শক্তি হারিয়ে কিছুটা দুর্বল হয়ে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় আলফ্রেড। ঝড়ের তাণ্ডবে কুইন্সল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে তিন লাখের বেশি মানুষ আজ রোববারও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন।

ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিতে কোনো কোনো এলাকায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বন্যার পানি থেকে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে। এ ছাড়া ঝড়ের মধ্যে একটি সামরিক যান দুর্ঘটনায় পড়ে আহত হয়েছেন ১৩ সেনাসদস্য।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়া আলফ্রেড গতকাল শনিবার উপকূলের কাছাকাছি এসে শক্তি হারিয়ে কিছুটা দুর্বল হয়ে যায়। পরে ক্রান্তীয় ঝড়ে রূপ নিয়ে কুইন্সল্যান্ডের রাজধানী ব্রিসবেনের কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করে।

ঝড়ের কারণে বিপদের ঝুঁকি ‘এখনো কাটেনি’ জানিয়ে কর্মকর্তারা আজও স্থানীয় লোকজনকে বাড়ির ভেতর সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলেছেন।

ঝড়ে অনেক গাছ উপড়ে গেছে, অনেক এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে, নিচু এলাকার রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল তারা ৬১ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। তিনি আগের দিন নিখোঁজ হয়েছিলেন। নিউ সাউথ ওয়েলসের ডোরিগোতে বন্যার পানিতে তাঁর গাড়ি আটকে গিয়েছিল।

জরুরি উদ্ধারকর্মীরা ওই ব্যক্তিকে তাঁর গাড়ি থেকে বের হয়ে নদীর তীরের একটি গাছে উঠতে দেখেছিলেন। কিন্তু পানির তোড় বেশি থাকায় উদ্ধারকর্মীরা তাঁর কাছে পৌঁছাতে পারেননি। একপর্যায়ে পানির তোড়ে ভেসে যান তিনি।

এ ঘটনার পরদিন গতকাল পুলিশ ওই এলাকায় একটি মৃতদেহ খুঁজে পায়। ধারণা করা হচ্ছে, মৃতদেহটি ভেসে যাওয়া ব্যক্তির।

গতকাল পৃথক দুর্ঘটনায় ১৩ সামরিক সদস্য আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ব্রিসবেন থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর লিসমোরে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেন, একটি সরু সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় একটি ট্রাক উল্টে যায় ও সেটি আরেকটি ট্রাককে আঘাত করে।

রাজ্যের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা থেকে শুরুতে বলা হয়েছিল, এ দুর্ঘটনায় তাঁরা ৩৬ জনকে চিকিৎসা দিয়েছেন। পরে বলা হয়, সেখানে ৩৬ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৩ জন আহত হয়েছেন।

ঝড়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য সামরিক বাহিনীর একটি দলকে লিসমোরে মোতায়েন করা হয়েছিল। আহত ব্যক্তিরা ওই দলের সদস্য।

আলফ্রেডের প্রভাবে গত শুক্রবার রাত থেকেই ব্রিসবেনে ঝোড়ো বাতাস ও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। তবে গতকাল ঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ব্রিসবেন ভয়াবহ এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়। এর আগে ১৬ দিন ধরে সমুদ্রে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছিল আলফ্রেড।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র সব ন আলফ র ড দ র ঘটন উপক ল গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

স্টিভ জবসের মডেল কন্যাকে কতটা জানেন?

মার্কিন ফ্যাশন মডেল ইভ জবস। অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের কন্যা তিনি। স্টিভ জবস ও লরেন পাওয়েল জবস দম্পতির কন্যা ইভ।

কয়েক দিন আগে বয়সে ছোট প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২৭ বছরের ইভ। তার বরের নাম হ্যারি চার্লস। যুক্তরাজ্যের নাগরিক হ্যারি অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ী অশ্বারোহী। বয়সে ইভের চেয়ে এক বছরের ছোট হ্যারি। গ্রেট ব্রিটেনে এ জুটির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। 

 

ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইভের জাঁকজমকপূর্ণ বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধনাঢ্য পরিবারের লোকজন। এ তালিকায় রয়েছেন—তারকা শেফ ব্যারনেস রুথ রজার্স, বিল গেটসের মেয়ে জেসিকা, রোমান আব্রামোভিচের মেয়ে সোফিয়া প্রমুখ। অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা উত্তরাধিকারীর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের বিলাসবহুল মিনিবাসের স্রোত বইছিল বিয়ের ভেন্যুতে।

 

জাকজমকপূর্ণ বিয়েতে কত টাকা খরচ হয়েছে তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। সংবাদমাধ্যমটিকে প্রয়াত স্টিভ জবসের স্ত্রী লরেন পাওয়েল জবস বলেন, “ইভ-হ্যারির বিয়েতে ৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়েছে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯০ কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি)। 

 

১৯৯১ সালে লরেন পাওয়েলকে বিয়ে করেন স্টিভ জবস। এ সংসারে তাদের তিন সন্তান। ইভ এ দম্পতির কনিষ্ঠ কন্যা। ১৯৯৮ সালের ৯ জুলাই ক্যালিফর্নিয়ায় জন্ম। তার বড় বোন এরিন, ভাইয়ের নাম রিড। লিসা নামে তার একটি সৎবোনও রয়েছে।

 

ইভা পড়াশোনা করেছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২১ সালে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং সমাজ (সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি) বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। একই বছর প্যারিসে ‘কোপের্নি’ সংস্থার হাত ধরে মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন। মডেলিং জগতে পা রেখেই চমকে দেন স্টিভ-তনয়া। 

 

অনেকে নামিদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন ইভ। বিখ্যাত ব্যাগ প্রস্তুতকারী সংস্থা লুই ভিতোঁরের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। মডেলিংয়ের পাশাপাশি অশ্বারোহী হিসাবেও খ্যাতি রয়েছে ইভের। এক সময় বিশ্বের ২৫ বছরের কম বয়সি ১ হাজার সেরা অশ্বারোহীর মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিলেন তিনি।

 

মাত্র ছয় বছর বয়সে ঘোড়ার পিঠে চড়ে দৌড় শুরু করেছিলেন স্টিভ জবস তনয়া। ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মেয়ে যাতে পড়াশোনায় মন দেয়, সে দিকে বরাবরই সজাগ দৃষ্টি ছিল ইভের বাবা-মায়ের। তবে গ্রীষ্মাবকাশ ও বসন্তের ছুটির সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি পেতেন ইভ। 

 

ইভ যেখানে অশ্বারোহণের প্রশিক্ষণ নেন, সেই জায়গার মূল্য দেড় কোটি ডলার। ইভ প্রশিক্ষণ শুরু করার পর তার মা ওই জায়গা কিনে নিয়েছিলেন। তবে মডেল হওয়ার কোনো পরিকল্পনা কখনো ছিল না ইভের। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আগে কখনো মডেলিং করিনি। তবে প্রস্তাব পেয়ে ঘাবড়ে যাইনি। আমার মনে হয়েছিল, কেন নয়? এই প্রস্তাব আমাকে আকৃষ্ট করেছিল।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ