাবে কৃষিজমির টপসয়েল (উপরিভাগ) ও পাহাড় কাটা, কৃষিজমি ভরাট বন্ধ করা যাচ্ছে না। উপজেলা সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংছিং মারমা এসবের বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও তেমন কোনো কাজ হচ্ছে না। অংছিং মারমা বলেন, ‘আমার তো কোনো সশস্ত্র বাহিনী নেই, তাই চাইলেও সবসময় অভিযান চালানো যায় না।’
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কদলপুর, হলদিয়া, ডাবুয়া, নোয়াজিষপুর, পশ্চিম গুজরা, পূর্ব গুজরা, নোয়াপাড়া ও রাউজান সদর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি কৃষিজমি ও পাহাড় কাটা চলছে। সরকারি খাস খতিয়ানের টিলা কেটে ভরাট করা হচ্ছে পুকুর-জলাশয়। ডাবুয়া ইউনিয়নের লাঠিছড়ি, পশ্চিম ডাবুয়া, কলমপতি ও কেয়াকদাইর এলাকায় কৃষিজমি সাবাড় বেশি হয়েছে। নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের মিলন মাস্টারের ঘাটা এলাকায় সর্তা খালের পাড় কেটে সেই মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষিজমি ভরাটে। পশ্চিম গুজরা, পূর্ব গুজরা ও নোয়াপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে অবাধে চলছে কৃষিজমি কাটা।
স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ি ঢল, হালদা নদী ও সর্তার খালের পানির তোড়ে প্রতিবছর বর্ষায় ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েন মানুষ। কৃষিজমি কাটার ফলে জমি নিচু হয়ে যায়, বন্যার পানি আটকে থাকে। আবার কৃষিজমি ভরাটের কারণে বর্ষায় পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এ প্রসঙ্গে উপজেলা পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি মীর মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘গোটা উপজেলায় প্রতিযোগিতা করে কাটা হচ্ছে কৃষিজমি। ধ্বংস করা হচ্ছে পাহাড়-টিলা। স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা ও উদাসীনতায় এসব থামানো যাচ্ছে না।’
চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ড.
নির্বিচারে কৃষিজমি ও পাহাড় কাটা প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংছিং মারমা বলেন, ‘এসব বন্ধে সম্মিলিতভাবে সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। আমার একার পক্ষে এসব বন্ধ করা সম্ভব নয়। অভিযোগ পেলে অভিযান চালিয়ে অর্থদণ্ড করা হচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে সশস্ত্র কোনো বাহিনী নেই। এ কারণে সবসময় অভিযানে যাওয়া সম্ভব হয় না। পুলিশ, কৃষি অফিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড নিজ নিজ ক্ষেত্রে কাজ করলে সম্মিলিত প্রয়াসে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হয়। আমি বিচার করতে পারি, কিন্তু জড়িতদের ধরে এনে বিচার করা একজনের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ য ন পর ব শ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা, নিহত ১
খুলনা নগরের আড়ংঘাটায় কুয়েট আইটি গেট–সংলগ্ন বিএনপির কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে ইমদাদুল হক (৫৫) নামের এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সোয়া নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মামুন শেখসহ আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রাতে মামুন শেখ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে ওই কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চারটি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশে থাকা শিক্ষক ইমদাদুল হকের শরীরে লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে আবার গুলি চালালে মামুন শেখসহ অন্য দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
নিহত ইমদাদুল বছিতলা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য, তিনি একটি মাহফিলের অনুদান সংগ্রহের জন্য ওই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।
আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার বলেন, মামুন শেখ প্রায়ই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ে বসে আড্ডা দেন। গতকাল রাতেও তিনি আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছিল। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।