Samakal:
2025-07-31@06:28:56 GMT

সরিষা পুষিয়ে দিল আমনের ক্ষতি

Published: 8th, March 2025 GMT

সরিষা পুষিয়ে দিল আমনের ক্ষতি

ফেনীতে আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় অধিকাংশ আমন ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। ফসল নষ্ট হওয়ার পর জমি খালি পড়েছিল। এ সময় অন্য কোনো ফসল চাষাবাদ করার মতো সময়ও ছিল না। কৃষি বিভাগ চাষিদের পতিত জমিতে সরিষা চাষ করতে বলে। তারা সার ও বীজ দেয়। অনাবাদি সেই জমিতে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। সরিষা চাষে আমনের ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছেন ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নের তেরবাড়িয়া গ্রামের কৃষক জাফর আহমদ। তিনি বলেন, ‘বন্যার পর চাষিরা ছিলেন দিশাহারা। কারণ আমন ফসলের ক্ষেত সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সরিষা চাষে আমনের ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নিতে পেরেছি আমরা।’ লেমুয়া ইউনিয়নের তেরবাড়িয়া গ্রামের ফজলুল হক জানান, তিনি ৪২ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি। পরিবারের জন্য ভোজ্যতেল, জ্বালানি এবং গবাদি পশুর জন্য খৈলও মিলছে সরিষা থেকে। পরিবারের চাহিদার অতিরিক্ত তেল বিক্রি করে ভালো আয়ের আশায় আছেন ফজলুল হক।
কৃষকরা জানান, ধানের চেয়ে সরিষা চাষে খরচ কম। তাই বোরো চাষের আগে খরচ পোষাতে সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন কৃষকরা। যেসব জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে, সেখানে বোরো আবাদে ভালো ফলন পাওয়া যায়। কৃষি বিভাগ সরিষার বীজ, সার দিয়েছে। সরিষা পাকার আগে পাতা ও ফুল ঝরে পড়ে জমিতে জৈব সার তৈরি করে। 
কৃষাণী বিবি খোদেজা ও হাছিনা বেগম বলেন, ‘বন্যায় আমন ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেলে সরিষা চাষ করেছি। কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা করেছে। সংসারে তেলের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করতে পারছি।’ কৃষি উদ্যোক্তা নেছার উদ্দিন ও মোহাম্মদ রিমন বলেন, ‘বন্যা-পরবর্তী সময়ে ধানের ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় সরিষা চাষ করেছি। ভালো ফলনও হয়েছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর জেলায় ৬ হাজার ৬৬ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। চলতি বছর প্রায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ৫০০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে দেড় মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হয়। চলতি বছর ৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে ১১ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শিপন চৌধুরী বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা অল্প খরচে বেশি লাভবান হওয়া যায় এমন কিছু ফসল আবাদ করতে চেয়েছিলেন। আমরা তাদের সরিষা আবাদ করতে পরামর্শ দিই। কৃষকরা আমাদের কথা শুনে লাভবান হয়েছেন।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো.

একরাম উদ্দিন বলেন, ‘ফেনীতে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে সরিষার আবাদ। বাম্পার ফলনও হয়েছে। সরিষা উৎপাদন বাড়ায় ভোজ্যতেলের আমদানি কমিয়ে স্থানীয়ভাবে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ষ কর ক ষকর

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার পরিবারের ৭ সদস্যের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম ও সুলতান মাহমুদ।

আগামী ১১ ও ১৩ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের ঠিক করা হয়েছে।

মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যরা হলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি)।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের পক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত।

এর আগে গত ২০ জুলাই পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি এই আদালতে বদলি হয়।

দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে মামলাগুলো বিচারের জন্য অন্য আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় গত এপ্রিলে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। তিনটি মামলায় তাঁদের ছাড়াও সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।

২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করে দুদক।

পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ