কুবির শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ, পরীক্ষা স্থগ
Published: 12th, March 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকে বিরুদ্ধে।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) অনুষ্ঠিতব্য ওই শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন, বিভাগটির সহকারী অধ্যাপক কাজী এম.
আরো পড়ুন:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ছাত্র সংসদের বিধান নেই
ধর্ষণের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী কণ্ঠ
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাতে একটি বেনামি আইডি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে মেইল করা হয়।
মেইলে উল্লেখ করা হয়, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৫ ব্যাচের সেমিস্টার পরীক্ষা চলছে। এই সেমিস্টারের প্রতিটি কোর্সের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। এই কোর্স না শুধু, প্রতিটি কোর্সের পরীক্ষারই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। বিভাগের শিক্ষক কাজী আনিছ এক শিক্ষার্থীকে (যার আইডি ১২১১৮০২০) এগুলো দিয়েছেন।
মেইলের সঙ্গে বিগত পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর সম্বলিত কিছু পিডিএফ সংযোজন করা হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি পিডিএফের মেটা ডাটা উল্লেখ করা হয়। মেটা ডাটা বিশ্লেষণে শিক্ষক কর্তৃক সরবরাহ করা পিডিএফ ফাইল তৈরির ডিভাইস ও তারিখ উল্লেখ রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক কাজী এম. আনিছুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান বলেন, “উদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কারণে পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছি। তবে এ বিষয়টি যেহেতু বেনামি মেইল থেকে আসা, তাই আমরা সরাসরি কোন ব্যবস্থা নিতে পারছি না। শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও প্রভাষক জাকিয়া জাহান মুক্তা বলেন, “প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব। অভিযোগটি ভিত্তিহীন নাকি সত্য, তা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর আমরা শিক্ষকরা মিলে এ ব্যাচের পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী বলেন, “প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে এ সংক্রান্ত একটি মেইল পেয়েছি। আমরা ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। আগে বিভাগের একাডেমিক কমিটি বিষয়টি দেখবে। তারপর এ বিষয়ে তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, “আমাদের কাছে এখনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। বিভাগ বা শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে সেই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিব।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণয গ য গ ও স র পর ক ষ বর ষ র ব দ কত
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাণের গানে সালাহর উৎসব
শেষ বাঁশি বাজতেই নেচে-গেয়ে উৎসবে মাতেন সালাহ-অ্যালিসন-এলিস্টাররা। তবে পর্বটা খুব বেশি লম্বা হয়নি। অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক সবাইকে ডেকে মাঠের একটি গোলপোস্টের সামনে জড়ো করেন। আর্নে স্লটের নেতৃত্বে কোচিং স্টাফরাও যোগ দেন সেখানে। গ্যালারি সামনে রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চেইনের মতো করে সারিবদ্ধভাবে দেয়াল বানিয়ে দাঁড়ান সবাই। পুরো এনফিল্ড তখন সমবেত কণ্ঠে গাইতে শুরু করে– You’ll Never Walk Alone...। অলরেডদের হৃদয় থেকে উৎসারিত এ গানেই পূর্ণতা পায় উৎসব।
এ গানের সঙ্গে সঙ্গে অন্য রকম এক আবহ তৈরি হয় সেখানে। বিশ্বের কোনো স্টেডিয়াম ছুঁতে পারবে না এনফিল্ডের এই আবহ। এই আবহ তৈরি অলরেডদের বিশ্বাসে, বছরের পর বছর যারা কেউ কাউকে একা হাঁটতে দেয়নি। রোববার সকাল থেকেই এনফিল্ডের চারপাশে তৈরি হয়েছিল উৎসবের পরিবেশ। আতশবাজি ও লাল আবিরে রঙিন হয়ে উঠেছিল লিভারপুলের আকাশ-বাতাস। আগে থেকেই বন্দর শহরটির দেয়ালে দেয়ালে ঐতিহাসিক গানটির সঙ্গে ‘২০’ লেখা গ্রাফিতি আঁকা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
ম্যাচ শুরুর দুই ঘণ্টা আগেই এনফিল্ড চত্বর রীতিমতো অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আর্নে স্লট, সালাহদের স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাজার হাজার সমর্থক। লাল জার্সি পরা কাতারে কাতারে সমর্থকদের মাঝখান দিয়ে লাল বাসে করে লিভারপুলের ফুটবলাররা স্টেডিয়ামের আঙিনায় প্রবেশ করেন অন্যরকম এক পরিবেশে। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমের পর ৩০ বছর ট্রফি জেতেনি তারা। পাঁচ বছর আগে ট্রফি জিতলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে উদযাপন হয়েছিল দর্শকশূন্য গ্যালারিতে। তাই এমন অনেক সমর্থক আছেন, যারা প্রিয় ক্লাবকে লিগ জিততে দেখেননি। সেই তরুণ প্রজন্মের উচ্ছ্বাসটা ছিল বেশি।
২০তম শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব আর্নে স্লট দিয়েছেন সাবেক কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপকে। এমনকি তিনি সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে পুরো গ্যালারিকে নিয়ে ক্লপের নামে গানও গেয়েছেন। ২০১৫ সালে লিভারপুলে যোগ দেওয়ার পর ক্লপ তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন ক্লাবটিকে। এর মধ্যে দুবার অবিশ্বাস্য লড়াই করেও মাত্র ১ পয়েন্টের ব্যবধানে ম্যানসিটির কাছে শিরোপা হারাতে হয়েছিল তাদের। ২০২০ সালে জিতলেও সমর্থকদের নিয়ে উল্লাস করতে পারেননি।
ক্লপের লিগজয়ী দলের সদস্য ছিলেন মোহামেদ সালাহ। এবার ভিন্ন স্বাদ পেয়েছেন মিসরীয় এ তারকা। শিরোপা জয়ের পর স্কাই স্পোর্টসকে তিনি বলেন, ‘সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে শিরোপা জয়ের অনুভূতি অবিশ্বাস্য। গতবারের (২০২০) চেয়ে এবার শতভাগ ভালো ছিল। এটা অনেক বেশি আনন্দময়। এটা সত্যিই বিশেষ কিছু।’
প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগ জেতা আর্জেন্টাইন তারকা এলেক্সিস ম্যাক এলিস্টারের জন্যও এ শিরোপা বিশেষ কিছু, ‘বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, এখন জিতেছি প্রিমিয়ার লিগ। আমার জন্য সত্যই এটা বিশেষ কিছু। সতীর্থদের ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। আমাদের দলটি সত্যিই অসাধারণ।’