পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি দাপ্তরিক কাজে দ্রুত গতি ফেরাতে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। কী বার্তা নিয়ে আসছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান, তা নিয়ে জল্পনা কল্পনায় ক্ষণ গুনছেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে মনস্তাত্ত্বিক চাপ থাকলেও ইতিবাচক বার্তার প্রত্যাশায় রয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সোমবার (১০ মার্চ) সকাল ১০টায় সিকিউরিটি কমিশন ভবনের মাল্টিপারপাস হলে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ে কমিশনের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

রবিবার (৯ মার্চ) রাতে বিএসইসির একাধিক কর্মকর্তা রাইজিংবিডি ডটকমকে কে এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তা অফিস করেনি, গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে

ডিএসইতে কমেছে লেনদেন, সিএসইতে বেড়েছে

সূত্র জানায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মনোবল দৃঢ় করতেই সোমবার এ বৈঠকটি ডেকেছে কমিশন। সাম্প্রতিক সময়ে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বিএসইসিতে কাজের ভাটা পড়েছে। কর্মবিরতির কারণে অনেক কাজ জমে গেছে। আগামীকালের বৈঠকে কাজে গতি ফেরাতে করণীয় সম্পর্কেও আলোচনা করা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মনোবল দৃঢ় করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে কমিশন।

বিএসইসির একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিএসইসিতে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানসিক চাপের মধ্যে পড়েছেন। সবাই হতাশার মধ্যে আছেন, আর ভাবছেন কখন, কি যেন হয়! অনেক কর্মকর্তা এটাকে ‘ট্রমা’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন। এর ফলে কর্মকর্তারা কাজে মন দিতে পারছেন না। এই ট্রমা কাটিয়ে উঠতে কাজে ফিরতে চান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এদিকে, কমিশনের এমন সিদ্ধান্তে বিএসইসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মনে আশা সঞ্চার হয়েছে। তাদের একটাই প্রত্যাশা ভেদাভেদ ভুলে কমিশনের নেতৃত্বে তারা কাজ করবেন। এক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যে ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি রয়েছে তা পূরণ করার লক্ষ্যে কমিশন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে প্রত্যাশা করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কমিশন নমনীয় হয়ে দাবিগুলো বিবেচনা করলে শিগগিরই বিএসইসি কাজে গতি ফিরে পাবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির একাধিক কর্মকতারা বলেন, সোমবার সকাল ১০টায় বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান কমিশনাররা সবাই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে বিএসইসিতে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা ও দিক-নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে।

এদিকে রবিবার দুপুরে পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ সাংবাদিকদের বলেন, “আজ এখানে গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডাররা এসেছিলেন। তারা আমাদের সহমর্মিতা জানিয়েছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে ফিরে এসেছেন। আমরা সবাইকে বলেছি, কাজে যোগদান করতে। আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করব। সবাই কাজে যোগদান করলে, কাজ স্বাভাবিক নিয়মে চলে চলবে।”

ঢাকা/এনটি/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ন কর মকর ত পর স থ ত র ব এসইস র

এছাড়াও পড়ুন:

বাজেটে লভ্যাংশ আয় ও বিনিয়োগে কর ছাড় থাকবে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগে বিশেষ কর ছাড় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

‘বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে বিএসইসির তাৎক্ষণিক কর্মপরিকল্পনা’ শিরোনামে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আস্থা বাড়াতে  ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সূচক পতনের কারণ খুঁজতে যেসব শেয়ারদরের ওঠা-নাম সূচকে বেশি প্রভাব ফেলছে, সেগুলোর লেনদেনে নজদারি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। 

এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত, বহুজাতিক, বস্ত্র ও ওষুধ খাতের লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়েছে বিএসইসি। পাশাপাশি অতালিকাভুক্ত কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আসতে উৎসাহ দিতে কর ছাড়, ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে সীমিত করা এবং শেয়ারবাজারকে বিকল্প অর্থায়নের উৎস হিসেবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর বাইরে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সব নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে বিএসইসির সমন্বয় বাড়ানো, আসন্ন বাজেটে লভ্যাংশ ও বিনিয়োগের ওপর কর ছাড় সুবিধা দেওয়ার কথাও জানিয়েছে বিএসইসি। 

শেয়ারবাজার বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে টকশো এবং বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা, ফেসবুক ও ইউটিউব ব্যবহার করে বার্তা দেওয়া হবে।

কমিশন আশা করছে, এসব পদক্ষেপ এবং কর্মপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে এবং বাজারে স্থিতিশীল হবে।

এদিন রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বিএসইসি কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, কমিশনার মো. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখ, যুগ্ম সচিব ড. দেলোয়ার হোসেন, শেয়ারবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্ক ফোর্সের প্রতিনিধি এবং বিএসইসির নির্বাহী পরিচালকদের এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

চলতি এপ্রিলে লাগাতার দরপতনের পরও বিএসইসির নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করে কিছু বিনিয়োগকারী রাজধানীর মতিঝিলে বিক্ষোভ করছেন। তারা সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এ পদে ‘অযোগ্য’ এমন অভিযোগ করে তার পদত্যাগ দাবি করেন।

সরকারি একটি সংস্থার চাপে বিএসইসির চেয়ারম্যান পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন- এমন গুজবে রোববার পতনের ধারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল শেয়ারবাজার। পতন করছেন না- এমন খবরে ফের দরপতন শুরু হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও এফআইডির সচিব বিএসইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। 

বিএসইসি সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বৈঠক হয়। বৈঠকের পরই বিএসইসির পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কিছু জরুরি কর্মপরিকল্পনা জানানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি আনতে করসুবিধা দেবে সরকার
  • কর্মীদের নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানালেন রাশেদ মাকসুদ
  • ২১ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে বিএসইসির আদেশ জারি
  • ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করল বিএসইসি
  • পুঁজিবাজারে পতন, বৃষ্টিতে ভিজে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ
  • বাজেটে লভ্যাংশ আয় ও বিনিয়োগে কর ছাড় থাকবে: বিএসইসি
  • বাজেটে লভ্যাংশ আয় ও বিনিয়োগে কর ছাড় থাকবে
  • চার মাস পর লেনদেন ৩শ কোটির নিচে
  • পুঁজিবাজারে পতন অব্যাহত, বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ
  • পুঁজিবাজারে সূচকের পতন, বেড়েছে লেনদেন