গত জুলাইয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর কমিটির ৪২ জনের ঐক্য বেশিদিন টেকেনি। গত কয়েক মাস ধরে কমিটির সদস্যরা দুই ভাগে বিভক্ত। ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়েও দু’পক্ষের ঐকমত্য হয়নি। গতকাল সোমবার ইফতারবিষয়ক সভায় যাননি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বিরোধী পক্ষ। তারা পৃথকভাবে ইফতার অনুষ্ঠান করবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া কমিটির বাইরে থাকা মহানগরের সাবেক নেতারা পৃথকভাবে কয়েকটি ইফতার অনুষ্ঠান করবেন।
মহানগর কমিটিতে আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক ও সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদারের বিরোধী পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন। কয়েক দিন আগে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ঘোষণা দেন, নগরের বিভিন্ন স্থানে ৫টি ইফতার অনুষ্ঠান করা হবে।
এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে নাসরিন ও তাঁর অনুসারীরা জানান, তাদের মতামত না নিয়ে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বরিশালের সাংগঠনিক টিম প্রধান আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও মহানগর সম্মেলন বাস্তবায়নের সমন্বয়কারী হাসান মামুনের কাছে নালিশ দিয়েছেন নাসরিন ও তাঁর অনুসারীরা। এ পরিস্থিতিতে সোমবার বেলা ১১টায় দলীয় কার্যালয়ে সভা ডাকেন আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব। সভা সূত্র জানিয়েছে, ৯ জন যুগ্ম আহ্বায়কের মধ্যে মাত্র ২ জন ও ১২ জন সদস্য সভায় অংশ নেন। সভায় ৫টি স্থানে ইফতার অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। অপরদিকে বিরোধীদের দাবি সভায় কোরাম হয়নি, তাই ওই সভার কোনো সিদ্ধান্ত বৈধ নয়।
যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম লিটু বলেন, রোববার রাতে সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার তাঁকে সোমবারের সভায় যেতে বলেছিলেন। তখন তিনি জিয়াকে বলেছেন, ঘোষণা দেওয়া ৫টি স্থানে ইফতারের সিদ্ধান্ত আগে বাতিল করতে হবে। সেটা না করায় তারা সভায় যাননি। সামনে মহানগরের সম্মেলন। ওয়ার্ড কমিটিগুলো কুক্ষিগত করার জন্য আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব কৌশলে তাদের দূরে রেখে দু’জনে দল চালাচ্ছেন।
আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক হালিম মৃধা একই রকম অভিযোগ করে বলেন, মহানগর বিএনপি এখন আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের মালিকানাধীন দলে পরিণত হয়েছে। বিরোধী মতের কাউকে তারা সম্মান দেন না। এজন্য সোমবার দুপুরে দলীয় কার্যালয়ের সভায় তারা যাননি। এই দুই যুগ্ম আহ্বায়ক জানান, সভায় কোরাম সংকট হওয়ায় সদস্যদের বাসায় গিয়ে স্বাক্ষর আনা হচ্ছে।
জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের ইফতারে তারা থাকবেন না। নাসরিনের অভিযোগ, ইফতার অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতাদের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, ‘সভায় কারা এলো না, তাতে কিছু যায় আসে না।’
পদবঞ্চিত নেতাদের আরও দুটি পক্ষ মহানগর কমিটির বিরুদ্ধে সক্রিয়। একটি পক্ষ দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অপরটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিগত কমিটির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল ইসলাম। সরোয়ারপন্থি সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ আকবর জানান, তারা একটি ইফতার অনুষ্ঠান করবেন। তবে তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। মীর জাহিদ বলেন, মহানগর কমিটির অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না। তাই তারাও পৃথক ইফতার অনুষ্ঠান করবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ স মব র কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
ঝিনাইদহে ছেলের হাতে বাবা খুন
ঝিনাইদহে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের কোদালের কোপে শাহাদত হোসেন (৬৩) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ফয়সাল হোসেনকে (২২) আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৬ জুন) সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহাদত হোসেন ওই গ্রামের তাইজেল হোসেনের ছেলে।
নিহতের স্বজনেরা অভিযোগ করেন, সকাল ১০টার দিকে শাহাদত হোসেন ছেলে ফয়সাল হোসেনকে সাথে নিয়ে মাঠে কাজ করতে যান। কাজ করার ফাঁকে ফয়সাল কোদাল দিয়ে তার বাবার মাথায় আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে মৃত বাবাকে মাঠে রেখে বাড়িতে গিয়ে মাকে পুরো ঘটনা জানান ফয়সাল। স্বজনেরা দ্রুত মাঠে গিয়ে শাহাদতের লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেন।
আরো পড়ুন:
কারাগারে ‘ফাঁস নিলেন’ জুলাই-আগস্ট হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সুজন
মহাসড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ফয়সাল হোসেন দুই বছর ধরে মানসিক বিকারগ্রস্ত। পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে কিছুদিন আগে বাড়িতে ফিরেছেন।
ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ফয়সালকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’
ঢাকা/শাহরিয়ার/রাজীব