কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির নতুন আলোচিত ধারণা ‘পিএইচডি স্তরের এআই এজেন্ট’। সাম্প্রতিক সময়ে প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ নির্বাহী ও বিশ্লেষকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। শক্তিশালী এই এআই মডেলগুলোর সক্ষমতা নিয়ে যেমন আগ্রহ তৈরি হয়েছে, তেমনি বাস্তব প্রয়োগ ও নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

সম্প্রতি দ্য ইনফরমেশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওপেনএআই কয়েকটি বিশেষায়িত এআই এজেন্ট চালুর পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে গবেষণা সহায়ক এজেন্টকে বলা হচ্ছে পিএইচডি স্তরের এআই এজেন্ট। এআই এজেন্টটি ব্যবহারের জন্য প্রতি মাসে খরচ করতে হবে ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা ২৪ লাখ টাকা (প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ১২০ টাকা ধরে)। ওপেনএআইয়ের দাবি, পিএইচডি স্তরের এআই এজেন্ট গবেষকদের মতো তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারবে। জটিল গবেষণা পরিচালনায় সহায়তা করার পাশাপাশি বিশাল তথ্যভান্ডার থেকে গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করে দেবে।

ওপেনএআইয়ের দাবি, ওওয়ান ও ওথ্রি এআই মডেল গবেষকদের চিন্তার প্রক্রিয়া অনুকরণ করতে সক্ষম। এই মডেলগুলো ‘প্রাইভেট চেইন অব থট’ নামে একটি কৌশল ব্যবহার করে। এ কৌশলের মাধ্যমে গবেষকেরা সমস্যা সমাধানের সময় যে পদ্ধতিতে চিন্তা করেন, তা অনুকরণ করা হয়। প্রচলিত লার্জ ল্যাংগুয়েজ মডেল (এলএলএম) সাধারণত ব্যবহারকারীর প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেয়। কিন্তু ওপেনএআই এর নতুন মডেলগুলো ধাপে ধাপে অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণ করে যুক্তিসম্মত সমাধান দিয়ে থাকে। আর তাই এই এআই এজেন্ট চিকিৎসা গবেষণা বিশ্লেষণ, জলবায়ু মডেলিং এবং গবেষণার বিভিন্ন পর্যায়ে সহায়তা করতে পারবে।

ওপেনএআইয়ের তথ্যমতে, ওথ্রি মডেল এআরসি-এজিআই ভিজ্যুয়াল বিশ্লেষণ পরীক্ষায় ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে, যেখানে মানুষের গড় নম্বর ৮৫ শতাংশের বেশি হয়ে থাকে। তা ছাড়া এটি জিপিকিউএ ডায়মন্ড পরীক্ষায় ৮৭ দশমিক ৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ের জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে এ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প এইচড

এছাড়াও পড়ুন:

বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছেন, ৬৯ বছর বয়সে করেছেন পিএইচডি

সময়টা ১৯৯৯ সাল। মরিশাস থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পাড়ি জমান নিদ্যানন্দ রায়া। উদ্দেশ্য ছিল স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করা। বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, জীবনে যত দিন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন, তত দিন পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন তিনি।

এরপর দুই দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বাবাকে দেওয়া সেই কথা রেখেছেন নিদ্যানন্দ। এখন তাঁর বয়স ৬৯ বছর। এ বয়সে এসে মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে সামাজিক নীতি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। নামের শুরুতে ‘ড.’ শব্দটি যুক্ত করেছেন।

এ অর্জন কেমন লাগছে? প্রশ্নের জবাবে নিদ্যানন্দের চটজলদি জবাব, ‘তেমন কিছুই না। এটা জীবনের একটা অর্জন মাত্র।’

বিবিসি রেডিও লন্ডনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে নিদ্যানন্দ বলেন, আমি বেশ গরিব পরিবার থেকে এসেছি। আমার বাবা ছিলেন নাপিত। আর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। আমি বন থেকে কাঠ, ফলমূল সংগ্রহ করতাম। মা–বাবার বেতন দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় আমাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। এসব কারণই আমাকে শৃঙ্খলাবোধ আর জ্ঞান অর্জনের পথে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

ড. নিদ্যানন্দ এখন লন্ডনের এনফিল্ডে বসবাস করেন। পড়াশোনার জন্যই দেশ ছেড়েছিলেন। বলছিলেন, নিজ দেশে পড়াশোনার সুযোগ সীমিত ছিল। তাই দেশ ছেড়ে এসেছিলেন।

বিবিসি রেডিও লন্ডনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিদ্যানন্দ বলেন, ‘আমি বেশ গরিব পরিবার থেকে এসেছি। আমার বাবা ছিলেন নাপিত। আর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। আমি বন থেকে কাঠ ও ফলমূল সংগ্রহ করতাম। মা–বাবার বেতন দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় আমাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। এসব কারণই আমাকে শৃঙ্খলাবোধ আর জ্ঞান অর্জনের পথে উদ্বুদ্ধ করেছিল।’

যুক্তরাজ্যকে ‘সুযোগের ভূখণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে নিদ্যানন্দ বলেন, ‘এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে আপনি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেন।’

স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর নিদ্যানন্দ সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার প্রস্তাব পান। কিন্তু সেখানে কাজের সুযোগ না থাকায় সেটা করতে পারেননি।

মাঝের সময়টায় যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়ার জন্য কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে নিদ্যানন্দকে। দীর্ঘ সময় পরিবারের খরচ চালাতে স্কুলশিক্ষক স্ত্রী ল্যাকসোমিকে সহায়তা করতে পারেননি তিনি। বরং স্ত্রীই তখন পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছেন। নিদ্যানন্দ বলেন, ‘তখন আমাকে চাকরি খুঁজে বের করতে হয়েছিল। আমাকে স্থায়ী হতে হয়েছিল। আমাকে সবকিছু করতে হয়েছিল।’

‘এখানে আসার পর আমি গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। পরে আমাকে একজন পরিচর্যাকারী হিসেবেও কাজ করতে হয়েছে,’ বলেন নিদ্যানন্দ।

নিজের পিএইচডি গবেষণায় নিদ্যানন্দ মৌরিতানিয়ার ক্রেওলের ফরাসিভাষী সম্প্রদায়ের মানুষদের ঔপনিবেশিক–পরবর্তী অভিজ্ঞতার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এলিনোর কফম্যানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এই শিক্ষক বলেন, আমি তাঁর সাফল্যে রোমাঞ্চিত। আশা করব, তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা চালিয়ে যাবেন।

নিজের পিএইচডি গবেষণায় নিদ্যানন্দ মৌরিতানিয়ার ক্রেওলের ফরাসিভাষী সম্প্রদায়ের মানুষদের ঔপনিবেশিক–পরবর্তী অভিজ্ঞতার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।

মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এলিনোর কফম্যানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন নিদ্যানন্দ। এই শিক্ষক বলেন, ‘আমি তাঁর সাফল্যে রোমাঞ্চিত। আশা করব, তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা চালিয়ে যাবেন।’

জীবনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিষয়ে বলতে গিয়ে কয়েক দশক আগে বাবাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করেন নিদ্যানন্দ। তিনি বলেন, ‘আমি বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছি। বাবা, আমি তোমাকে গর্বিত করেছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইউটিউবে কম রেজল্যুশনের ভিডিও এখন দেখাবে এইচডি মানে
  • জকসুতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে প্রশাসন: ছাত্রদল
  • যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ: আবেদন, খরচ ও বৃত্তির খোঁজ
  • বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছেন, ৬৯ বছর বয়সে করেছেন পিএইচডি
  • অস্ট্রেলিয়ায় গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপে ৬০০ বৃত্তি, আবেদনের সুযোগ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত